রাশিয়ায় পশ্চিম নীল ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এই ভাইরাস মস্তিষ্কে চলে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
করোনারভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে এখনও রেহাই পায়নি বিশ্ব। তারই মধ্যে নতুন এক ভাইরাসের প্রকোপে কাঁপতে শুরু করেছে রাশিয়া। শুধু রাশিয়া নয়, এই রোগে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। পশ্চিম নীল ভাইরাস (West Nile virus) (WNV) ছড়িয়ে পড়ছে পুতিনের দেশে। তেমনই জানিয়েছে রাশিয়া প্রশাসন। আসন্ন শীতকালে তা আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। রাশিয়ায় ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করে বলা হয়েছে হালকা তাপমাত্রা আর ভারী বৃষ্টিপাত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার উপযুক্ত আবহাওয়া। মশা থেকেই এটি ছড়িয়ে পড়ে বলেও জানান হয়েছে।
রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আদর্শ আবহাওয়া হল- প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত, অল্প উষ্ণতা, দীর্ঘ শরৎকাল, আর উপযুক্ত আলো। রাশিয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে নীল জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশেও বেশি মানুষ।
পশ্চিম নীল ভাইরাস-
এটি একটি সংক্রামক রোগ। যা মূলত মশা থেকে ছড়়ায়। কিউলেক্স মশা পাখিকে কামড়ায়। সেই পাখি থেকে অথবা মশা মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ে এটি নীল ভাইরাস। আক্রান্ত মানুষের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক হতে পারে। মূলত স্নায়বিক রোগ দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই ভাইরাসের দরুণ নীল জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে জিকা, ডেঙ্গু আর পীতজ্বরও এই ভাইরাসের প্রভাবে হতে পারে।
নীল ভাইরাসের উপসর্গ-
এই ভাইরাসে আক্রান্তদের সাধারণ কোনও লক্ষণ থাকে না। তবে জ্বর মাথাযন্ত্রণা, শরীরে ব্যাথা, ত্বকে ফুসকুড়ি দেখতে পাওয়া যায়। লিম্ফ গ্রন্থি ফুলে যায়। এই ভাইরাস মানুষের শরীরে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। তারপর নিজে থেকেই সুস্থ হয়ে ওঠে আক্রান্ত ব্যক্তি। তবে বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন। যদি এই ভাইরাস কোনও ব্যক্তির মস্তিষ্কে প্রবেশ করে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এটি মস্তিস্কে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। যাকে বলে এনসেফালাইটিস। মেনিনজাইটিসও হতে পারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির। ভাইরাস নির্ণয়ের পদ্ধতি-চিকিৎসকরাই মূলত এজাতীয় রোগ চিহ্নিত করতে পারেন। কতগুলি প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়।
রাজ্যের সরকারের পরিবহন কর্মীদের সমস্যা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে
Viral Video: প্রাণ হাতে নিয়ে খবর পড়ছেন আফগান সঞ্চালক, বলছেন 'ভয় নেই তালিবান রাজত্বে'
নীল ভাইরাসের উৎপত্তি-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ১৯৩৭ সালে প্রথম এই ভাইরাস লক্ষ্য করা গিয়েছিল উগান্ডার পশ্চিম নীল জেলার এক মহিলার শরীরে। ১৯৫৩ সালে নীল বদ্বীপ এলাকায় পাখিদের শরীরে এটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি শিশু ও বৃদ্ধদের। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
নিরাময়-
এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট টিকা নেই। এড়ানোর সবথেকে ভালো উপায় হল মশার কামড় প্রতিরোধ করা। আক্রান্ত হলে দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই শ্রেয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই পশ্চিম নীল ভাইরাস খুবই সক্রিয় হচ্ছে।