ভারতের ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দুহাজার ছাড়িয়েছে। করোনা নতুন এই ভেরিয়েন্টটি ২৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ব জুড়ে ফের রেকর্ড গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস মহামারি (Coronavirus Pandemic)। ভারতও (India) তার ব্যতিক্রম নয়। গত ২৪ ঘন্টায় (24 Hours) একসঙ্গে ৫৮ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত (Corona Positive) হয়েছেন। দেশজুড়ে ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুহাজারেরও (2000) বেশি। বুধবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮,০৯৭জন মানুষ। এই সংক্রমণ নয়া রেকর্ড তৈরি করেছে।
দৈনিক পজিটিভিটির হার এখন বেড়েছে ৪.১৮ শতাংশ। সাপ্তাহিক পজেটিভির হার ২.৬০ শতাংশ। এর সাথে, দেশে অ্যাক্টিভ করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে ২,১৪,০০৪ জনে পৌঁছেছে। দেশে মৃতের সংখ্যা গত ২৪ ঘন্টায় ৫৩৪ জন বেড়েছে এবং বর্তমানে মোট মৃতের সংখ্যা ৪,৮২,৫৫১।
ভারতের ওমিক্রনের সংখ্যা দু হাজার ছাড়িয়েছে
মঙ্গলবার ভারতের ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দুহাজার ছাড়িয়েছে। করোনা নতুন এই ভেরিয়েন্টটি ২৪টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের হিসাবে, সারা দেশে মোট ২১৩৫জন ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮২৮ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রের ৬৫৩ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত। এরপরেই রয়েছে দিল্লি। সেখানে আক্রান্ত ৪৬৪ জন। কেরলে ১৮৫জন ও রাজস্থানে ১৭৪জন ওমিক্রন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর।
এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন সম্পর্কে যেটা জানা গিয়েছে, তা হল, এই করোনা রূপান্তরের ক্ষেত্রে, বিপুল সংখ্যক মিউটেশন (Mutations) বা অভিযোজন রয়েছে। যার বেশিরভাগই স্পাইক প্রোটিন (Spike Protein), অর্থাৎ ভাইরাসের যে অংশ হোস্ট কোষকে আক্রমণ করতে সাহায্য করে, তাতে ঘটেছে। যার ফলে ভাইরাসটি শুধু, যারা টিকা পায়নি তাদেরকেই সহজে সংক্রমিত করতে পারে তাই নয়, পূর্ববর্তী সংক্রমণ এবং ভ্যাকসিন থেকে তৈরি অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়াকেও (Antibody Response) এড়িয়ে যেতে পারে।
অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়া প্রতিরক্ষার প্রথম লাইন। তা অতিক্রম করার পরে ওমিক্রন কীকরম আচরণ করে? গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাসের আগের ভেরিয়েন্টগুলি যেমন ফুসফুসকে ব্যাপক সংক্রামিত করত, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না। গত সপ্তাহে অন্তত পাঁচটি পৃথক গবেষণায় একই ফল এসেছে। আর সেই কারণেই এই ভাইরাস থেকে, তুলনায় কম গুরুতর অসুস্থতা তৈরি হচ্ছে। হ্যামস্টার, সিরিয়ান হ্যামস্টার ও ইঁদুরের ফুসফুসে পরীক্ষা করে এবং আক্রান্তদের ফুসফুসের কলা বা টিস্যু অধ্যয়ন করে একই ফল মিলেছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ভাইরাসের শারীরবৃত্তির পরিবর্তনের কারণেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। তারা বলছেন, এর আগে পর্যন্ত করোনার মূল ভাইরাস ও তার অন্যান্য ভেরিয়েন্টগুলি, মানব কোষে প্রবেশের জন্য দুটি ভিন্ন পথ ব্যবহার করত - শ্বাসনালী এবং ফুসফুস। এখন স্পাইক প্রোটিনটি যেহেতু আগের থেকে অনেক বেশি ভেদ শক্তি সম্পন্ন, তাই ভাইরাসটি কোষে প্রবেশের জন্য ফুসফুস অবধি আর যাচ্ছে না, তার আগে শ্বাসনালীকেই সংক্রামিত করতে বেশি পছন্দ করছে।