বিশ্বকাপ ২০১৯-এ যতবার ডাকওয়ার্থ ও লুইস সাহেবের খোঁজ পড়েছে, ততবার বিশ্বকাপের এতদিনের ইতিহাসে পড়েনি। গ্রুপের ৪টি খেলা বানচাবল করে দেওয়ার পর ভারত-নিউজিল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচেও হানা দিয়েছে বৃষ্টি-অসুর। মঙ্গলবার মাত্র ৪৬ ওভার খেলা হয়েছে। বাকি খেলা বুধবার হওয়ার কথা। কিন্তু এদিনও বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ডাক পড়তেই পারে ডা.লু.-এর। জেনে নেওয়া যাক কি এই ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি, কীভাবেই বা এই পদ্ধতিতে হিসেব-নিকেশ করা হয়।
ডি-এল মেথড বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির পিছনে ছিলেন দুই ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ - ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টোনি লুইস। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বৃষ্টি বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুরো খেলা সম্ভব না হলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পরে ব্যাট করা দলের জন্য নতুন লক্ষ্য গণনা করা হয়।
এই পদ্ধতি প্রথম ব্যবহার হয়েছিল ১৯৯৬-৯৭ সালে জিম্বাবোয়ে বনাম ইংল্যান্ডের একদিনের ম্যাচে। সেটা ছিল পরীক্ষামূলক ব্যবহার, ২০০১ সালে আইসিসি আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন - আজকের খেল খতম, ফের শুরু বুধবার! জেনে নিন বিস্তারিত
আরও পড়ুন - মঙ্গলবারের খেলা মোটামুটি চৌপাট, বুধবারও কি বৃষ্টি হবে - আবহাওয়া অফিস কি বলছে
আরো পড়ুন - খেলা বন্ধ বৃষ্টিতে, চলছে ডার্কওয়ার্থ-লুইস অঙ্ক! ভারতের সামনে লক্ষ্য কত হবে
কখন ব্যবহার হয়?
৫০ ওভারের ম্য়াচের ক্ষেত্রে দুই প্রতিপক্ষ কমপক্ষে ২০ ওভার করে ব্যাট করার সুযোগ পেলে তবেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। খেলা শুরুর আগে বৃষ্টি হয়ে সময় নষ্ট হলে যদি দুই দলেরই সমান সংখ্য ওভার কাটা য়ায়, তাহলে এই পদ্ধতি ব্যবহারের দরকার পড়ে না।
প্রথম ইনিংস চসাকালীন (যেরকমটা বিশ্বকাপ ২০১৯-এর সেমিফাইনালে ঘটেছে) খেলা বন্ধ রাখতে হয়। সেই ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ইনিংসের লক্ষ্যমাত্রা এই পদ্ধতি মেনে নতুন করে গণনা করা হয়। এই ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংসে কত ওভার বাকি ছিল, কত রান হয়েছে আর কত উইকেট ছিল, এই সব কিছুর উপর ভিত্তি করে হিসাব হয়।
আবার দ্বিতীয় ইনিংসে যদি খেলা বন্ধ হয় এবং ওভার সংখ্যা কমে যায় (যেমনটা বুধবার হতে পারে), তা হলে ডিএল মেথড অনুযায়ী হাতে থাকা রান, ওভার ও উইকেট পতনের সংখ্যা অনুযায়ী দ্বিতীয় দলের সামনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেওয়া হয়।
কীভাবে এই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়?
এই ক্ষেত্রে ডাকওয়ার্থ-লুইস সাহেব বলেছিলেন 'রিসোর্স'-এর কথা। এই রিসোর্স হল হাতে থাকা ওভার এবং উইকেট মিলিয়ে একটা শতাংশের হিসাব। যা বর্তমানে আইসিসি-র একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম মারফত হিসেব করা হয়। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে যে রিসোর্স পার্সেন্টেজ ছিল আর বিরতির ফলে যেটুকু রিসোর্স নষ্ট হয়েছে আর বাকি যা রিসোর্স রয়েছে - তিন বিষয়কে কাজে লাগিয়ে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স যদি প্রথমে ব্যাট করা দলের থেকে কম হয়, তা হলে দুই দলের বাকি থাকা রিসোর্সের অনুপাত বার করা হয়। এরপর প্রথমে ব্যাট করা দলের স্কোরকে সেই অনুপাত দিয়ে ভাগ করে পরে ব্যাট করা দলের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
আবার, যদি পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স প্রথমে ব্যাট করা দলের রিসোর্সের থেকে বেশি হয়, তা হলে প্রথমে, প্রথম দলের রিসোর্সকে দ্বিতীয় দলের রিসোর্স থেকে বাদ দেওয়া হয়। যে সংখ্যাটা বের হয় তা, আইসিসি নির্ধারিত ওডিআইয়ের গড় রান, ২২৫-এর কত শতাংশ, সেই হিসেব করা হয়। এরপর সেই সংখ্যাটাকে প্রথমে ব্যাট করা দলের রানের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে দ্বিতীয় দলের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।