সোহেল-আমিরের হাত ধরে এল দাপুটে জয়! বিদায় দক্ষিণ আফ্রিকার, দেখে নিন হাইলাইটস ভিডিও

  • ভারতের বিরুদ্ধে বড় হারের পরের ম্যাচেই জয়ের সরণিতে ফিরল পাকিস্তান
  • প্রথমে ব্যাট করে ৩০৮ রান তুলেছিল তারা
  • জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৫৯/৯-এর বেশি এগোতে পারল না
  • ৪৯ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হল

 

amartya lahiri | Published : Jun 23, 2019 5:44 PM IST / Updated: Jun 24 2019, 01:09 AM IST

বিশ্বকাপে এর আগে কখনও ৩০০ রানের উপর  তুলে জেতেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে নাগপুরে ভারতের বিরুদ্ধে ২৯৭ রান তাড়া করে জিতেছিল, সেটাই সর্বোচ্চ। প্রোটিয়াদের ব্যাটিং-এর এখন যা অবস্থা তাতে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ৩০৮ রান তুলেই কাজটা বেশ কঠিন করে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। আর শেষ পর্যন্ত পাক বোলারদের সামনে ২৬০/৯-এর বেশি এগোতে পারল না। ভারতের বিরুদ্ধে বড় হারের পরের ম্যাচেই পাকিস্তান জিতল ৪৯ রানে। ৩টি ছয় ও ৯টি চার মেরে মাত্র ৫৯ বলে ৮ রান করে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হলেন পাক ব্যাটসম্যান হ্যারিস সোহেল।

ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ দাবি করেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে পরাজয়ের পরও তাঁদের মনোবল অটুট আছে। সবাই ভেবেছিলেন এ শুধু কথার কথা। কিন্তু, লর্ডসে বিশ্বকাপ ২০১৯-এর প্রথম ম্য়াচেই প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ম্যাচে আগাগোড়া প্রাধান্য দেখাল পাকিস্তান। ব্যাটিং, বোলিং দুই বিভাগই যেন কোনও জাদুর ছোঁয়ায় পাল্টে গেল। শুধু ফিল্ডিং রয়ে গেল সেই তিমিরেই। এদিনও একগুচ্ছের ক্যাচ ফেললেন পাক ফিল্ডাররা। এই দক্ষিণ আফ্রিকা দল না হয়ে অন্য কোনও দল হলে কিন্তু বড় খেসারত দিতে হত।

ভআরতের বিরুদ্ধে হারের পর সরফরাজ আহমেদকে 'নির্বোধ' বলেছিলেন শোয়েব আখতার। কিন্তু পাক অধিনাযক কিন্তু এদিন একেবারে টস থেকে দারুণ অধিনায়কত্ব করলেন। লর্ডসের পিচে ঘাসের পরত দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন রাবাডা, এনগিদি মরিস ফেহলুকাওইও-রা পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের সহজেই আত্মসমর্পন করে বসবেন। সরফরাজ আগে ব্যায়ট নিয়ে ভুল করলেন এমন মতের সমর্থকই বেশি ছিলেন।

কিন্তু দেখা গেল ঘাসের নিচে উইকেট একেবারে শুকনো, এবং তা ব্যাটিং-এর জন্য আদর্শ। পাক অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে দারুণভাবে মর্যাদা দেন পাকিস্তানি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে এদিন শোয়েব মালিকের বদলে দলে আসা হ্যারিস সোহেল মাত্র ৫৯ বলে ৮৯ রানের অনবদ্য ইনিংস খেললেন। পাক ইনিংসকে দৃঢ়তা দিলেন বাবর আজম (৬৯)। আর তার আগে ইনিংসের ভিট রচনা করে দিয়ে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার ইমামুল হক (৪৪) ও ফখর জামান (৪৪)।

দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের মধ্যে একমাত্র ভাল বল করেছেন ইমরান তাহির। ১০ ওভারে ৪১ রান দিয়ে তিনি ২ উইকেট নেন। বিশ্বকাপে মোট ৩৮ উইকেট নিয়ে এদিন তিনি অ্যালান ডোনাল্ডকে ছাপিয়ে প্রোটিয়াদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হলেন। এনগিদি ৩ উইকেট নিলেও ওভার প্রতি ৭-এর বেশি রান দেন। রাবাডা-মরিস-ফোহলুকাওইও'রা বলার মতো কিছু করতে পারেননি।

দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতেই ধাক্কা দেন আমির। তাঁর প্রথম বলেই এলবিডব্লু হল হাশিম আমলা (২)। এরপর ডি কক (৪৭) আর ডু প্লেসিস (৬৩) নিজেদের মধ্যে ৮৭ রানে জুটি গড়ে ইনিংসকে থিতু করেছিলেন। কিন্তু এখানেই দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সরফরাজ বাঁহাতি ব্য়াটসম্য়ানের জন্য লেগস্পিনার আনেন। শাদাব খানের বলে ডি কক আউট হয়ে ফেরার পর থেকে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ডু প্লেসিস কিন্তু খুব ভাল ব্যাট করছিলেন। কিন্তু এই বিশ্বকাপে দারুণ বল করছেন আমির। তাঁর একটি ক্রস সিম ডেলিভারি ডুপ্লেসিসের ব্য়াটের কানায় লেগে উঠে যায়। সরফরাজ ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। ডু প্লেসিস ফিরতেই দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

শেষ ভরসা ছিলেন ভ্যান ডার ডুসেঁ (৩৬) ও ডেভিড মিলার (৩১)। ৪০তম ওভারে শাদাব খানের বলে ও ৪১তম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে যথাক্রমে ডুসেঁ ও মিলার ফিরে যাওয়ার পর একা লড়লেন আন্দিল ফেহলুকাওইও (৪৬*)। কিন্তু উল্টো দিকে মরিস, রাবাডা ও এনডিদিকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রোটিয়া ব্য়াটিং-এর লেজ ছেঁটে দেন ওয়াহাব রিয়াজ।

এই জয়ের ফলে পাকিস্তান একধাপ এগিয়ে সাত নম্বরে উঠে এল। তাদের সেমিফাইনাল খেলার আশা এখন টিকে থাকল। আর দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ ম্যাচ খেলার পর ৯ নম্বরেই থাকল। বিশ্বকাপ তারা খেলতে এসেছিল একদিনের ক্রিকেটের ৩ নম্বর দল হিসেবে। আর গ্রুপ টেবিলে এখন তাদের নিচে আছে একমাত্র আফগানিস্তান।

Share this article
click me!