বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিরাট জয় ভারতের! শেষ ম্যাচেই মিলল সব প্রশ্নের জবাব

  • মঙ্গলবার কার্ডিফে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অনুশীলন ম্যাচে ৯৫ রানে জয় পেল ভারত
  • ব্যাটে জোড়া শতরান করেন কেএল রাহুল ও এমএস ধোনি
  • আর বলে তিনটি করে উইকেট পেলেন কুলদীপ ও চাহাল
  • লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের বড় রান কাজে এল না

 

amartya lahiri | Published : May 28, 2019 6:14 PM IST / Updated: May 29 2019, 01:17 AM IST

এক ম্যাচে একই সঙ্গে একটি দলের যাবতীয় সমস্যা মিটে যাচ্ছে, এমনটা হতে বিশেষ দেখা যায় না। কিন্তু মঙ্গলবার কার্ডিফে বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি ম্য়াচে বংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই ঘটল। একদিকে ব্যাটে কেএল রাহুল (১০৮) ও এমএস ধোনি (১১৩) জোড়া শতরানে মিডল অর্ডারে ভরসা দিলেন। অন্যদিকে বিশ্বকাপের ঠিক আগের ম্যাচেই উইকেটে ফিরলেন কুলদীপ যাদবও। বেশ কয়েকদিন পরে ফের চাহালের সঙ্গে জুটিতে প্রতিপক্ষের উিকেট লুটতে দেখা গেল তাঁকে। দিজনেই তিনটি করে উইকেট নিলেন। নিটফল ভারতের ৩৫৯ রান তাড়া করে বাংলাদেশ ইনিংস শেষ ওভারে ২৬৪ রানেই গুটিয়ে গেল। ভারত জয় পেল ৯৫ রানে।

এদিন ভারতের ২৬৪ রান তাড়া করতে নেমে উইকেট ধরে রাখার দিকেই মন দিয়েছিল বাংলাদেশ। শামি-বুমরা জুটির সামনে দ্রুত রান না তুলতে পারলেও ১০ ওভার পর্যন্ত ১০ উইকেট হাতে রেখেছিল তারা। কিন্তু দশম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পর পর সৌম্য সরকার (২৫) ও সাকিব আল হাসানের (০) উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের জোর ধাক্কা দেন বুমরা। 

এখান থেকেই বাংলাদেশ ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা নিজেদের ঘাড়ে নিয়ে নেন লিটন দাস (৭৩) ও মুশফিকুর রহিম (৯০)। উইকেটের পতন আটকাতে পারলেও  তাঁরা অবশ্য কখনই রান তোলার গতি বাড়াতে পারেননি। তবে ৩১ ওভারে বাংলাদেশ ১৬৯ রানে পৌঁছে গিয়েছিল। ৩২তম ওভারে ভারতকে আরও একবার ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন যুজবেন্দ্র চাহাল। 

বুমরার দশম ওভারের মতো এই ওভারে চাহালও পর পর দুটি উইকেট তুলে হ্য়াটট্রিক করার সামনে এসে গিয়েছিলেন। প্রথমে লিটন ও পরের বলে মহম্মদ মিঠুনকে ফিরিয়ে দেন চাহাল। ফলে বাংলাদেসের চার উইকেট পড়ে যায়। 

এখান থেকে বাংলাদেশের জেতা প্রায় অসম্ভব ছিল। তবু যতক্ষণ মুশফিকুর ছিলেন ততক্ষণ আশা ছিল টাইগারদের। কিন্তু, ৪০ তম ওভারে কুলদীপ তাঁকে ফেরাতেই ভারতের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। আইপিএল-এ ফর্ম হারিয়ে দলের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল কুলদীপকে। কিউইদের বিরুদ্ধে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও শুরুতে বেশ নিষ্প্রভ ছিলেন তিনি। কিন্তু মুশফিকুরের উইকেট তাঁর পুরনো ধার ফিরিয়ে দেয়। 

তারপর মাহমুদুল্লা (৯) ও মোসাদ্দেক হোসেন (০)-এর উইকেটও নিলেন তিনি। ফলে বিশ্বকাপের আগে ফের চেনা ছন্দে ফিরলেন ভারতের চায়নাম্য়ান বোলার। চাহালের সঙ্গে জুটিতে এদিন আগের মতোই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন তিনি। 

তবে ভারতীয় টিম ম্য়ানেজমেন্টের কাজটা আরও কঠিন করে দিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চমৎকার অর্ধশতরান করেছিলেন তিনি। আর এধিন ব্যাচ হাতে একটি ছয় ও একটি চার মেরে মাত্র ৪ বলে ১১ রান করার পাশাপাশি বল হাতেও ৯.৩ ওভারে মাত্র ৪০ রান দিয়ে নিলেন ১টি উইকেট। ক্রমেই কিন্তু প্রথম একাদশে ঢোকার দাবি বাড়াচ্ছেন তিনি। 

এদিন হার্দিকের বদলে বল দেওয়া হয়েছিল বিজয় শঙ্করকে। ব্য়াট হাতেও যেমন রান পাননি, বল হাতেও কিন্তু শঙ্কর অত্যন্ত সাধারণ মানের বল করলেন। ৬ ওভারে ৪৬ রান দিলেন। ভুবনেশ্বর কুমারের বল কিন্তু এদিন দুদিকেই সুইং করেছে। 

তার আগে ব্য়াট করতে নেমে, ২১ ওভারে ১০২ রান তুলতে না তুলতেই ভারত রোহিত-শিখর-কোহলির বিগ থ্রি এবং বিজয় শঙ্করের উইকেট হারিয়ে ধুকছিল। সেখান থেকে নিজেদের মধ্যে ১৪৬ রানের জুটি গড়ে ভারতের ইনিংস গড়েন কেএল রাহুল ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। রাহুল যদি দীর্ঘদিন বাদে ধ্রুপদী ব্যাটিং-এ শতরান করে থাকেন, ধোনিকে বহুদিন বাদে ধামারকা ব্যাটিং-এ শতরান করতে দেখা গেল। 

যে মিডল অর্ডার নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ছিল ভারত, ধোনি ও রাহুলের ব্য়াটিং পরাক্রমে, আজকের পর সেই মিডল অর্ডারই না টুর্নামেন্টে ভারতের অন্যতন শক্তি হ.য়ে দাঁড়ায় সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। 

একমাত্র চিন্তা, বিজয় শঙ্কর এখনও আইপিএল-পূর্ব ফর্ম ফিরে পাননি। আর কেদার যাদব কী অবস্থায় আছেন , তা এখনও বোঝাই যায়নিয চোটেরর কারণে এদিনও খেলতে পারেননি তিনি। তবে রাহুল রান পাওয়ায় কিন্তু ভারতের মিডল অর্ডার বিকল্প বেড়ে গিয়েছে। কেদার প্রথম দিকে খেলতে না পারলে সম্ভবত রাহুলকে চার নম্বরে খেলিয়ে শঙ্কর বা জাদেজাকে কেদার যাদবের জায়গায় খেলানো হবে।

 

Share this article
click me!