আইপিএল যেমন দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে নানান সুখ স্মৃতি উপহার দিয়েছে ক্রিকেট ভক্তদের, তেমনি এই এক দশকেরও বেশি সময় জুড়ে টুর্নামেন্টটিতে ঘটেছে এমন কিছু ঘটনা যা না হওয়াই শ্রেয় ছিল।এমনই কিছু অস্বস্তিকর কিন্তু মুখরোচক ঘটনা তুলে ধরা হলো নিম্নলিখিত অংশে।
আরও পড়ুনঃকেকেআরে খেলবেন কি মেসি, ভাইরাল ফটো ঘিরে তোলপার নেট দুনিয়া
• স্ল্যাপগেট-
আইপিএলের প্রথম মরশুমেই ঘটে গিয়েছিল একটি বড়সড় বিতর্কিত ঘটনা, যা কিনা এখনও আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা হিসাবে গন্য হয়। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলতে নামা পেসার শ্রীশান্ত কে মাঠের মধ্যে সকলের সামনে চড় মেরেছিলেন তৎকালীন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের স্ট্যান্ড-বাই অধিনায়ক হরভজন সিং। যদিও এমনটা কেন করেছিলেন হরভজন তা আজও পুরোপুরি পরিস্কার নয়।
• পাকিস্তানি ক্রিকেটার নিষিদ্ধ-
২০০৮ সালে মুম্বাইয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তান তাদের খেলোয়াড়দের ভারতে এসে আইপিএলে যোগদান করা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করে। ফলে শাহিদ আফ্রিদি, শোয়েব আখতার, ইউনিস খান, শোয়েব মালিকদের মতো খেলোয়াড় যারা আইপিএলের বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজির সাথে যুক্ত ছিলেন তাদের ভারতে আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
• ললিত মোদির অপসারণ-
২০১০ সালে আইপিএলের জন্মদাতা এবং চেয়ারম্যান ললিত মোদি-কে দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড করে বিসিসিআই। পরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সারা জীবনের জন্য ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনরকম পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিসিসিআই।
• চিয়ারলিডারের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য-
সাউথ আফ্রিকা থেকে আসা চিয়ারলিডার গ্যাব্রিয়েলা পাসকুয়ালতো চতুর্থ আইপিএল মরশুমে তার প্রতি কিছু ক্রিকেটারের অশালীন আচরণের কথা জানিয়েছিলেন। কোন এক ম্যাচ শেষের পর পার্টিতে তার সঙ্গে ক্রিকেটারদের কিছু আপত্তিজনক ব্যাবহারের কথা জানান। পরে তাকে আইপিএল থেকে বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে জলঘোলা বড় কম হয়নি।
• ওয়াংখেড়েতে নিষিদ্ধ কিং খান-
কলকাতা নাইট রাইডার্স মুম্বাইয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গেলে ওয়াংখেড়ের সিকিউরিটি গার্ডদের সাথে অভব্য আচরণের অভিযোগ ওঠে মদ্যপ শাহরুখ খানের বিরুদ্ধে। যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ ছিলেন কিং খান। পরে পাঁচ বছরের জন্য তাকে ওয়াংখেড়েতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মুম্বাই ক্রিকেট এসোসিয়েশন।
• লিউক পমারব্যাশ আখ্যান-
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একজন মহিলা কে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। তার সঙ্গীর ওপর হাত তোলারও অভিযোগ ছিল পমারব্যাশের বিরুদ্ধে। পমারব্যাশকে দল থেকে সাসপেন্ড করে আরসিবি। কিন্তু পরে আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে।
• চেন্নাইয়ে নিষিদ্ধ মালিঙ্গারা-
২০১৩ তে এই ঘটনা ঘটে। ওই সময় শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অবস্থা মাথায় রেখে তৎকালীন তামিলনাড়ু সরকার শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের চেন্নাইয়ে আসার অনুমতি দেননি সুরক্ষার কারণে। ফলে ২০১৩ সালে কোনও দলের শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে খেলতে দেখা যায়নি।
• নিষিদ্ধ রাজস্থান ও চেন্নাই-
ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির দুর্নীতির সঙ্গে দুই ফ্রাঞ্চাইজি দলের বেশ কিছু মানুষের যুক্ত থাকার ইঙ্গিত পায় লোধা কমিশন। ফলে দুই দলকে দু বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয় আইপিএল। সঙ্গে বিসিসিআইয়ের কিছু শীর্ষকর্তাদেরও বরখাস্ত করা হয়। আইপিএলের ইতিহাসে সবথেকে বড় বিতর্কিত ঘটনা।
• প্রীতি-নেস দ্বন্দ্ব-
ব্যক্তিগত সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছিল আগেই, ব্যবসায়িক সম্পর্কের খাতিরে যোগাযোগ ছিল তাদের। কিন্তু ওয়াংখেড়েতে তাদের মধ্যে ঝামেলার পর নেস ওয়াদিয়ার বিরুদ্ধে তাকে হেনস্তার এবং খুন করার চেষ্টার অভিযোগ আনে প্রীতি জিন্টা। ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সচিন পুত্র অর্জুন টেন্ডুলকারও।
• কোহলির নিয়মভঙ্গ-
২০১৫ সালে বিসিসিআইয়ের নিয়ম ভেঙেছিলেন কোহলি। বৃষ্টি বিরতি চলা কালীন খেলোয়াড়দের জন্য করা নির্দিষ্ট সীমানা ভেঙে নিজের বান্ধবী অনুষ্কা শর্মার সাথে দেখা করেন তিনি যা একেবারেই আইনবিরুদ্ধ। যদিও কোনও শাস্তি না দিয়ে হুঁশিয়ার করে ছেড়ে দেওয়া হয় কোহলিকে।
আরও পড়ুনঃআইপিএলের পরেই কোচের ভূমিকায় সুরেশ রায়না, দেশে ফিরে হবে পাকা কথা