কাশিপুর রাজবাড়িতে প্রাচীন রীতি অনুযায়ী পুজো শুরু হয় জিতা ষষ্ঠীর পরের দিন থেকে। রাজ পরিবারের সদস্যরা জানান, শ্রী রাম চন্দ্রের ষোলো কল্প ক্ষত্রিয় রীতি মেনে ষোলো দিন ধরে চলে মা দুর্গার পুজো। রীতি মেনে প্রতিদিন ছাগ বলি দেওয়া হয়।
একটা সময় গমগম করত রাজবাড়ি (Palace)। দাস-দাসী, আত্মীয়স্বজনে ভরপুর থাকত বাড়ি। সব সময় লোকের আনাগোনা লেগেই থাকত। সে সময় এখন অতীত (Past)। পুরোনো দিনের সেই কথা শুনলে এখন গল্প বলেই মনে হয়। আজ আর রাজ পরিবারের সেই জাঁকজমক, জৌলুস কিছুই নেই। কিন্তু, ঐতিহ্য আর সাবেকিয়ানা পুরোপুরি থেকে গিয়েছে। দু'হাজার বছরের সেই ঐতিহ্য (Tradition) আর শাস্ত্রীয় রীতিকে মান্যতা দিয়ে আজও পুরুলিয়ার কাশিপুর রাজবাড়ির (Kashipur Rajbari) দেবী রাজ রাজেশ্বরীর পুজো করা হয়।
কাশিপুর রাজবাড়িতে প্রাচীন রীতি অনুযায়ী পুজো (Durga Puja) শুরু হয় জিতা ষষ্ঠীর পরের দিন থেকে। রাজ পরিবারের সদস্যরা জানান, শ্রী রাম চন্দ্রের ষোলো কল্প ক্ষত্রিয় রীতি মেনে ষোলো দিন ধরে চলে মা দুর্গার পুজো। রীতি মেনে প্রতিদিন ছাগ বলি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- এক সপ্তমী সন্ধ্যায় কোতুলপুর ভদ্র জমিদার বাড়িতে পা রেখেছিলেন রামকৃষ্ণ
এই পুজো প্রায় দু'হাজার বছরের প্রাচীন। কাশিপুর অঞ্চলের সবথেকে প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। রাজা কল্যাণ শেখর সিং দেওর সময়ে এই পুজো শুরু করা হয়েছিল। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একাধিক ইতিহাস। আর হবে নাই বা কেন। রাজ পরিবারের পুজো বলে কথা। এর সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে থাকাটাই খুব স্বাভাবিক বিষয়।
আসলে রাজ রাজেশ্বরী আর বর্তমান মাইথনের মা কল্যানেশ্বরী এক। তাই পঞ্চকোটের এই দেবীর মাহাত্মের কথা এখানে লোকের মুখে মুখে ফেরে। দেবী এখানে দশভুজা নন। এখানে দেবীর হাত চারটি। বছরের প্রতিটা দিন স্থায়ী দেবী মন্দিরে দেবীর পুজো হয়ে থাকে। দেবীর পুজোর পুরোহিত থেকে শুরু করে হন্তারক সবাই বংশ পরম্পরায় এখানে দেবীর আরাধনায় ব্যস্ত থাকেন। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তের দল এখানে আসেন দেবীকে পুজো দিতে।
আরও পড়ুন- Durga Puja- দুর্গাপুজোর সময় মনসা পুজোয় মেতে ওঠেন ফুলঘরা গ্রামের বাসিন্দারা
পুজোর এখন আর তেমন জৌলুস নেই। তবে সাবেকিয়ানা আর ঐতিহ্য আজও বর্তমান রয়েছে এই পঞ্চকোট রাজ পরিবারের দুর্গা পুজোয়। আর তাই পুজোর চারদিন এক অন্য মহিমায় সেজে ওঠে কাশিপুর রাজবাড়ির রাজ রাজেশ্বরীর মন্দির।