বিজয় দশমীতে কেন সিঁদুর খেলা হয়? জেনে নিন এর ইতিহাস ও গুরুত্ব

দশমীর দিন সিঁদুর দান এবং সিঁদুর খেলাকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করে থাকেন সনাতন ধর্মে বিশ্বাসীরা। এছাড়াও শ্রীমৎভাগবতে কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষে গোপিনীদের সিঁদুর খেলার বিবরণ উল্লেখ করা আছে।

বিজয় দশমী মানেই মা দুর্গার চলে যাওয়া ও মহিলাদের সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠা। দশমীকে বিজয়া দশমী এবং এই দিনে সিঁদুর খেলা নিয়ে বহু প্রশ্ন ঘোরে সাধারণের মনে। হিন্দু বিবাহ রীতি অনুযায়ী সিঁদুর দান একটি লৌকিক আচার। স্বামীর মঙ্গল কামনার্থে সিঁদুর পরেন বিবাহিত মহিলারা। সিঁদুরকে আসলে ব্রহ্মের প্রতীক হিসেবে মানা হয়। মনে করা হয় ব্রহ্মা সমস্ত দুঃখ কষ্টের অবসান ঘটিয়ে সুখ প্রদান করেন। এ বছর দুর্গোৎসব পালিত হবে ১ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।

তাই দশমীর দিন সিঁদুর দান এবং সিঁদুর খেলাকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করে থাকেন সনাতন ধর্মে বিশ্বাসীরা। এছাড়াও শ্রীমৎভাগবতে কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষে গোপিনীদের সিঁদুর খেলার বিবরণ উল্লেখ করা আছে। কৃষ্ণের মঙ্গল কামনার জন্য সিঁদুর খেলতেন গোপিনীরা।

Latest Videos

এই দিনে বিবাহিত মহিলারা প্রথমে মা দুর্গার উদ্দেশে সিঁদুর অর্পণ করেন। মহিলারা পান, মিষ্টি, সিঁদুর নিয়ে দেবীকে নিবেদন করেন। কথিত আছে, মা দুর্গা যখন তার মাতৃগৃহ ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যান, তখন তাকে সিঁদুর দিয়ে সাজাতে হয়। এরপর বিবাহিতারা একে অপরের গায়ে মুখে সিঁদুর লাগান এবং একে অপরকে দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান। কথিত আছে যে এই সিঁদুর লাগালে বিবাহিতরা সৌভাগ্যবতী হওয়ার বর পান।

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোর সময় থেকে বাকি বছরটা এই ৪ রাশির জন্য অত্যন্ত শুভ, জেনে নিন কারা আছেন 

পুরাণে বর্ণিত কাহিনী অনুসারে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। টানা নয় দিন নয় রাত্রি মহিষাসুরের সঙ্গে দশোভূজা দেবী দুর্গার যুদ্ধ হয়েছিল। এরপর দশমীতে অধর্ম এবং অসত্যের উপর সত্যের জয় হয় যখন দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন। সেই জয় চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে দশমীর আগে বিজয়া শব্দের উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজা ও তার পরবর্তী সময় এই ৫ রাশির জন্য খুব চাপের হতে পারে, দেখে কোন রাশি আছে এই

দুর্গাপুজোয় সিঁদুর খেলার প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে। বাঙালি মহিলারা সিঁদুর খেলার সাথে ধুনুচি নাচের ঐতিহ্য অনুসরণ করেন। মনে করা হয় মা দুর্গা ধুনুচি নাচে প্রসন্ন হন এবং বিবাহিতাদের স্বামীর দীর্ঘায়ু বর দেন। এই উৎসবের ইতিহাস প্রায় ৪৫০ বছরের পুরনো। 

হিন্দু নারীরা লাল বর্ণের সিঁদুর কপালে পড়েন কেন? কারণ লাল বর্ণ হল উর্বরাশক্তির প্রতীক। অপরমতে লাল রঙ হল সৃষ্টিরও প্রতীক। তাই প্রাচীনকালে লাল সিঁদুরকে ভারতীয় নারীরা বেছে নিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম প্রসাধন হিসেবে। আর বিবাহিতা মহিলাদের কপালে সিঁদুর থাকার অর্থ হল তাঁরা সন্তান ধারণের উপযুক্ত। এই বিশ্বাস থেকেই লাল রঙের সিঁদুর পরার রীতি চলে আসছে।

আরও পড়ুন- এই বছর মা দুর্গার আগমণ হবে 'হাতিতে' চড়ে, জেনে নিন মায়ের প্রতিটি বাহনের গুরুত্ব

পৌরাণিক শাস্ত্রমতে মানব শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন দেবতার অধিষ্ঠান। যেমন আমাদের কপালে থাকেন স্বয়ং ব্রহ্মা, তিনি আবার সৃষ্টির দেবতা। তাই ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতেই কপালে লাল সিঁদুর পড়েন সকলে। শক্তির সাধক কাপালিক বা পুরুষরাও কপালে রক্তবর্ণ সিঁদুর ধারণ করে থাকেন। আসলে ব্রহ্মা কে তুষ্ট রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা। অপরদিকে প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্র মতে নারী হল শক্তি, সেই শক্তিকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য সিঁদুরের ব্যবহার শুরু হয়।

Share this article
click me!

Latest Videos

Viral Video! আবাসের টাকা ঢুকতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাটমানি চাইছেন TMC কর্মী | Murshidabad Latest News
প্রেমের আড়ালে লক্ষাধিক টাকা লুঠ! প্রতারণার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনি | South 24 Parganas News Today
‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh
'কুমিল্লা ছেড়ে চলে যা' কুমিল্লায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা! | Bangladesh News |
শীতের রাতে যমুনার আতঙ্ক! একের পর এক জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাঘিনী | Bandwan Tiger News