কলাগাছের থেকে থোড় কেটে, বাকি যে অংশ পড়ে থাকে, তাই দিয়েই তৈরি হচ্ছে পুরো প্যান্ডেল। সেই অংশটিকে রিসাইকেল করে সেজে উঠছে প্যান্ডেলের নানা ভাগ।
কলকাতার মহা নাগরিক বা মেয়র ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পুজো বলে খ্যাত চেতলা অগ্রণীতে এবার সবুজ বিপ্লব। পরিবেশ বান্ধব থিম করে মানুষকে চমকে দেওয়ার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে চেতলা অগ্রণী। দক্ষিণ কলকাতার পুজো দেখতে যাওয়া মানেই সেই লিস্টে চেতলা অগ্রণী থাকবে। প্রতি বছর পুজোয় কীভাবে মানুষ ভিড় করেন এই ক্লাবে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না।
কথা হচ্ছি ক্লাবের জয়েন্ট সেক্রেটারি পিন্টু শীলের সঙ্গে। প্রতিবেদককে তিনি জানান এবারের থিম বেছে নিয়েছেন খোদ ক্লাব সভাবিত ববি হাকিম। এবার কীভাবে সবুজ বিপ্লবে সামিল হচ্ছে এই ক্লাব, জানালেন ক্লাবের জয়েন্ট সেক্রেটারি। কলাগাছের থেকে থোড় কেটে, বাকি যে অংশ পড়ে থাকে, তাই দিয়েই তৈরি হচ্ছে পুরো প্যান্ডেল। সেই অংশটিকে রিসাইকেল করে সেজে উঠছে প্যান্ডেলের নানা ভাগ।
থোড়ের ফেলে দেওয়া অংশকে রোদে ভালো ভাবে শুকিয়ে নিয়ে তাতে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক। এর সঙ্গে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও কড়া নজরে রাখা হচ্ছে। চেতলা অগ্রণীর পুজো ২০২২ সালে ৩০ বছরে পড়ল। শিল্পী সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ক্রমশ প্রাণ পাচ্ছে চেতলা অগ্রণীর এবারের পুজো প্যান্ডেল।
সবুজ বিপ্লবের সাথী হতে যে ভাবনার প্রয়োজন, সেই ভাবনাকে ছন্দে বেঁধেছেন
দেবদূত ঘোষঠাকুর। তিনি লিখেছেন
ছাল কাজে লাগে, কাজে লাগে পাতা
কলার খেলাও যায় না ফেলা ।
সবুজ ডাকছে, ডাকছে শিল্প
ছুটে এসে এই বেলা ।
রাঢ় বাংলার সনাতন নাচ
বাঁশ ভর করে শরীরের কাজ
উঠছে, নামছে, বোঁ বোঁ ঘুরছে,
এ ওর কাঁধে নিমেষে উঠছে
লাফ দিয়ে ফের নীচেতে পড়ছে,
মুখেতে গানের বুলিও ফুটছে।
এর থেকেই তৈরি হয়েছে
আমাদের ব্রতচারী
পুজোয় এবার ঝলক দেখব তারই।
মানুষ হেথায় নাচবে না
নাচবে কিছু অবয়ব
কলা গাছের শরীর দিয়েই
তৈরি হয়েছে সব।
কাঠ, টিনের মন্ডপে দেখি
সবুজের হাতছানি,
সবুজ বাঁচুক লোকশিল্পও
বলি সেই কথাখানি।
এলো রায়বেঁশে পুরো নয়া বেশে
এবার পুজোর অঙ্গনে চেতলা সেজেছে
সবাই এসেছে। অগ্রণীর প্রাঙ্গনে।।
গত তিন বছর করোনার কবলে সারা বিশ্ব জর্জরিত। এই বছর কোথাও তাই একটু হলেও স্বস্তির শ্বাস পেয়েছে শহর কলকাতা। গত তিন বছরের শুধু হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ২০২২ সালের দুর্গোৎসব মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা।