জাপানে বিখ্যাত নাকামুরায়ার কারির প্রচলন হয়েছিল এক বাঙালি বিপ্লবীর হাত ধরে, জেনে নিন ইতিহাস

এক বিপ্লবী বাঙালির মুগরির ঝোলে মুগ্ধ হয়ছেন জাপানবাসী। তিনি হলেন রাসবিহারী বসু। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা আজাদ হিন্দ ফৌজ গড়ে যিনি তা তুলে দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে। তিনি যেমন একজন বিপ্লবী হিসেবে খ্যাত তেমনই তাঁর রন্ধনশৈলী মুগ্ধ করেছিল সকলকে।

Sayanita Chakraborty | Published : Aug 12, 2022 8:28 AM IST

বাঙালি মানেই ভোজন রসিক। এই ধারণা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। আর হবে নাই বা কেন, বাঙালি যে বারে বারে প্রমাণ দিয়েছে তার রসনার কথা। খাবারে যে একটা রসের ব্যাপার আছে, উপভোগের ব্যাপার আছে তা বাঙালিরা মনে হয় সবার আগে বুঝেছিলেন। এই স্বাদের প্রচার করেছেন বাঙালিরা। আজ রইল এক বিপ্লবীর কথা। এক বিপ্লবী বাঙালির মুগরির ঝোলে মুগ্ধ হয়ছেন জাপানবাসী। তিনি হলেন রাসবিহারী বসু। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা আজাদ হিন্দ ফৌজ গড়ে যিনি তা তুলে দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে। তিনি যেমন একজন বিপ্লবী হিসেবে খ্যাত তেমনই তাঁর রন্ধনশৈলী মুগ্ধ করেছিল সকলকে। 

বহু যুগ ধরে জাপানে নাকামুরায়ার কারি খ্যাতির শীর্ষে আছে। পদটি চালু করেছিল নাকামুরায়া বেকারি। ক্রমে তা জাপানের বিভিন্ন রেস্তোরাঁতে শুরু হয়। জানেন কি এই পদ জাপানে চালু করেছিলেন বিপ্লবী রাসবিহারী বসু। 

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড হার্ডিঞ্জকে হ্ত্যা করতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কিন্তু, অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। এর পর এই ঘটনার আসল ষড়যন্ত্রীকে খুঁজতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। পুলিশের নজর থেকে বাঁচতে জাপান পাড়ি দেন বিপ্লবী রাসবিহারী বসু। তিনি সেখানে টোকিওর বাণিজ্য অঞ্চল শিনজুকুতে, নাকামুরায়া বেকারির বেসমেন্টে আত্মগোপন করেন। সেখানেই একটি নিজের অতিপ্রিয় মুরগির ঝোল রেঁধে ফেলন বিপ্লবী। সেই মুগরির ঝোলের স্বাদে মুগ্ধ হন বেকারির কর্ণধার আইজো ও কোতসুকো সোমা এ তাঁদেরবোন তোশিকোকে। 

তারপর সেখানেই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে পরিবেশিত হয় মুরগির ঝোল। যা খ্যাত পায় নাকামুরায়ার কারি নামে। আজ এত বছর পরও সেই নাকামুরায়ার কারির স্বাদে আজও বিভোর হয় জাপানবাসীরা। এখন তা বহু জাপানবাসীর প্রিয় খাবার। সেখানের জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে এটি স্থান পায়। টক দই, পেঁয়াজ, রসুন, আদা দিয়ে কষানো হয় এই পদ। দেওয়া হয় আলু। সুস্বাদু এই পদ সকলের পাতেই স্থান পায়। এই স্বাদ আজও সকলের কাছে সমান প্রিয়। এভাবেই রাজবিহারী বসুর উদ্যোগে ইন্ডিয়ান কারি খ্যাতি পায় জাপানে। সেখানে প্রচলিত রাইসু কারির থেকেও নাকামুরায়ার কারির জনপ্রিয়তা বেশি। এভাবে বাঙালি পদ খ্যাত পেয়েছে জাপানের রেস্তোরাঁর মেনুতে। এই পদের স্বাদ যুগ যুগ ধরে আনন্দ জুগিয়ে আসছে সকলকে।  

আরও পড়ুন- খাদ্যরসিক রবি ঠাকুরের প্রিয় পদ ছিল দুধ সুক্তানি, রইল ঠাকুর বাড়ির এই স্পেশ্যাল রেসিপি

আরও পড়ুন- স্বাদ বদল করতে কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না, চিন্তা নেই এখানে কলকাতার ২০ টি সেরা রেস্তোরাঁর মেনু, দাম, ঠিকানা

আরও পড়ুন- আরও সস্তা হল সোনা, হুড়মুড়িয়ে দাম কমল রূপোর, কলকাতার দর কোথায় ঠেকল
  
 

Share this article
click me!