ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে কার্যত ধ্বংসপুরীর রূপ নিয়েছে কলকাতা সহ বাংলার একাধিক জেলা। বিশেষ করে কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনার দুর্দশার ছবি দেখে আঁতকে উঠছেন সকলে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছে সেনা। এখনও বহু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছে সেনাও। আমফানের বিপর্যয় থেকে বাদ যায়নি খেলার ময়দানও। ইষ্টবেঙ্গল, মোহনবাগান থেকে শুরু করে ময়দানের একাধিক বড়,মাঝারি, ছোট ক্লাব ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। ঝড়ের দাপটে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। ক্ষতির সম্মুখীন ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেন গার্ডেন্সও। তবে যুবভারতীর থেকে কম। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেমেছে রাজ্যের ক্রীড়া দফতর ও সিএবি।
আমফানের তাণ্ডবে যুবভারতীর প্রাকটিস গ্রাউন্ডের বাতিস্তম্ভ উড়ে গিয়েছে। বাতিস্তম্ভগুলি মাটির অনেকটা নীচ পর্যন্ত প্রায় ৬ থেকে ৭ ফুট নীচ পর্যন্ত ঢালাই করে পোতা ছিল। আমফান এতটাই শক্তিশালী মাটি উপড়ে বাতিস্তম্ভগুলোকে ফেলে দিয়েছে মাঠের মধ্যে। পুরো স্টেডিয়ামের ছাউনির অনেকটাই উড়ে গিয়েছে। যা নতুনভাবে তৈরি হয়েছিল তিনবছর আগে অনূর্ধ্ব ১৭ ছেলেদের ফুটবল বিশ্বকাপের সময়। যুবভারতীর একটি বাতিস্তম্ভের ক্ষতি হয়েছে ঝড়ে। আমফানে ভেঙেছে যুবভারতীর প্রেসবক্সের কাঁচ। প্রস্তুতি মাঠদু’টি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে স্টেডিয়াম ক্যাম্পাসের একাধিক গাছ। আমফানের পর যুবভারতীর বেহাল দশা খতিয়ে দেখেছেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের মাটিতে বসবে মেয়েদের যুব বিশ্বকাপের আসর। তার আগে আমফান বিপর্যয়ে বেহাল যুবভারতী দ্রুত পুরোনো অবস্থায় ফিরবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ক্রীড়ামন্ত্রী।
অপরদিকে, ঝড়ে তাণ্ডবে ইডেনের পিচ ও আউট ফিল্ডের খুব একটা ক্ষতি হয়নি। সামান্য যা ক্ষতি হয়েছে তা কয়েক দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। তবে ‘জি’ এবং ‘এইচ’ ব্লকের ফাইবারের ছাদ আমফান আস্ফালনে উড়ে গিয়েছে। ‘কে’ ও ‘এল’ ব্লকের অ্যালুমিনিয়াম শিট খুলে এসেছে। পড়ে আছে ইডেনেরই চত্বরে। কর্পোরেট বক্সের কাঁচ ভেঙেছে। খুলে গিয়েছে দরজা। স্টেডিয়ামের ‘ডি’ ব্লকের ম্যানুয়াল স্কোরবোর্ড আমফানের দাপটে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ইডেনের ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডেরও। সিএবি দেওয়াল আর ইন্ডোরের মাঝামাঝি পড়ে গিয়েছে গাছ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা সেটা বুঝতে ইঞ্জিনিয়ার ডাকছে সিএবি। শুক্রবার ইডেন সহ ময়দানের বাদবাকি ক্লাব তাঁবু ঘুরে দেখেন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া এবং যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস। সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত। সে মাঠের ছাউনি ওলটপালট করে দিয়ে গিয়েছে আমফান। যদিও সিএবি কর্তাদের মনে হচ্ছে, যা হয়েছে, কয়েক লক্ষ টাকা খরচে মিটিয়ে দেওয়া যাবে। সিএবি সবাপতি অভিষেক ডালমিয়া জানিয়েছেন,সিএবি সভাপতি জানিয়েছেন, ‘প্রাকৃতিক একটা বিপর্যয় এসেছে। ক্ষয়ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে বিশাল কোনও ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছে ইডেন।’ অভিষেক ডালমিয়া আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আলোচনা করব। তাদের থেকে আমরা যা নির্দেশ পাব সেই অনুযায়ীই কাজ শুরু হবে শীঘ্রই।’ কিছু ফাইবার শিট এবং শুকনো পাতা মাঠে উড়ে এসে পড়লেও আমফানে ইডেনের মাঠের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন সিএবি সভাপতি।