ভারতের ফুটবলে (Indian Football)তার ভূমিকা নিয়ে অনেক দিন আগে থেকেই প্রশ্ন উঠছিল। এবার সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) তরিস্কারের সম্মুখীন হলেন সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (AIFF) প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল প্যাটেল (Praful Patel)।
ফিফার নির্বাসনের পর ভারতীয় ফুটবলে যে অন্ধকার নেমে এসেছে তার জন্য একমাত্র যত নষ্টের গোড়া যে প্রফুল প্য়াটেল সেই অভিযোগ এর আগে একাধিক বার উঠেছে। ক্ষমতা আকড়ে থাকার জন্য ফিফার নির্বাসনেও যে তার কারসাজি রয়েছে অভিযোগ রয়েছে তেমনটাও। বহু প্রাক্তন ফুটবলরা থেকে শুরু বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক, প্রাক্তন কিছু ফুটবল কর্তার মতে, এই নির্বাসন প্রক্রিয়া আসলে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভন্ডুল করার একটা চক্রান্ত বা চেষ্টা। যাতে প্রফুল প্যাটেল ও তার অনুমাগামীরা আরও কিছু দিন এআিএফএফের প্রশাসনে সজীব হয়ে থেকে যেতে পারেন। আর এবার সুপ্রিম কোর্টেও তিরস্কারের মুখে পড়লেন সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্কার প্রাক্তন সভাপতি। ভারতীয় ফুটবলতে প্রফুল প্যাটেল ধ্বংস করে দিচ্ছেন বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি।
সোমবার শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের আর্জি ও ফিফার নিয়মের কথা মেনে প্রশাসক কমিটি বা কোয়া ভেঙে দেয়। পুরনো রায় সংশোধন করে প্রশাসক কমিটি ভেঙে দেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এ এস বোপান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানায়, এই পরিস্থতিতে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার কাজ দেখাশোনা করবে সেক্রেটারি জেনারেল। একইসঙ্গে জানা গিয়ছে আগামি ২ সেপ্টেম্বর হতে চলেছে ফেডারশনের নির্বাচন। ভারতীয় ফুটবলের প্রফুল প্যাটেলের ভূমিকা নিয়ে যে সুপ্রিম কোর্ট একেবারেই সন্তুষ্ট নয় তা বিচারকের মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার। ভারতীয় ফুটবলের বর্তমান অবস্থার জন্য তাঁকেই দায়ী করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। নির্বাচনের জন্য আদালত যে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করতে চাইছে তাতে কয়েকটি রাজ্য সংস্থার আপত্তি রয়েছে বলে জানান প্রফুল প্য়াটেলের আইনজীবি কপিল সিব্বল। এখানেই চটে যান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন,'আপনি বিশ্বকাপ আয়োজনে বাধা দিচ্ছিলেন। আপনি ভারতীয় ফুটবলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। সেটা এখনও করে চলেছেন। আমরা আপনাকে বুঝে নেব। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কেউ আবেদন করেনি। এমনকি, রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিদেরও এতে সম্মতি রয়েছে।'
প্রসঙ্গত,তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ভারতকে নির্বাসিত করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা। গত ১৬ অগাস্ট ভারতীয় ফুটবলে নেম এসেছিল ঘন কালো অন্ধকার। ফিফা তাদের বিবৃতিতে বলে, 'এখন এআইএফএফ-এর ক্ষমতায় রয়েছে কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স। এর বদলে যে দিন থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া কমিটি এআইএফএফ-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখতে শুরু করবে, সে দিন থেকে এই নির্বাসনের শাস্তি উঠে যাবে।' এই নির্বাসনের ফলে যেমন একদিকে কোনও আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলতে পারবে না ভারতীয় ফুটবল দল। একইসঙ্গে নির্বাসন না উঠলে আগামি অক্টোবরে ভারতের মাটিতে অনুর্ধ্ব ১৭ মহিলা বিশ্বকাপের আয়োজন সম্ভব নয়। বিদেশী ফুটবলার সই করাতে পারবে না ক্লাবগুলি। এখন সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার নির্বাচন হওয়া, নতুন প্রশাসক ক্ষমতায় আসা ও ফিফার নির্বাসন ওঠার অপেক্ষায় গোটা দেশ।