তালিবানি শাসনে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে গান - এও কী সম্ভব, দেখুন ছবিতে ছবিতে

গানে বাজনায় সারাদিন মুখরিত থাকত আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিক। ছেলেমেয়ের ভেদাভেদ ছিল না, সঙ্গীতের সাধারণ ভাষায় ভেঙে গিয়েছিল সব। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে চলত গানেরর চর্চা। ই সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা দেশে তো বটেই েমনকী বিদেশের মাটিতেও সংগীত পরিবেশন করে েসেছে। তবে, অবস্থাটা েখন পাল্টে গিয়েছে। রুদ্ধ হয়েছে আফগান বাশি-সঙ্গীত। সঙ্গীতের মুর্ছনার বদলে শোনা যাচ্ছে তালিবানদের জুতোর আওয়াজ। পড়ে থাকা বাদ্যযন্ত্রগুলিতে জমছে ধুলো। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, আফগানিস্তানের ই খ্য়াতনামা সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানের করুণ অবস্থার চিত্র তুলে ধরেছে - 
 

amartya lahiri | Published : Aug 28, 2021 11:52 AM IST / Updated: Sep 03 2021, 09:37 AM IST

110
তালিবানি শাসনে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে গান - এও কী সম্ভব, দেখুন ছবিতে ছবিতে

স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা তথা পরিচালক ড. আহমদ সরমস্ত প্রথম আফগান হিসাবে অস্ট্রেলিয় সংগীত নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ১৯৯০'ের দশকে তালিবানি শাসনের সময় আফগানিস্তান ছেড়ে রাশিয়ার মস্কোতে পালিয়েছিলেন তিনি। পরে, মার্কিন বাহিনী তালিবান সরকারকে উৎখাত করলে, ফের আফগানিস্তানে ফিরেছিলেন। ২০১৪ সালে েক আত্মঘাতী বোমা হামলায় আহত হয়ে বেশ কিছুদিন কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তার। েবার বোধহয়, তার ফের পালানোর পালা। 

210

প্রায় এক দশক আগে আফগানিস্তানে ফিরে সরমস্ত েই গানের স্কুলটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আফগান সঙ্গীতের সঙ্গে পাশ্চাত্যধারার সংগীতের মিশেলে সম্পূর্ণ নতুন েক নতুন ঘরানা চালু করেছিলেন তিনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে রাস্তা থেকে অনাথ, আশ্রয়হীন শিশু প্রতিভাদের তুলে েনে গানের স্কুলে ভর্তি করতেন সরমস্ত। এই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের অনেকেই এখানেই প্রথম প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেছিলেন। 

310

আফগানিস্তান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকেরই অর্কেস্ট্রা ব্যান্ড হল জোহরা। আফগানিস্তানের প্রথম সব মহিলা শিল্পীদের অর্কেস্ট্রা। স্লোভাকিয়ায় এক উৎসবে প্রথম ই মহিলা অর্কেস্ট্রা ব্যান্ড পারফর্ম করেছিল। ব্যান্ডের সদস্যরা স্বপ্ন দেখতেন গান গেয়ে অনেক নাম করবেন। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই স্বপ্ন েখন বন্দুকের নলের সামনে মিলিয়ে গিয়েছে। গানের স্কুলটিই ছিল তাদের ঘরবাড়ি। সেই অর্থে ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছেন তারা। 

410

আফগানিস্তানে ফিরে এসেছে ১৯৯৬-২০০১'ের অন্ধকার যুগ। তালিবানিস্তানে সংগীতশিল্পীদের জীবনই যেখানে সুতোর উপর ঝুলছে, সেখানে গানের সক্কুলটির যে আর অস্তিত্ব থাকবে না, তা বলাই বাহুল্য। গত জুলাই মাসেই অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন থেকে সরমস্ত বিবিসিকে বলেছিলেন, 'আমাদের স্বপ্ন, আশা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা - সব নষ্ট হতে বসেছে।' আজ আর তা আশঙ্কা নয়, েকেবারে বাস্তব।
 

510

গানের মাস্টারমশাই আরও জানিয়েছেন, তাঁর গানের স্কুলের কর্মীরা, শিক্ষার্থীরা, তিনি নিজে তালিবানি হামলার লক্ষ্যবস্তু শিকার হতে পারেন। আর ই ভয় েমন নয়, যে তাদের আর পড়াশোনা হবে কিনা, বা তারা আর গান গাইতে পারবে কি না। শঙ্কাটা তাঁদের জীবনের। তালিবানিস্তানে সঙ্গীত শিল্পীরা যে েকেবারেই নিরাপদ নয়।

610

বিবিসি-কে সরমস্ত বলেছেন, তার শিক্ষার্থীরা দারুণ ভয়ে রয়েছে। গানের স্কুলে ফিরে গেলে যে ভয়ঙ্কর শাস্তির মুখে পড়তে হবে, তা তাদের বুঝতে মোটেই অসুবিধা হচ্ছে না। তালিবানরা কাবুল দখলের পরই দলে দলে শিক্ষার্থীরা েসে গানের স্কুলেই রেখে গিয়েছে তাদের বাদ্যযন্ত্র। ঘরে বাদ্যযন্ত্র থাকলেও প্রাণ সংশয় হতে পারে বলে উদ্বিগ্ন তারা।

710

বর্তমানে ড. সরমস্ত, আরও অনেক আফগান সঙ্গীতশিল্পীদের মতোই লুকিয়ে আছেন। গোপন ডেরা থেকেই তিনি বলেছেন, তালিবানরা তাঁর গানের স্কুলে নিয়মিত ঘোরাফেরা করছে। গানের স্কুলে থাকা অনেক বাদ্যযন্ত্র নষ্ট করে ফেললেও, তারা স্কুলটির সামগ্রিকভাবে কোনও ক্ষতি খনও করেনি। তবে ড. সরমস্তেরই খোঁজ করছে কট্টরপন্থীরা। সরমস্তও জানিয়ে দিয়েছেন, ছোটখাটো কোনও নেতা নয়, তিনি শুধুমাত্র শীর্ষ তালিবান নেতাদের সঙ্গেই কথা বলবেন।

810

কাবুল দখল করার পর তালিবান মুখপাত্র জাবিবুল্লাহ মুজাহিদ বলেছিল, নতুন তালিবান সরকার অনেক বেশি আধুনিক হবে। তারা নারী স্বাধীনতা ও সরকারি কর্মীদের সুরক্ষা দেবে। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না। তালিবানরা যে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করবে, সেই আশাও কেউ করছেন না। 

910

ইতিমধ্য়েই, তালিবানি শাসনে যে আফগানিস্তানে আজান ছাড়া কোনও সুর শোনা যাবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে তালিবানরা। ডেইলি মেইল-কে দেওয়া সাক্ষাতকারে েকই জাবিবুল্লা জানিয়েছে, ইসলামে সঙ্গীত নিষিদ্ধ। তাই তালিবানি শাসনে গান-বাজনা চলবে না। তিনি আরও বলেছেন, তালিবানদের আশা, সেটা আফগানিস্তানের মানুষ বুঝবেন। 'কাজেই এই ধরনের কাজ (গান-বাজনা) যাতে তারা না করেন, তার জন্য মানুষকে বিশেষ চাপ দিতে হবে না', েমনটাই বলেছে তালিবান মুখপাত্র। 
 

1010

পরিস্থিতি যে েকেবারেই সঙ্গীত চর্চার জন্য আদর্শ নয়, তা মেনে নিয়েছেন ড. সরমস্ত। তারপরও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, গানের চর্চা ছেড়ে না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সকল আফগান সংগীতশিল্পীকে তিনি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos