বিদ্যুতের বিল আকাশছোঁয়া, এগুলি মেনে চললে বিল আসবে আয়ত্তের মধ্যেই
প্রতি মাসে বিদ্যুতের বিল নিয়ে চিন্তা যেন লেগেই থাকে। মাসের শুরু থেকেই হৃদস্পন্দন আরও বেড়ে যায়। কারণ বিল একবার বেশি এসে গেলে আর কিছুই করার থাকে না। সেই বিল মেটাতে গিয়ে মাথায় হাত পড়ে মধ্যবিত্তের। এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বদলেছে অফিসের সংগা। এখন বেশিরভাগ অফিসই চলছে বাড়ি থেকে। ফলে গরমকালে এসি, ফ্যান, আলো, কম্পিউটার সবই প্রায় ১০ ঘণ্টা ধরে চলছে। এর জেরে আরও বেশি আসছে বিদ্যুতের বিল। তবে কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখলে বিদ্যুতের খরচ অনেকটাই আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসতে পারবেন আপনি। দেখে নিন কোন জিনিসগুলি মাথায় রাখতে হবে।
Asianet News Bangla | Published : Aug 6, 2021 3:00 PM IST / Updated: Aug 06 2021, 08:53 PM IST
বিদ্যুতের বিল মধ্যবিত্তের কাছে সবসময়েই চোখরাঙানি। এখন আবার তার সঙ্গে জুটেছে অফিস ও স্কুল। প্রায় সারাক্ষণই বাড়িতে থাকতে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে। এর ফলে বিদ্যুতের খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। ফলে বিদ্যুতের বিল বাবদ মাসের পর মাস গুণতে হচ্ছে অনেক বেশি টাকা। তবে এগুলি বাদ দিলেও চলবে না। তাহলে কীভাবে আয়ত্তে আনবেন বিদ্যুতের বিল দেখে নিন।
সকালে যদি ঘরে আলো থাকে তাহলে অহেতুক আলো জ্বালাবেন না। তেমন হলে যে ঘরে বসে স্কুল বা অফিস করবেন সেই ঘরের জানলা খুলে দিন। ফলে আলোর সাশ্রয় হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া আলো একেবারেই জ্বালাবেন না। মাসের শুরুতেই বাড়ির সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক করে দিন।
অনেক সময় সন্ধেবেলায় সব ঘরে আলো জ্বালিয়ে রাখেন অনেকেই। এটা একেবারেই করবেন না। যে ঘরে থাকবেন না সে ঘরে আলো জ্বালানোর কোনও প্রয়োজন নেই। বাড়িতে কোনও অতিথি এলে আলো জ্বালিয়ে রাখুন। কিন্তু, অহেতুক আলো জ্বালানোর প্রয়োজন নেই। কোনও ঘরে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর সেই ঘরের আলো বন্ধ করে দিন।
অনেকেই কোনও ঘর থেকে বেরিয়ে আলো পাখা চালিয়ে রাখেন। সেটা যে বন্ধ করতে তা ভুলে যান। বিদ্যুতের খরচ কম করতে হলে এগুলো করবেন না। সব সময় ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আলো পাখা বন্ধ করে দেবেন। বাড়িতে খুদে সদস্য থাকলে তাকে দায়িত্ব দিন এদিকে খেয়াল রাখতে ৷ এভাবে ছোটো থেকে তাকেও এই বিষয়ে সতর্ক করা যাবে।
কারেন্ট চলে গেলে বাড়ির সব আলো পাখা বন্ধ করে দেবেন। অনেকেই কারেন্ট এসেছে বুঝতে পারার জন্য ঘরের আলো ও পাখা জ্বালিয়ে রাখেন। এটা একেবারেই করবেন না। এতে এক ধাক্কায় বিল অনেকটা বেড়ে যায়। তাই কারেন্ট যাওয়ার পর সব বন্ধ করে দিন। আর এখন প্রতিটা ঘরের সুইচে ইন্ডিকেটার থাকে। সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সেটাই আপনাকে কারেন্ট আসার খবর দিয়ে দেবে।
বাড়িতে এলইডি আলোর ব্যবহার বাড়ান। এতে বিদ্যুৎ কম লাগে। যে সব জায়গাতে বেশি আলোর প্রয়োজন রয়েছেন সেখানে এলইডি বাল্ব ও টিউবলাইট লাগান। দেখবেন বিল অনেক কম আসবে। বিশেষ করে বাথরুম, রান্নাঘর এই সব জায়গায় এই আলো লাগান। আর এলইডি টিউব লাইটের আলো অনেক বেশি হয়।
সারা বাড়িতে আলো জ্বালিয়ে না রেখে টাস্ক লাইটিং শুরু করুন। যেমন, দরকারে বই পড়ার জন্য রিডিং ল্যাম্প ব্যবহার করুন। টিভি দেখার সময় খুব বেশি আলোর প্রয়োজন পড়ে না, সেখানে কম পাওয়ারের এলইডি আলো লাগান। রান্না ঘরে আলোর প্রয়োজন খুব বেশি হয় সেখানেও এলইডি লাগান।
বাড়ির সব বাল্ব ও আলো নিয়মিত পরিষ্কার করুন। অনেক সময় ধুলো জমে গেলে তা থেকে বেশি আলো বের হয় না। কেমন যেন অন্ধকার লাগে। তাই মাসে অন্তত একবার করে আলো পরিষ্কার করুন। দেখবেন এতে ঘরে আলোর পরিমাণ বেশি হবে আর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ও হবে।
শীতাতপ যন্ত্রের ফিল্টার প্রতি মাসে পরিষ্কার করুন। চেষ্টা করুন শীতাতপ বা বাতানুকূল যন্ত্র সবসময় যেন ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে। এর থেকে বেশি কমিয়ে দিলে এসির উপর চাপ পড়বে। তাতে এসি খুব তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই ২৫-এ রাখুন। এতে ঘরও ঠান্ডা হবে আর বিদ্যুতের ব্যয়ও কম হবে।
অনেক সময় একটা সিনেমা দেখতে দেখতে অনেকেই উঠে পড়েন। কিন্তু, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার খোলা রেখে দেন। এটা একেবারেই করবেন না। আপনার মনে হতে পারে যে এর জন্য খুব কম বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে তাই বন্ধ করার দরকার নেই। কিন্তু, এটা একেবারেই করবেন না। উঠে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দিন। কারণ ওই একটু একটু করেই অনেকটা হয়ে যায়। তা অনেক সময়ই আমরা বুঝতে পারি না। আর এই পদ্ধতি মেনে প্রতি মাসে অন্তত ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের খরচ কমাতে পারেন আপনি।