'খুঁজে বার করে মারব' - মুখেই হুমকি, কাবুলে আইএস-এর বোমায় টলমল গোটা বাইডেন প্রশাসন

'যারা এই হামলা চালিয়েছে এবং যারা আমেরিকার ক্ষতি চায় তারা জেনে রাখুক, (তাদের) আমরা ক্ষমা করব না। আমরা (এই হামলা) ভুলব না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করে মারব আর তোমাদের এর মূল্য চোকাতে হবে।' বৃহস্পতিবার ইস্পাত কঠিন গলায় কাবুল বিমানবন্দরে হামলাকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু, মুখে তিনি যাই বলুন, কাবুলে আইএস-এর হামলায় ১৩ মার্কিন সেনা সদস্যের মৃত্যুর পর, কেঁপে গিয়েছে গোটা বাইডেন প্রশাসন।    
 

amartya lahiri | Published : Aug 27, 2021 10:42 AM IST / Updated: Aug 27 2021, 04:25 PM IST

18
'খুঁজে বার করে মারব' - মুখেই হুমকি, কাবুলে আইএস-এর বোমায় টলমল গোটা বাইডেন প্রশাসন

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের শারীরী ভাষাতেই তা স্পষ্ট হয়েছে। হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার পর তাঁকে বেশ কিছুক্ষণ মাথা নামিয়ে নীরবতা পালন করতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও তিনি মৃত 'বীর'দের কধথা বলতে গিয়ে মাঝে মাঝে প্রায় কেঁদে ফেলেন। 
 

28

জানুয়ারি মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৪ বছরের তুঘলকি শাসনের পর প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হন বাইডেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশে শান্তি এবং বিদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধা ফিরিয়ে আনার। কিন্তু, বৃহস্পতিবার কাবুলে আইএস জঙ্গিদের আত্মঘাতি হামলা তাঁর সেই লক্ষ্যকে পাহাড়প্রমাণ করে তুলেছে। 

38

ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থিত সরকার এবং মার্কিন বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আফগান সেনাবাহিনীর অতি দ্রুত পতনের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছিল বাইডেন প্রশাসন। অবশিষ্ট মার্কিন সৈন্য এবং হাজার হাজার মার্কিন নাগরিক এবং আফগান মিত্রদের তালিবানদের দয়ায় রেখে তড়িঘড়ি সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল কিনা, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এতদিন বাইডেন যুক্তি দিতেন, মার্কিন বাহিনীর লক্ষ্য দেশ গঠন ছিল না, লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদের অপসারণ। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।

48

সেইসঙ্গে গত ১০ দিন ধরে বাইডেন প্রশাসন আফগানিস্তানের মাটি থেকে নাগরিক ও সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিয়ে আসার জন্য দিনরাত কাজ করেছে। এয়ারলিফ্টের কাজও যেমনটা ভাবা হযেছিল, তার থেকে দ্রুতগতিতে চলছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনীর দুর্দান্ত কাজ করছিল, তালিবানরাও মোটামুটি কাবুল সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে তাদের কথা রেখেছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে গর্ব করে জানানো হয়েছিল, কাবুলের পতনের পর ৯৫,০০০ এরও বেশি মানুষকে নিরাপদে কাবুল থেকে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু, তারপরই ঘটে বিস্ফোরণ। 

58

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার পর বাইডেন প্রশাসনের মধ্যেও কাঁপুনিটা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সিচুয়েশন রুমে সহকারীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন বাইডেন। প্রাদেশিক গভর্নরদের ,সঙ্গে বৈঠক এমনকী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও বাতিল করে ওভাল অফিস। প্রেস সেক্রেটারি জেন ​​সাকি জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে ওই বৈঠকে বাইডেন ভয়ানক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

68

আর সেটাই স্বাভাবিক। আফগান যুদ্ধ বাইডেন শুরু করেননি। শুরুটা করেছিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তারপর বারাক ওবামা, ট্রাম্পের শাসসনকাল গিয়েছে। বাইডেন আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। তা কাজে করে দেখানোর কারণে যদি আফগান যুদ্ধের দায় তাঁর প্রশাসনের উপর এসে পড়ে, তাহলে ক্ষুব্ধ হওয়ারই কথা। 

78

ইতিমধ্য়েই বিরোধী রিপাবলিকান পক্ষ অবশ্য বহাইডেনকে ছিঁড়ে খেতে শুরু করেছে। রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যা এলিস স্টেফানিক বলেছেন, 'জো বাইডেনের হাতে রক্ত লেগেছে। এই ভয়াবহ জাতীয় নিরাপত্তা এবং মানবিক বিপর্যয় শুধুমাত্র জো বাইডেনের দুর্বল ও অযোগ্য নেতৃত্বের ফল। তিনি কমান্ডার-ইন-চিফ হওয়ার অযোগ্য।' রিপাবলিকান সিনেটর মার্শা ব্ল্যাকবার্ন টুইটে বাইডেন এবং তার সমস্ত শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা অধিকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। 

88

বিরোধী পক্ষ এমন একটা বিষয় পেয়ে হইচই করবে না তা তো হয় না, কিন্তু, বাইডেনের পক্ষে ভয় ধরানো বিষয় হল জনমত। চলতি সপ্তাহে ইউএসএ টুডে এবং সফক ইউনিভার্সিটির জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অধিকাংশ আমেরিকানরা আফগান যুদ্ধের অবসানের পক্ষেই রয়েছেন। তবে তার জন্য বাইডেন কৃতিত্ব পাচ্ছেন না। সমীক্ষায় মাত্র ৪১ শতাংশ মানুষ তাঁকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে অনুমোদন দিয়েছেন, ৫৫ শতাংশ মানুষ কিন্তু, তাঁকে আর চাইছেন না। 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos