প্রধানমন্ত্রীর মতুয়া-তীর্থ ওড়াকান্দি ভ্রমণ, কতটা প্রভাব ফেলবে এপাড় বাংলার নির্বাচনে, দেখুন

শনিবার যখন এপাড় বাংলায় চলছে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার নির্বাচন, সেই সময়, ওইপাড়ে প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মতুয়া সম্প্রদায়ের সবথেকে পবিত্র স্থান ওড়াকান্দির মন্দিরে ভ্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিনই খড়গপুরের সভা থেকে এই বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের মতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট পেতেই এই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর এই মতুয়া মহাতীর্থে যাত্রা। তবে, বিজেপির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

amartya lahiri | Published : Mar 27, 2021 1:15 PM IST

17
প্রধানমন্ত্রীর মতুয়া-তীর্থ ওড়াকান্দি ভ্রমণ, কতটা প্রভাব ফেলবে এপাড় বাংলার নির্বাচনে, দেখুন

বিজেপির বনগাঁর সংসদ সদস্য তথা মতুয়া মহাসংঘের বড় মার অন্যতম নাতি শান্তনু ঠাকুর, প্রধানমন্ত্রীর ওড়াকান্দি সফরের সঙ্গী। তাঁর দাবি, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ যাওয়ার কথা ছিলই।  ওড়াকান্দিতে যাওয়াও মোদীর 'পূর্ব নির্ধারিত সফর'। এরসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের কোনও যোগ নেই। তবে, সফর পূর্বনির্ধারিত যদি হয়ও, বঙ্গের ভোটে কি এর কোনও প্রভাবই পড়বে না?

 

27

শান্তনুর ভাই তথা আসন্ন নির্বাচনে গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী সুব্রত ঠাকুর মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর ওড়াকান্দি সফর নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই 'ইতিবাচক প্রভাব' ফেলবে। তিনি তাঁর নিজের জয়ের বিষয়ে তো আত্মবিশ্বাসী বটেই। প্রধানমন্ত্রীর শনিবারের ওড়াকান্দি সফরের দৃশ্য সিএএ লাগু করার বিষয়ে বিজেপির সদিচ্ছা নিয়ে যদি কোনও সন্দেহ বা বিভ্রান্তিতেও থাকে তা দূর করে দেবে। মতুয়াদের বিপুল সমর্থনের কারণেই রাজ্যে ক্ষমতা আসবে বিজেপি, এমনটাই মনে করছেন তিনি।

37

২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরে গিয়ে মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রয়াত বড়মা বীনাপাণি দেবীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। নির্বাচনে তার ফল দেখা গিয়েছিল। বনগা-সহ রাজ্যের ১৮ টি লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। সুব্রত ঠাকুরের দাবি, রাজ্যের ৭৮টিরও বেশি বিধানসভা আসনে মতুয়ারা জনসংখ্যার ৪০% থেকে ৫০%। তাই এই কেন্দ্রগুলিতে ভোটে মতুয়ারাই ভোট নিয়ন্ত্রণ করে। এতটা না হলেও সত্যি সত্যিই দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ছড়িয়ে রয়েছেন।

47

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গেলেন এই সম্প্রদায়ের প্রাচীনতম মন্দিরে। ১৮১২ সালে বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতেই এই হিন্দু দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এখান থেকেই তাঁর বার্তা প্রচার করেছিলেন। সেই ওরাকান্দিকে কিন্তু ভুলে যায়নি মতুয়ারা।

 

57

মতুয়াদের তাদের পক্ষে আনতে গত বেশ কয়েক বছর ধরেই কাজ করে চলেছে বিজেপি। এবারের নির্বাচনী ইস্তাহারেও ক্ষমতায় এলে প্রথমেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ প্রয়োগ করার প্রতিশ্রতি দেওয়া হয়েছে। যা তাদের নাগরিকত্ব দেবে বলে মনে করছেন মতুয়ারা। স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরও কোনও সরকারই তাদের নাগরিকত্ব পেতে সহায়তা করেনি, এমনটাই অভিযোগ এই সম্প্রদায়ের। তাই ভারতীয় নাগরিক হতে সিএএ-ই তাদের পায়ের তলার মাটি হবে বলে মনে করছেন তারা।

67

সিএএ ছাড়াও বিজেপির ইস্তেবারে শরণার্থীদের কল্যাণে ১০০ কোটি টাকা, নাগরিকত্ব অর্জনের পর প্রতিটি শরণার্থী পরিবারকে পাঁচ বছরের জন্য প্রতি বছরে ১০,০০০ করে টাকা; আধার কার্ড, রেশন কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ডের মতো নথির জন্য একক উইন্ডো, যাদবপুর, ঠাকুরনগর এবং কোচবিহারের মতো শরণার্থী কলোনির জন্য বিশেষ তহবিল, মতুয়া দলপতিদের ৩০০০ টাকা করে মাসিক পেনশন-এর মতো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

77

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার সময়ে মাতুয়াদের সমর্থনও পেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই  সম্প্রদায়ের ভোট গিয়েছিল বিজেপির ঝুলিতে। এই অবস্থায় এই সম্প্রদায়ের মধ্য়ে প্রাসঙ্গিততা ধরে রাখতে তৃণমূস কংগ্রেস সিএএ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগকে তুলে ধরছে। সেইসঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী বা এনআরসি মতুয়া সম্প্রদায়ের ক্ষতি করতে বলে প্রচার চালাচ্ছে। এরমধ্যে মোদীর ওড়াকান্দি যাত্রা মতুয়াদের আবেগ তুষ্ট করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos