রাস্তা থেকে তুলে আগলে রেখেছেন শতাধিক জাতীয় পতাকা, ঠাঁই দিয়েছেন ট্রাঙ্কে

১৫ অগাস্ট ও ২৬ জানুয়ারি পালন করতে বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় পতাকা টাঙানো হয়। কাপড়ের বড় পতাকার পাশাপাশি জায়গা করে নেয় কাগজের তৈরি অসংখ্য পতাকা। কিন্তু অনুষ্ঠান সুন্দর করে হলেও তারপরই কাগজের পতাকাগুলির দিকে অনেকেরই আর নজর থাকে না। 

স্বাধীনতা দিবসের আগে রাস্তা থেকে গলি, ক্লাব, পাড়ার দোকান সব জায়গাই ছেয়ে যায় জাতীয় পতাকায়। ধুমধাম করে সম্মান জানানো হয় তেরঙ্গাকে। কিন্তু, অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার পরই কমে যায় কাগজের তৈরি ওই জাতীয় পতাকার কদর। রাস্তার যেখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় সেগুলিকে। আর সেই রাস্তায় এলোমেলো হয়ে পড়ে থাকা জাতীয় পতাকাগুলিকে কুড়িয়ে বুকে আগলে রেখে নিজের দেশকে সম্মান দিয়ে চলেছেন প্রিয়রঞ্জন সরকার। এখনও পর্যন্ত রাস্তা থেকে তুলে ৫০ হাজারের বেশি পতাকা সযত্নে তুলে রেখেছেন বালি নিশ্চিন্দার এই বাসিন্দা। 

১৫ অগাস্ট ও ২৬ জানুয়ারি পালন করতে বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় পতাকা টাঙানো হয়। কাপড়ের বড় পতাকার পাশাপাশি জায়গা করে নেয় কাগজের তৈরি অসংখ্য পতাকা। কিন্তু অনুষ্ঠান সুন্দর করে হলেও তারপরই কাগজের পতাকাগুলির দিকে অনেকেরই আর নজর থাকে না। ফলে সেগুলিকে রাস্তার যেখানে সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কেউ আবার সেগুলির উপর দিয়েই হেঁটে চলে যান। যেন অনুষ্ঠান চলা পর্যন্তই সেগুলিকে সম্মান জানানোর কথা বলা হয়েছে। 

Latest Videos

আর এই ঘটনাকে ভারত মায়ের চূড়ান্ত অসম্মান করা হচ্ছে বলে মনে করেন হাওড়ার বালি নিশ্চিন্দার যুবক প্রিয়রঞ্জন সরকারেপ (৩৩)। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিনি। আর সেই কারণেই ২০০৭ সাল থেকেই রাস্তায় পড়ে থাকা জাতীয় পতাকা সংগ্রহ করা শুরু করেন তিনি। স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন থেকে শুরু করেন কাজ। হাওড়া ও অন্য জেলায় প্রায় একমাস ধরে সংগ্রহ করেন পতাকা। 

আরও পড়ুন- প্রকল্পে জালিয়াতি রুখতে কড়া মুখ্যমন্ত্রী, ইউনিক নম্বর থাকবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্মে

আরও পড়ুন- বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ভবানী ভবন চত্বরে, গ্রেফতার অগ্নিমিত্রা পাল

এই কাজে প্রিয়রঞ্জনকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন প্রায় ৪০ জন যুবক-যুবতী। এলাকায় মনু বলে পরিচিত প্রিয়রঞ্জন। ছোটবেলায় জ্ঞান হওয়ার আগেই হারিয়েছেন বাবাকে। মা আভা সরকার অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছেন মনু ও তাঁর আরও তিন সন্তানকে। গলায় সমস্যা থাকায় স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেন না মনু। তাই অনেকেই তাঁকে হাবা বলে ডাকতেন। 

প্রিয়রঞ্জন জানান, সব কাজে তাঁকে প্রেরণা দেন মা। তাঁকে অনেকে অবহেলা করলেও তাঁর মা বলতেন মনু একদিন এমন কাজ করবে যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আভা দেবী রামকৃষ্ণ মিশন থেকে পড়াশোনা করেছেন। ইচ্ছে ছিল সমাজের জন্য কিছু করার। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর তা আর হয়ে ওঠেনি। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে ছোটো ছেলে প্রিয়রঞ্জনের মাধ্যমে। 

আরও পড়ুন- তৃণমূল কর্মীর ছাদের জলে ঘর ভাঙল দিনমজুরের, প্রতিবাদ করায় জুটল মার

আরও পড়ুন- কুকুরে টেনে নিয়ে গিয়েছে মাথা, পোশাক দেখেই মিলল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের খোঁজ

আগে কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়া পতাকা রান্না ঘরের মধ্যে রাখতেন প্রিয়রঞ্জন। এখন দশ ফুট বাই পনেরো ফুটের ট্র্যাঙ্ক বানিয়ে সেখানে রাখেন। ন্যাপথলিন দিয়ে যত্ন করে রাখেন জাতীয় পতাকা। প্রতিদিন ধূপ দিয়ে পুজো করেন সেখানে। এই কাজে তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। বর্তমানে সেচ দফতরের অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৫ হাজার টাকা মাইনের অধিকাংশ সমাজসেবামূলক কাজে খরচ করেন। 

মায়ের প্রেরণা নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খুলেছেন প্রিয়রঞ্জন। তার মাধ্যমে সমাজ সেবামূলক জন্য কাজ করে চলেছেন। বছরে তিনবার রক্তদান শিবির করেন থ্যালাসেমিয়া রোগী, সেনাবাহিনীর জওয়ান ও সাধারণ মানুষের জন্য। বিপর্যয় হলেই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে দেন দুর্গত মানুষদের কাছে। সারাজীবন এভাবে মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। 

Share this article
click me!

Latest Videos

Bangladesh-এ এবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের ভক্তদের উপর আক্রমণ, গর্জে উঠে যা বললেন Suvendu Adhikari
Chinmay Krishna Das-কে দেখা মাত্রই 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনিতে মুখরিত চট্টগ্রাম কোর্ট চত্বর, দেখুন ভিডিও
'Firhad Hakim ও Kalyan Banerjee কে ফের একবার তীব্র আক্রমণ Humayun Kabir-এর, দেখুন কী বললেন
Suvendu Adhikari Live: সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
কলকাতার রাজপথে ফের প্রতিবাদের মশাল মিছিল! প্রভু চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে চললও বিক্ষোভ মিছিল