বয়স বাড়লে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা দেখা দেয়। আর এর অন্যতম কারণ হল মেনোপজ।
বয়স ৫০-এর কোটায় পা রাখল কি না, শুরু হল একাধিক সমস্যা। বেশি সময় চেয়ারে বসে কাজ করলে কোমড়ে ব্যথা। একটু হাঁটলে হাঁটু ব্যথা। বেশি হাত নাড়ারও উপায় নেই, শুরু হয়ে যায় ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা। এদিক সমবয়সী একটি ছেলেকে দেখুন, তার শরীরে এমন ব্যথা সহজে অনুভূত হয় না। আসলে বয়স বাড়লে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা দেখা দেয়। আর এর অন্যতম কারণ হল মেনোপজ।
নানা কারণে অনেকের বয়সের আগেই পিরিয়ডস বন্ধ হয়ে যায়। এই মেনোপজের সব থেকে বেশি কুপ্রভাব পড়ে শরীরের সমস্ত হাড়ের ওপর। এক সার্ভেতে উঠে এসেছে, বয়স বাড়লে মহিলারা প্রধানত দুটি সমস্যায় আক্রান্ত হন। একটি হল অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস মানে হাঁটু ব্যথা। অন্যটি অস্টিয়োপোরোসিস। এই অস্টিয়োপোরোসিসে আক্রান্ত হলে হাড় ভঙ্গুর হতে শুরু করে। এক্ষেত্রে হাড়ে ক্যালসিয়াম ও মিনারেল হ্রাস পেলে এমন হয়।
কী করবেন
এখন প্রশ্ন হল দূর্বল হাড়ের সমস্যা রোধ করতে কী করবেন? সময়ের সঙ্গে বয়স বাড়বেই। বয়সের গতি আটকানো অসম্ভব। তেমনই একটা বয়সের পর মেনোপোজ হবে প্রাকৃতিক নিয়মে। তাই বলে, সব জেনে বয়সকালে দূর্বল হাড়ের সমস্যায় ভুগতে হবে, এমন নয়। কম বয়স থেকে কয়টি জিনিস মেনে চললে এই সমস্যা সহজে আসে না। আর যারা ইতিমধ্যে এই সমস্যায় ভুগছেন, তার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিবর্তন আনুন খাদ্যতালিকায়। জেনে নিন কী খাবেন।
প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখুন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। পনির, দুধ নিয়ম করে খেতে পারেন। ক্যালসিয়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। যেহেতু পুরানো হাড়ের কোষগুলি ক্রমাগত ভেঙে যায় এবং নতুন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়, তাই হাড়ের গঠন এবং শক্তি রক্ষার জন্য প্রতিদিন ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই রোজ ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান। সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে খাবার থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নির্দিষ্ট কয়টি ধরনের ব্যায়াম আছে যা করলে হাড় শক্ত হবে। তবে, ঘরে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে নয়, বরং ট্রেনারের কাছে গিয়ে এই প্রশিক্ষণ নিন। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে হাড়ের ঘনত্বের সামান্য উন্নতি ঘটেছে যারা নয় মাসের বেশি সময় ধরে ওজন বহন করার ব্যায়াম করেছে। তাই কোন ব্যায়াম আপনার জন্য উপযুক্ত তা জেনে নিয়ে সেই ব্যায়াম করুন।
সবার আগে পরিবর্তন আনুন জীবনযাত্রায়। একেবারে বন্ধ করে দিন ধূমপান ও মদ্যপান। রোগা হওয়ার জন্য না খেয়ে থাকেন অনেকে, এটা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এরই সঙ্গে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। যাদের পিরিয়ড নিয়ে ছোট থেকেই সমস্যা তারা ফেলে না রেখে ডাক্তার দেখান। তাছাড়া, মেনোপজ হলে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ নিন।