মানুষের রক্তেও প্লাস্টিক - টেরও পাচ্ছেন না কীভাবে গোপনে ঢুকে পড়ছে আপনার শরীরে, জানুন বিস্তারিত

গবেষণায় ৭৭ শতাংশ মানুষের রক্তে মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিকের (microplastics) কণা। কীভাবে গোপনে মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে প্লাস্টিক, কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
 

কখনও কেউ ভাবতে পেরেছিল, মানবদেহে প্রবাহিত রক্তেও উপস্থিত থাকতে পারে প্লাস্টিক (Plastic)! এক সাম্প্রতিক গবেষণায় এইরকম চাঞ্চল্যকর তথ্যই উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, ধীরে ধীরে প্লাস্টিক মানুষের রক্তে প্রবেশ করতে পারে। এই গবেষণায় অন্তত ৭৭ শতাংশ মানুষের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিকের (Microplastic) ক্ষুদ্র কণা পাওয়া গিয়েছে। মাইক্রোপ্লাস্টিক হল প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাদিক্ষুদ্র কণা যার ব্যাস ০.২ ইঞ্চি বা ৫ মিলিমিটারের কম। এর আগে, মানব মস্তিষ্ক, অন্ত্রে, মলে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেলেও, এই প্রথম মানুষের রক্তেও মিলল মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা, অত্যন্ত ভয়ঙ্কর আবিষ্কার বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

৭৭ শতাংশের রক্তে প্লাস্টিক

Latest Videos

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) একদল বিজ্ঞানী। তবে গবেষণাটি ছিল একেবারেই ছোট  আকারের। ২২ জন সুস্থ সবল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির রক্তের নমুনা নেওয়া হয়েছিল বিশ্লেষণের জন্য। ২২ জনের মধ্যে অন্তত ১৭ জনের রক্তে, অর্থাৎ, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৭৭ শতাংশের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা উপস্থিত ছিল। এই গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, পলিথিন টেরেফথালেট বা পিইটি (Polythene Terephthalate) হল মানুষের রক্তে পাওয়া প্লাস্টিকের সবচেয়ে প্রচলিত রূপ। এই ধরণের প্লাস্টিক সাধারণত জল, খাদ্য এবং পোশাক প্যাকেজিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।

সন্ধান চালানো হয়েছিল পাঁচটি ভিন্ন ধরণের প্লাস্টিকের 

গবেষণাটি এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় সন্ধান চালানো হয়েছিল পাঁচটি ভিন্ন ধরণের প্লাস্টিকের রূপের - পলিমিথাইল মেথাক্রাইলেট (Polymethyl Methacrylate), পলিপ্রোপিলিন (Polypropylene), পলিস্টাইরিন (Polypropylene), পলিথিন (Polythene), এবং পলিথিন টেরেফথালেট। ৫০ শতাংশের রক্তের নমুনায় পলিথিন টেরেফথালেট মিলেছে। ৩৬ শতাংশের রক্তে ছিল পলিস্টাইরিন, ২৩ শতাংশের পলিথিন এবং ৫ শতাংশের রক্তে ছিল পলিমিথাইল মেথাক্রাইলেট। তবে কোনও রক্তের নমুনাতেই পলিপ্রোপিলিন পাওয়া যায়নি।

কীভাবে প্লাস্টিক মানব শরীরে প্রবেশ করে?

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্লাস্টিক বাতাসের পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে বোঝা যাচ্ছে, মানুষ প্রতিদিন অগাধ প্লাস্টিক গিলে ফেলে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ডব্লুডব্লুএফ-এর (WWF) এক সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, কোনও মানুষ প্রতি ছয় মাসে যত মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা গিলে নেয়, তা এক জায়গায় করলে একটি জামবাটি ভর্তি হয়ে যাবে। শরীরে প্লাস্টিকের এই কণার উপস্থিতি মানুষের বড় ক্ষতি করতে পারে। 

মাইক্রোপ্লাস্টিকে ক্ষতি কী?

২০২১ সালে পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে মাইক্রোপ্লাস্টিক অন্ত্রের প্রদাহ, অন্ত্রে মাইক্রোবায়োম সংক্রমণ-সহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি মানুষের কোষের ঝিল্লিকেও বিকৃত কর দিতে পারে।

বাড়াতে হবে গবেষণা 

তবে, এই গবেষণাটি খুবই ছোট আকারে করা হয়েছে। আমস্টারডামের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটির (Bridge University in Amsterdam) প্রফেসর তথা এই গবেষণাপত্রের অন্যতম লেখক ডিক ভেথাক বলেছেন, রক্তের ভেতরে পলিমারিক কণার প্রথম উপস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। তবে, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গেলে এই গবেষণাকে আরও বড় আকারে করতে হবে। নমুনার আকার, মূল্যায়ন করা পলিমারের সংখ্যা - সবই বাড়াতে হবে।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

Minakshi Mukherjee : সাসপেন্ড হওয়া ডাক্তারদের পাশে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দেখুন কী বলছেন তিনি
‘Mamata Banerjee-র ক্ষমতা থাকলে নিজের বাড়ির লোকদের জেলা হাসপাতালে পাঠান’ বিস্ফোরক Sukanta M
Suvendu Adhikari: 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়ে কী হবে যদি লক্ষ্মীকে কেঁড়ে নেন' মমতাকে আক্রমণ শুভেন্দুর
বাংলার বাড়ির কিস্তির টাকা পেতে ১০০০ টাকা 'কাটমানি' নিচ্ছে পঞ্চায়েত! দেখুন | Burdwan News | TMC
Mamata Banerjee Live: স্যালাইন কাণ্ডে ডাক্তারদের কাঠগড়ায় তুললেন মমতা, দেখুন সরাসরি