মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে সাবধান। সুইটনার থেকে হতে পারে ক্যান্সার। তেমনই বলছে নতুন একটি গবেষণা।
মিষ্টি জাতীয় খাবার আপনার অজান্তেই ডেকে আনছে বড় বিপদ। তাই এখন থেকেই সাবধান হয়ে যান। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর সুইটনার। মিষ্টি জাতীয় জিনিস গুলি টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণ- তা প্রমাণ হয়েছে একাধিক গবেষণায়। কিন্তু এবার নতুন একটি গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সুইটনার থেকে বাড়তে পারে ক্যান্সারের মত মারণ রোগের ঝুঁকিও।
নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দিয়েছেন ১৯৭০ সালের সাইর্লামেটের কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃত্রিম সুইটনার বিক্রি হত। এটি ইঁদুরের মূত্রাশয়ের ক্যান্সার বাড়িয়ে দিয়েছিল বলেও পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল। কিন্তু মানুষের শরীর ইঁদুরের থেকে আলাদা। তাই মিষ্টি জাতীয় খাবারের থেকে যে ক্যান্সার হয় - তার কোনও প্রমাণ ছিল না বিজ্ঞানীদের কাছে। কিন্তু তারপরেও মিডিয়া একাধিক রিপোর্টে দাবি করেছিল যে মিষ্টি জাতীয় খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু PLOS মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় সম্পূর্ণ অন্য কথা বলা হয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে গবেষকরা প্রায় এক লক্ষ মানুষের ওপর পরীক্ষা করেছে- যারা প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি খায়ায়। দেখা গেছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এই পরীক্ষাটি করা হয়েছিল ১৮ বছরের বেশি বয়স্কদের ওপর। প্রত্যেককেই একটি ডায়েরি মেনটেন করতে বলা হয়েছিল। তাতে তাদের লিখতে হয়েছিল কখন কী জাতীয় মিষ্টি খাবার তারা খাচ্ছে। গবেষকরা খতিয়ে দেখেছেন কৃত্রিম মিষ্টি খেলে ক্ষতি কতটা বাড়তে পারে।
নতুন রিপোর্টে বলা হয়েছিল অ্যাসপার্টাম ও এসিসালফেম কে - ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে স্তন, ক্যান্সার হতে পারে। স্থূতলা সম্পর্কিত ক্যান্সার- ও কোলোরেক্টাল, পাকস্থলি ও প্রোস্টেট ক্যান্সারও হতে পারে। সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে কিছু খাবারে যদি মিষ্টি না থাকে তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যেতে পারে।
প্রায় ৬ লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিয়ে একটি সমাক্ষাও চালান হয়েছিল। যেখানে দেখা কৃত্রিম মিষ্টি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু গবেষণা রিপোর্ট নিয়ে এখনও পর্যন্ত সন্তুষ্ট নন বিজ্ঞানীরা। কারণ তারা যা অনুমান করেছেন তা অধিকাংশের ভিত্তি ছিল যাদের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছিল তাদের খাবারের ডায়েরি। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা গেছে দিনভর কে কী খায় তা মনে রাকে না। আবার সকলেই যে নিজের খাবার সঠিক ভাবে তুলে ধরবে এমন নাও হতে পারে। তবে এটি পরিষ্কার যে সুইটানর থেকে বাড়তে পারে ওজন।
তবে বিশেষজ্ঞদের কথায় সুক্রলোজ বা স্যাকারিন জাতীয় একাধিক খাবার ডিএনএস ক্ষতিগ্রস্ত করে- তা থেকেও অনেক সময় ক্যান্সার হতে পারে। মানুষের শরীরে অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলির ওপরেও মিষ্টি জাতীয় খাবার প্রভাব ফেলে। অনেক সময়ই ইমিউন সিস্টেম নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার মানে যা ক্যান্সারের কোষ সনাক্ত করতে ও অপসারণ করতে পারে না।