জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠি যায় সরকার বাহাদুরের ঘরে। চিঠিতে লেখা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ত্যাগ করছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর এই প্রতিবাদের ভাষা রীতিমত নাড়িয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকারকে।
১৩ এপ্রিল ১৯১৯, রক্তে ভেসে যায় পঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগ। পুলিশের গুলিতে নিমেশে ঝঁঝড়া হয় যায় শয় শয় মানুষ। রাওলাট আইনের বিরোধিতায় অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে জমা হয় কাতারে কাতারে মানুষ। সেই নিরস্ত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালায় ব্রিটিশ সরকারের পুলিশ।
৩০ মে ১৯১৯, জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠি যায় সরকার বাহাদুরের ঘরে। চিঠিতে লেখা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি ত্যাগ করছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর এই প্রতিবাদের ভাষা রীতিমত নাড়িয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকারকে।
আরও পড়ুন - 'চরম দুঃখ-কষ্টেও আশা-ভরসা ছাড়তে নেই', রবি ঠাকুরের স্মরণে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
চিঠিতে লেখা ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগের নৃশংস ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতীয়দের অবস্থান তাঁদের অসহায়ত্ব দেখিয়ে দিয়েছে। নিরিহ জনতার উপর এহেন নিষ্ঠুরতার নজির ইতিহাসে নেই।
আপাত নিরস্ত্র, নিরিহ জনতার উপর এই শক্তির আস্ফালনের কোনও রাজনৈতিক ব্যাখা নেই।
আমাদের পঞ্জাবের ভাইদের কান্না, হাহাকার, প্রত্যেকটা অমানের হিসেব স্তব্ধ নীরবতার মাধ্যমে দেশের প্রত্যেকটি কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই চরম শিক্ষা দিতে পারার জন্য অভিনন্দন জানান নিজেদের।
আরও পড়ুন - টাকায় এবার রবীন্দ্রনাথ-আব্দুল কালামের ছবি? কবে হাতে মিলবে নতুন নোট, জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
বেশ কিছু অ্যাংলো ইন্ডিয়ান দ্বারা এই নির্মমতা প্রশংসিতও হয়েছে। আমাদের ভাইদের ভোগান্তি, অপমানের তোয়াক্কা না করে বরং যারা সেটা নিয়ে উপহাস করে।
এবার সময় এসেছে রুখে দাঁড়ানোর, সময় এসেছে আমাদের লজ্জা, অপমানকে আমাদের শক্তিতে পরিনত করার। আমার তরফ থেকে আমি আমার সেই সব ভারতীয় ভাই বোনদের পাশে দাঁড়াব যারা দিনের পর দিন ধরে এই অমানসিক নিষ্ঠুরতার শিকার।
উপরোক্ত কারণগুলির জন্য আমি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত 'নাইট' উপাধি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন - প্রধানমন্ত্রীর মতো আপনিও আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রফাইল পিকচার বদলাতে চান? একনজরে দেখে নিন নিয়ম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিবাদের এই ভাষার তীব্রতা ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্বে। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গোটা দেশ জুড়ে জ্বলা প্রতিবাদের আগুনে ঘৃতাহুতি ছিল রবি ঠাকুরের এই পদক্ষেপ।