দেশে করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে সংক্রমণের শিকার হয়েছে ৩৯৮ জন। যার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,১৯৫। গুজরাতের স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে করোনাকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়েছেন ২,৫৪৫ জন। রাজ্যটিতে করোনার বলি এখনও পর্যন্ত হয়েছেন ৪৯৩। তবে রাজ্য প্রশাসনকে সবথেকে ভাবিয়ে তুলছে অ্যাসিম্পটম্যাটিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি। যাদের মধ্যে অন্যতম ভদোদরার ১৯ বছরের কিশোর জয় পাটনি।
প্রায় এক মাস হতে চলল আইসোলেশনে রয়েছেন ১৯ বছরের জয়। এর মধ্যে সাত-সাতবার করোনা পরীক্ষা হয়েছে এই কিশোরের। প্রতিবারই তাঁর পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে পজিটিভ। এদিকে তার শরীরে কাশি থেকে জ্বর করোনার কোনও লক্ষণই এক দিনের জন্যও দেখা যায়নি।
তৃতীয় দফার লকডাউনের মধ্যেই খুলছে স্কুল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে মিলল ছাড়পত্র
রেকর্ড গড়ে একদিনে আক্রান্ত ৪,২১৩, দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়াল ৬৭ হাজারের গণ্ডি
লকডাউন তোলার একমাস কাটতে না কাটতেই বিপত্তি, ফের করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ উহানে
ভদোদরার আই স্পিড রেলওয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানিয়েছে প্রশাসন। এখানে মূলত অ্যাসিম্পটম্যাটিক রোগীদের ও যাদের শরীরে করোনার সামান্য লক্ষ্মণ প্রকাশ পেয়েছে তাঁদেরই রাখা হচ্ছে। জয়ের কথায়, " কাশি, ক্লান্তি বা মাথাব্যথা, একদিনের জন্যও আমার শরীরের করোনার এইসব লক্ষণ দেখা যায়নি, রিপোর্ট পজিটিভ আসার প্রথম দিন থেকেই আমি একেবারে স্বাভাবিক রয়েছি।"
চলতি মাসের ১২ তারিখ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে একমাস হতে চলেছে জয় পাটনির। প্রতিবেশী এক শিশু অসুস্থ হয়ে মারা গেলে জয়ের পরিবার করোনা পরীক্ষা করায়। তাতেই জয় ও তাঁর মা-বাবার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। প্রথমে সকলে ভেবেছিলেন শিশুটি করোনা সংক্রমণে মারা গিয়েছে বলে ভেবেছিল সকলে। কিন্তু পরে দেখা যায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে তার।
ভদোদরার নগরওয়াদা এলাকেক করোনা হটস্পট ঘোষণা করেছে প্রশাসন। আর এই এলকারাই বাসিন্দা জয়। স্থানীয় এমএস কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র জয়ের এখন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে দিন কাটছে সিনেমা দেখে, ফোনে কথা বলে এবং ভিডিও গেম খেলে। কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের করিডরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি।
জয় ও তাঁর বাবা-মাকে প্রথমে গোত্রি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৩ দিনের মাথায় তাঁর মা ও বাবা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু ২০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও জয়ের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় তাঁকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী অ্যাসিম্পটম্যাটিক রোগীরা আক্রান্ত হওয়ার ১০ দিন পর বাড়ি ফরিতে পারেন। এই শর্ত মেনে জয়ও বাড়ি ফিরতে পারেন। তবে বাড়িতে ফিরে ৭দিন তাঁকে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। গত শনিবার তাঁকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের তরফে বাড়ি ফেরার অনুমতিও দেওয়া হয়। কিন্তু স্বইচ্ছাতেও আইসোলেশন ওয়ার্ডে থেকে গেলেন জয় পাটনি।
তাঁর কথায়, "আমার থেকে বাবা-মায়ের নতুন করে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁই রিপোর্টে নেগেটিভ না আসা পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব।" এখন করোনা পরীক্ষার অষ্টম রিপোর্টের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই কিশোর। যার নেগেটিভ রিপোর্ট তাঁকে বাড়ি ফেরার পথে এরও একধাপ এগিয়ে দেবে।