এই ঘটনার জন্য মোট ৪৯ জনকে দায়ী করা হয়েছিল। এরপর তাদের সবাইকে দোষীসাব্যস্ত করেছিল আদালত। আর আজ এই মামলায় দোষীসাব্যস্তদের সাজা ঘোষণা করা হল। দেশে এই প্রথম কোনও মামলায় একসঙ্গে এতজনকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে।
আহমেদাবাদ ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলায় (2008 Ahmedabad Serial Blasts Cases) দোষীসাব্যস্ত হওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জনকে মৃত্যুদণ্ডের (Sentenced to Death) নির্দেশ দিল আদালত। আর বাকি ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের (Life Imprisonment) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ১৩ বছর ধরে চলছিল এই মামলা। অবশেষে শুক্রবার এই মামলায় রায় ঘোষণা করল আমদাবাদের বিশেষ আদালত (Special Court)। ওই ধারাবাহিক বিস্ফোরণে মোট মৃত্যু হয়েছিল ৫৬ জনের। আর জখমদের সংখ্যা ছিল শতাধিক। তদন্তের পর এই ঘটনার জন্য মোট ৪৯ জনকে দায়ী করা হয়েছিল। এরপর তাদের সবাইকে দোষীসাব্যস্ত (Convicted) করেছিল আদালত। আর আজ এই মামলায় দোষীসাব্যস্তদের সাজা ঘোষণা করা হল। দেশে এই প্রথম কোনও মামলায় একসঙ্গে এতজনকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে।
আহমেদাবাদ ধারাবাহিক বিস্ফোরণ
২০০৮ সালের ২৬ জুলাই। কেঁপে উঠেছিল গুজরাট (Gujrat)। মাত্র ৭০ মিনিটের ব্যবধানেই গোটা শহরজুড়ে পরপর ২১টি বিস্ফোরণ হয়। আর বিস্ফোরণের (Blasts) জেরে মৃত্যু হয়েছিল ৫৬ জনের। বিস্ফোরণের কয়েকদিন পরে সুরাট থেকে ২৯টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আহমেদাবাদে মোট ২০টি এফআইআর ও সুরাটে ১৫টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। এরপর এই মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল গুজরাটের বিশেষ আদালতে। আর সেই সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তখন তিনি বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- পঞ্জাব ভোটের আগে কাছে আসার চেষ্টা, শিখ সম্প্রদায়ের বিশিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক মোদীর
বিস্ফোরণের দায় স্বীকার আইএম-এর
ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে। ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার প্রতিশোধ নিতেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জঙ্গি সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছিল। সব থেকে বড় বিষয় হল, বিস্ফোরণের আগে একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে ইমেলের মাধ্যমে হামলার কথা জানিয়েছিল ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিন। আর এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল বাংলার এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাবুভাইও। এই হামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত স্টুডেন্টস্ মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়া-র নেতা সাফদার নাগোরি।
দোষীদের গ্রেফতার করে শুরু শুনানি
২০০৯ সালে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। ইন্ডিয়ান মুজাহিদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজস থাকার সন্দেহে মোট ৭৮জনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল তদন্ত। পরে একজন রাজসাক্ষী হয়ে যাওয়ায় অভিযুক্তের সংখ্যা কমে ৭৭ করা হয়। অভিযুক্তদের ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা ছাড়াও ইউএপিএ আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য় আইন ও সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করার অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত করা হয়। একজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবশেষে এই মামলায় ১৩ বছর পর আজ সাজা ঘোষণা করা হল। এই ঘটনায় ৩৮ জনকে ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর বাকি ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন- দোরগোড়ায় পঞ্জাব নির্বাচন, শিখ ফর জাস্টিসের সমর্থন পেল আম আদমি প্রার্টি