সারা ভারতে বছরের নির্দিষ্ট কোনও সময়ে প্রকৃতির রূপ খানিকটা হলেও ভিন্ন হয়। কিন্তু চলতি বছরের মরশুমের দিকে তাকালে বোঝা যাবে যে, বছরের একইসময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আবহাওয়া কতখানি আলাদা। দক্ষিণের সঙ্গে কোনও মিলই নেই উত্তরপুর্বের। কোথাও বন্যা, তো কোথাও খরা। কোথাও আবার জলসংকট এতটাই চরম আকার ধারণ করেছে যে, প্রাণের অস্তিত্বটুকু টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। রইল দেশের এমন কয়েকটি জায়গার সন্ধান, যেখানে গত এক মাসেরর মধ্যে বছরের একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপের সাক্ষী থাকল মানুষ।
১) অসমের বন্যা- প্রবল বর্ষণের জেরে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অসমে। সূত্রের খবর, সেখানকার প্রায় ১৪৫টি গ্রাম জলের তলায়। প্রায় ৬৩ হাজার মানুষের প্রাণ বিপর্যস্ত। প্রবল বর্ষণের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
২)বেঙ্গালুরুতে জলসঙ্কট- দক্ষিণ ভারতে জলসঙ্কট প্রসঙ্গে চেন্নাইয়ের প্রসঙ্গ বার বার করে উঠে আসলেও চেন্নাই কিন্তু একমাত্র শহর নয় যা প্রবল জলসংকটের শিকার। এই প্রসঙ্গে নাম উঠে আসছে বেঙ্গালুরুরও। কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর মানুষও প্রবল জলসংকটের শিকার। আবহবিদরা এর অন্যতম কারণ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টিপাতের অভাব। কর্নাটকে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতে ঘাটতি রয়েছে ৩০ শতাংশ।
৩)মুম্বইয়ে ভারী বর্ষণ- এর ঠিক বিপরীত চেহারাটাই ধরা পড়েছিল দেশের বাণিজ্য নগরী মুম্বইতে। প্রতিবছরের মতো এবারও মুম্বইতে ভারী বর্ষণের জেরে রীতিমতো নাকাল হয়েছিল সেখানকার সাধারণ মানুষ। প্রবল বর্ষণের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। জমা জলকে ঘিরে ট্রাফিক জ্যামের কারণে সাধারণ মানুষের কর্মজীবনেও ব্যপক প্রভাব পড়েছিল।
৪) চেন্নাইয়ে জলসঙ্কট- ভারতের ষষ্ঠতব বড় শহরে প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ এবার জলসঙ্কটের শিকার হয়েছিলেন। খরার জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রাপ্যতা কমে যাওয়ার তীব্র জলসঙ্কটের মুখে পড়েন চেন্নাইয়ের সাধারণ মানুষ। তামিলনাড়ু সরকার অবশ্য চেন্নাইয়ে জল সরবরাহ করার একটা প্রকল্প নিয়েছে। এর জন্য চালু করা হয়েছে বিশেষ ট্রেনও। বলা হচ্ছে গত বছরে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি না হওয়া এবং এই বছরে বর্ষা দেরিতে আসার কারণে এই জলসঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
৫)রাজধানীতে ধুলো ঝড়- বিগত কয়েকদিনে চরম ধুলো ঝড় অভিজ্ঞতা করেছেন রাজধানীর মানুষরা। বর্ষা আসায় দেরি হওয়ার কারণে ধুলো ঝড়ের প্রকোপ বেড়েছে। এতে দিল্লির দূষণের মাত্রাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
৬)নাগপুরে খরা- একই রাজ্যের দুই শহরের চেহারাটা একেবারেই আলাদা একদিকে যখন প্রবল বৃষ্টিতে বানভাসি মুম্বই তেমনই অন্যদিকে নাগপুরে তৈরি হয়েছে খরা পরিস্থিতি। বর্ষা দেরিতে, তাই কৃষকদের কপালে দেখা দিয়েছে চিন্তাপ ভাঁজ। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষের জমিতে ফলছে না ফসল। নাগপুরের কৃষকরা এখন তাই বৃষ্টির অপেক্ষায়।