দেশে শুরু হয়েছে আনলক ১, বছরের শেষে করোনা সংক্রমণের শিকার হতে পারেন ৬৭ কোটি ভারতীয়

  •  সোমবার থেকে দেশে শুরু হল আনলক ১.০
  • কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি এলাকায় একাধিক ছাড়
  • সরকারি সিদ্ধান্তে করোনা সংক্রমণ বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
  • বছরে শেষে  জনসংখ্যার অর্দ্ধেক ভারতীয়র করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা

Asianet News Bangla | Published : Jun 1, 2020 12:04 PM IST / Updated: Jun 01 2020, 05:49 PM IST

পর পর ৪টে লকডাউনের পর সোমবার থেকে দেশে শুরু হল আনলক ১.০। এবার একাধিক জিনিসে মিলছে ছাড়। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হবে দেশে। কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি এলাকাগুলিতে অফিস-কাছারি, কল-কারখানা সবই খুলছে। কিন্তু ধীরে ধীরে লকডাউন তুলে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস (নিমহ্যান্স)।গবেষকদের আশঙ্কা চলতি বছরের শেষে ভারতে শীর্ষে পৌঁছবে করোনার সংক্রমণ। প্রায় ৬৭ কোটি ভারতীয় মারণ ভাইরাসের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গোটা দেশে ১ জুলাই সোমবার থেকে চালু হয়েছে লকডাউন-৫ ওরফে আনলক-১। ফলে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্র এবং নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ছাড়া খুলে যাচ্ছে প্রায় সবকিছুই। আর এই নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। লকডাউনের চতুর্থ পর্বে এদেশে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ ছিল সবথেকে উর্দ্ধমুখী। এই সময়েই দেশের মোট করোনা আক্রান্তের অর্দ্ধেক আক্রান্ত হয়েছেন। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত রবিবারের মত সোমবারও দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা এবার দ্রুত ২ লক্ষ ছোঁয়ার দিকে এগোচ্ছে। ইতিমধ্যে জার্মানি ও ফ্রান্সকে ছাপিয়ে করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় সপ্তমে উঠে এসেছে ভারত। এই অবস্থায় দেশের চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা জুলাইয়ের শুরুতেই ভারতে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে।

 

 

নিমহ্যান্সের বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, আক্রান্তদের ৯০  শতাংশ মানুষ জানতেই পারবেন না যে তারা করোনায় আক্রান্ত। এদের শরীরে কোনও লক্ষণ থাকবেন না। আক্রান্তদের ৫ শতাংশের অবস্থা গুরুতর হবে। তাদেরই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। নিমহ্যান্সের চিকিৎসকরা সবকিছু বিশ্লেষণ করে বলছেন, চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন উঠে গেলেই ভাপতে করোনা সংক্রমণ লাগামছাড়া গতিতে বাড়তে থাকবে। তা গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়তে পৌঁছে যাবে। 

নিমহ্যান্সের ধারণা, ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক করোনায় আক্রান্ত হবে। বছর শেষে ৬৭ কোটি ভারতীয় কোভিড ১৯  রোগের শিকার হবেন। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরের মতে, সেপ্টেম্বরের আগে ভারতে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে না।

সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়াল ১ লক্ষ ৯০ হাজার, আক্রান্ত দেশের তালিকায় সপ্তমে উঠে গেল ভারত

ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৫ লক্ষ, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ফুটবল লিগ চালু করতে মরিয়া বোলসোনারো

৪৭ হাজার ছাড়াল বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা, মাস্ক না পড়লেই দিতে হবে লাখ টাকা জরিমানা

অতিমারী করোনা ভারতে থাবা বসানোর পর গত ২৫ মার্ত থেকে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হয়। ২৪ মার্চ লকডাউনের আগে পর্যন্ত দেষে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫১২। ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের প্রথম দফার লকডাউনে সারাদেশে আক্রান্ত ছিলেন ১০,৮৭৭ জন। দ্বিতীয় দফার লকডাউনে ১৯ দিনে গোটা দেশে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩১,০৯৪ জন। এরপর ১৭ মে পর্যন্ত তৃতীয়  দফার লকডাউনে সারা দেশে করোনা আক্রান্ত হয় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ১৮ মে থেকে ৩১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত চতুর্থ দপার লকডাউন ঘোষণা করে। এই পর্যায়ে করোনা আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর এই দফাতেই সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরেছেন। যার ফলে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এই ঝুঁকির মঝ্যে তড়িঘড়ি কেন আনলক.১ চালু করা হল তা নিয়েই এখন উঠছে প্রশ্ন। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে পঞ্চম দফার লকডাউনে রাখা হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই শিথিলতা। এমনতি শপিংমল, বাজার, রেস্তোরাঁ, হোটেলকেও খোলার ব্যাপারে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে লকডাউন পরিস্থিতিতে ভারতে যে পরিমাণ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আনলক-১ পর্যায় থেকেই পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।


 

Share this article
click me!