সঞ্জয় সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিৎ দেশের মানুষের সামনে তাঁর সঠিক শিক্ষাগত যোগ্যতা বা সঠিক ডিগ্রি তুলে ধরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি যদি জাল হয় তাহলে তিনি লোকসভার সদস্যপদ হারাবেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি ইস্যুতে গুজরাট হাইকোর্টের রায়ের পরেও পিছু হঠতে নারাজ আম আদমি পার্টি। দলের পক্ষ থেকে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে আবারও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল আপ-এর রাজ্যসভার সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় সিং। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিৎ দেশের মানুষের সামনে তাঁর সঠিক শিক্ষাগত যোগ্যতা বা সঠিক ডিগ্রি তুলে ধরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি যদি জাল হয় তাহলে তিনি লোকসভার সদস্যপদ হারাবেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রেও অযোগ্য হয়ে যাবেন। অর্থাৎ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনে ভুল তথ্য জমা দেওয়ার জন্য এই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আপ নেতা সঞ্জয় সিং বলেন,
১. প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রির বিষয়ে সামনে আসার পর থেকেই মাঠে নেমেছে বিজেপির মন্ত্রী ও মখুপাত্ররা। তারা প্রধানমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করতে শুরু করেছে। তার থেকে ভাল হত প্রধানমন্ত্রী যদি নিজের ডিগ্রি প্রকাশ করতেন।
২. সঞ্জয় সিং বলেন, যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি জাল তাহলে লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে নির্বাচন কমিশনে ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে।
৩. সাংবাদিক সম্মেলনে সঞ্জয় সিং বলেন প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের জালিয়াতি করেছেন এই অভিযোগ তিনি নির্বাচনেও লড়াই করতে পারেবেন না।
৪. সঞ্জয় সিং বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ডিগ্রি বা সম্পত্তি সম্পর্কে ভুল তথ্য জমা দেওয়ার কারণে জনপ্রতিনিধির সদস্যপদ খারিজ হয়ে যেতে পারে।
৫. বিজেপি অভিযোগ করেছে দিল্লির আবগারি নীতি নিয়ে বিপাকে কেজরিওয়া, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ করার কারণে ডিগ্রি ইস্যুতে খাড়া করতে চাইছে।
৬. পাল্টা জবাব দিতে সঞ্জয় সিং মোদীর দেখানো একটি ডিগ্রির জেরক্স বা প্রিন্টআউট দেখান সাংবাদিকদের। তিনি বলেন, গুজরাট ইউনিভার্সিটির জাবি করা মোদীর ডিগ্রিতে 'ইউনিভারসিটি'বানান ভুল রয়েছে।
৭. তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীরড ডিগ্রি যেটি প্রকাশ্যে এসেছে একবার সেটি একটি প্রেস কনফারেন্সে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেখিয়েছেন। সেই ডিগ্রি থেকেই এই প্রশ্ন উঠছে।
৮. তিনি আরও বলেন মোদী গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করেছেন বলে ডিগ্রিতে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু মাস্টার অফ ফাইন আর্টস ছাপানোর জন্য যে ফন্টটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি চালু হয়েছিল ১৯৯২ সালে। তবে মোদী কিন্তু ডিগ্রি পেয়েছেন ১৯৮৩ সালে। প্রশ্ন ফন্ট চালু হওয়ার আগই কী করে ডিগ্রি পেলেন মোদী।
৯. সঞ্জয় সিং বলেন, মোদীর পুরনো ভিডিও চালালে স্পষ্ট দেখা যাবে, তিনি বলছেন, গ্রামে তিনি তাঁর পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেননি। অথচ তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় তিনি বলেছেন ১৯৭৯ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক আর ১৯৮৩ সালে তিনি এম.এ করেছেন গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। প্রশ্ন মোদী কেন আগে বলছেন তিনি পড়াশুনা করতে পারেননি।
১০. সঞ্জয় সিং বলেছেন মোদীর ডিগ্রি ইস্যুতে গুজরাট হাইকোর্টের রায় মর্মান্তিক।
তবে এদিন তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, একবিংশ শতকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কী শিক্ষিত হওয়া উচিৎ? নাকি উচিৎ নয়? তিনি আরও বলেন ভারতের একজন শিক্ষিত প্রধানমন্ত্রীর প্রয়োজন রয়েছে। যদিও আগেই আম আদমি পার্টি প্রশ্ন তুলেছিল মোদীর ডিগ্রি যদি বৈধ হয় তাহলে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের এটি দেখাতে সমস্যা কোথায়।