নিয়ম মেনে ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই প্রস্তুতি ছিল জোরকদমে। কারণ দেশের স্বাধীনতার এই বিশেষ দিনটকে নাশকতার জন্য বেছে নিতে পারে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী যে সন্ত্রাসবাদীদের নিশানায় রয়েছেন সেই সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি আগেই সতর্ক করে দিয়েছে। তাই করোনা আবহে এবার লালকেল্লায় অতিথি সংখ্যা কম থাকেল নিরাপত্তা ছিল একাধিক স্তরে। রাজধানীতে মোতায়েন করা হয়েছিল ৪,০০০ নিরাপত্তারক্ষী। আর এই নিরাপত্তা বলয়ের অন্যতম অংশ ছিল ডিআরডিও-র তৈরি অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম।
শুক্রবার থেকেই লালকেল্লা চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন গোটা এলাকা পাহারা দিতে দেখা গেছে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর তৈরি অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেমকে। লালকেল্লার কাছেই বসানো হয়েছিল এই সিস্টেম। দূর থেকে যে কোনও ড্রোন এগোলেই এটি তা ডিটেক্ট করতে পারে। জানা গিয়েছে, তিন কিলোমিটার পর্যন্ত দূর থেকে আসা মাইক্রো ড্রোন চিহ্নিত করতে পারে এই সিস্টেম। আর এতে রয়েছে এমন প্রযুক্তি,যা লেজারের সাহায্য আড়াই কিলোমিটার দূরের টার্গেটকেও মাটিতে ফেলে দিতে পারে অনায়াসে।
দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম পরীক্ষামূলকভাবে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে। ডিআরডিও জানিয়েছে, আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে জঙ্গি নাশকতা এড়াতেই এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। হাতেকলমে পরীক্ষায় এই সিস্টেম ইতিমধ্যে তার দক্ষতারও প্রমাণ দিয়েছে।
ভারতের ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে দেশের প্রতিরক্ষাকে মজবুত করার ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফের একবার বলেছেন আত্মনির্ভর ভারতের কথা। আর সেই আত্মনির্ভরশীল ভারতেরই পতাকা যেন বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ডিআরডিওর তৈরি এই ‘অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম’।
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম। আকাশপথে ২.৫ কিলোমিটার অবধি লক্ষ্য স্থির করতে পারে এই ড্রোন। শত্রুপক্ষের ড্রোন আকাশেই চিহ্নিত করে নিমেষে ধ্বংস করে দিতে পারে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিস্টেম যেমন বিপক্ষের ড্রোন চিহ্নিত করতে পারে তেমনি আকাশে তিন কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে মাইক্রো-ড্রোনের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতেও পারে। লেজার রশ্মি ছুড়ে যে কোনও আধুনিক প্রযুক্তির ড্রোনকে ঘায়েল করতে পারে ডিআরডিও-র তৈরি এই অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ রিপোর্ট দিয়েছে, গত কয়েকমাসে ড্রোনের ব্যবহার বাড়িয়েছে জঙ্গিরা। ভারতীয় সেনা ক্যাম্পের উপর নজরদারি চালানো, উপত্যকার জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য ড্রোনের সাহায্যই নিচ্ছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। সশস্ত্র ড্রোন ভারতীয় আকাশসীমায় পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাক জঙ্গিরা। তাই শত্রুপক্ষের ড্রোন-ধ্বংসকারী আরও উন্নত প্রযুক্তির অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম দরকার ছিল ভারতের। সেই কথা ভেবেই একেবারে দেশীয় প্রযুক্তিতে ডিআরডিও বানিয়েছে এই সিস্টেম।