সবুজ সাথী প্রকল্পে ছাত্র-ছাত্রীদের সাইকেল দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসম এক অভিনব উদ্যোগ নিল। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানালেন, স্কুটি দেওয়া হবে উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করা সব ছাত্রীকে।
দিসপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য প্রজ্ঞান ভারতী প্রকল্প নিয়েছে অসম সরকার। তার অধীনেই চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ২২ হাজার ছাত্রীকে দেওয়া হবে আধুনিক স্কুটি। প্রতিটি স্কুটির দাম ধরা হয়েছে ৫০-৫৫ হাজার টাকা।
প্রথম অসম সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সকলকে বৈদ্যুতিন স্কুটি দেওয়ার। কিন্তু মন্ত্রী জানান, খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা যায় বৈদ্যুতিন স্কুটির গতি ৩০-৪০ কিলোমিটারের বেশি নয়। তাতে প্রতিদিন চার্জ দিতে মোটা টাকার বিদ্যুতও লাগবে। তবে তিনি এও বলেন, কোনও ছাত্রীর পরিবার যদি মনে করে তারা পেট্রল কিনতে পারবে না, তাহলে বিদ্যুৎ চালিত স্কুটিই ভাল, তখন ওই ছাত্রী নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে বৈদ্যুতিন স্কুটির জন্য আগাম আবেদন জানাতে পারবে।
স্কুটি অসম সরকার দিলেও তার রেজিস্ট্রেশনের খরচ সংশ্লিষ্ট ছাত্রীকেই দিতে হচ্ছে। অন্তত তিন বছর সে স্কুটিটি বিক্রিও করতে পারবে না।
অসম বোর্ডের পড়ুয়াদের জন্য আরও একটি সুখবরও শুনিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, অসমের সব কলেজে ২৫ শতাংশ আসন রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা ছাত্রছাত্রীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সামনে হাজির নতুন বিপদ, বায়ুসেনার চাকরি ছাড়ছেন একের পর এক পাইলট
মন্ত্রী বলেন, সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষা যেহেতু লকডাউনের আগে শেষ হয়নি, তাই তারা গড়ে বেশি করে নম্বর দিয়ে সকলকে পাশ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অসমে লকডাউন শুরুর আগেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল। তাই খাতা দেখার পরে যে যেমন লিখেছে তেমনই নম্বর পেয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাপ্ত নম্বরে সিবিএসইর গড় নম্বর অপেক্ষা অনেক কম। শিক্ষামন্ত্রীর আশঙ্কা এই পরিস্থিতিতে মেধা তালিকার ভিত্তিতে কলেজগুলিতে ছাত্রভর্তি করানো হলে, অসমীয়া বোর্ডের অনেক ছাত্রছাত্রী কোথাও জায়গা পাবে না। তাই চলতি বছরের জন্যে রাজ্যের সব কলেজকে ২৫ শতাংশ আসন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। সেই ২৫ শতাংশ আসন শুধুমাত্র অসমের উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীর জন্যই সংরক্ষিত থাকবে।
এদিকে অসম সরকার পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ খোলার পরিকল্পনা করেছিল। পর্যায়ক্রমে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী, দশম, দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আসার নিয়মও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু করোনার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার নেওয়ায়, এই ব্যাপারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে রাজ্য বলে জানান হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ২১-৩০ অগস্টের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে ১ সেপ্টেম্বর কাজে যোগ দিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিলেই পড়াশোনা শুরু হবে। শিক্ষকরা ১ সেপ্টেম্বর থেকে না এলে প্রতিটি দিন অবৈতনিক ছুটি হিসেবে গণ্য হবে।