এখনও কিছু পর্যটক নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সহায়তায় উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চলছে। বলা হয়েছে, বেশিরভাগ পর্যটকই ভারত ও নেপালের।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে নাথুলা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ৩১০-এর জওহরলাল নেহরু মার্গে (জেএনএম) একটি বিশাল তুষারধসে সাত পর্যটক নিহত হয়েছেন। এরমদ্যে দুজন বাঙালি পর্যটক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের ভারতীয় সেনা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গ্যাংটকের এসটিএনএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়
তুষারধসের পর, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পস কর্মীরা, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও) এবং সিকিম পুলিশ যৌথ উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান শুরু করে। উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার সময়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা ২৭ পর্যটককে তুষার থেকে উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে ছয় পর্যটককে গভীর খাদ থেকে বের করা হয়েছে। বিকেল ৪টার মধ্যে সাতটি দেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, একজন মহিলা ও একজন শিশু রয়েছে।
একই সময়ে, এখনও কিছু পর্যটক নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সহায়তায় উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ চলছে। বলা হয়েছে, বেশিরভাগ পর্যটকই ভারত ও নেপালের। তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে পর্যটক ভর্তি পাঁচটি গাড়ি ভারত-চীন আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় জেএনএম সড়কের ১৫ মাইল কমপ্লেক্স হয়ে নাথু লা যাচ্ছিল।
শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
অন্যদিকে, সিকিমে তুষারধসের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিকিমে তুষারধসের ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করি। আশা করি আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। উদ্ধার তৎপরতা চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের (বিআরও) প্রজেক্ট স্বস্তিক দল পর্যটকদের বাঁচাতে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দলটি ঝড়ের পরপরই প্রায় ৩০ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছে বলে দাবি করেছে, যার মধ্যে ৬জনকে গভীর খাদে বরফের নিচ থেকে বের করা হয়েছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা বরফের নিচে চাপা পড়ে ছিলেন এক মহিলা। উদ্ধারকারী দল যখন তাকে বের করে আনে, তখনও তিনি শ্বাস নিচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে STNM হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন ঘন্টা কঠোর পরিশ্রমের পর, বিআরও টিম রাস্তার তুষার পরিষ্কার করেছে এবং ৮০টি গাড়িতে আটকে পড়া প্রায় ৩৫০ পর্যটককে উদ্ধার করেছে। সিকিম পুলিশ, সিকিমের ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, পর্যটন বিভাগ এবং গাড়ির চালকরাও উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করেছেন।
আইজি (চেকপোস্ট) সোনম তেনজিং ভুটিয়া এএনআইকে বলেছেন যে সিকিম মার্চ মাস থেকে অবিরাম তুষারপাতের সাক্ষী রয়েছে। এই কারণে, নাথুলা পাসের দিকে যাওয়া জওহরলাল নেহরু রোডের ১৩ তম মাইলের বাইরে পর্যটকদের চলাচল নিষিদ্ধ। এখান পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য পাস দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও, কিছু পর্যটক এই সতর্কতা উপেক্ষা করে ১৫ এবং ১৭ মাইল পর্যন্ত যান।