আশঙ্কা মতোই শুক্রবার ভোরে ওড়িশার মন্দির-শহর পুরীর কাছেই বঙ্গোপসাগর থেকে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে ঘুর্ণিঝড় ফণী। প্রতি ঘন্টায় প্রায় ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার তীব্র ঝড়ের প্রকোপে ওড়িষার উপকূলবর্তী সমস্ত এলাকা বিপর্যস্ত। তবে আগে থেকে সতর্কতা থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমানো গিয়েছে। তারপরেও এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তিন জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভয়াবহ ঝড়ে। তবে শুধু মৃত্যুই নয়, এই চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও ভুবনেশ্বরে জন্ম নিয়েছে এক ফুটফুটে শিশু। যার নাম রাখা হয়েছে ফণী।
প্রচন্ড শক্তিতে ঘূর্ণিঝড় ফণী যে ওড়িশার বুকে আছড়ে পড়তে চলেছে, তা আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। সেই মতো আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি থেকে সাধারণ মানুষ সবাই। শুক্রবার ওড়িশার স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সবই বন্ধ। ঝড়ের প্রকোপ থেকে বাঁচতে বেশিরভাগ ওড়িশাবাসীই বাড়ির ভিতরেই ছিলেন। রাস্তাঘাটে বিশেষ বেরোননি। কিন্তু কথায় বলে না, 'যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়', তেমন এদিনই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় এক ৩২ বছরের রেলকর্মীর।
মঞ্চেশ্বরের রেলের কোচ রিপেয়ারিং শপে তিনি হেল্পারের কাজ করেন। প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তাঁকে দ্রুত ভুবনেশ্বরের রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সকাল ১১টা বেজে ৩ মিনিটে নির্বিঘ্নে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক শিশুকন্যা। হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরাই তার নাম রাখেন ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় ফণীর নামে। তাঁরা জানিয়েছেন এই দুর্যোগের দিনে পথিবীতে আগমন হলেও ফণী ও তাঁর মা দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।
কথিত আছে এইরকম এক মহা দুর্যোগের রাতেই দেবকীর কোলে জন্ম নিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। অনেকেরই সেই কাহিনি মনে পড়ে গিয়েছে। হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মচারীদের অনেকেরই বসতবাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে ফণীর প্রকোপে। কিন্তু পুঁচকে ফণী সেই ধবংসের ধূসরতাকেও ম্লান করে দিয়েছে। তাঁরা বলছেন যে ভয়ঙ্কর ঝড়ের মাথায় পা দিয়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটল এই ছোট্ট প্রাণের, তাতে ফণী পরবর্তীকালে অনেক ঝড়-ঝাপটা অনায়াসে সামলে দেবে।