দেশে 'অঘোষিত জরুরি অবস্থা' চালু হয়েছে বলেও দাবি বিরোধীদের। কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করল বিজেপি। তাঁদের পালটা অভিযোগ, বিবিসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্থ সংস্থা।
বিবিসির অফিসে আয়কর হানা ঘিরে বিরোধীদের তোপের মুখে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মঙ্গলবার আচমকাই বিবিসির দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে অভিযান চালায় ইনকাম ট্যাক্সের প্রতিনিধি দল। এর পর থেকেই শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতর। ঘটনায় মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। মোদীর রাজত্বে সংবাদ মাধ্যমের স্বতন্ত্র মত প্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলেও দাবি করেন বিরোধীরা। এমনকী দেশে 'অঘোষিত জরুরি অবস্থা' চালু হয়েছে বলেও দাবি বিরোধীদের। কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করল বিজেপি। তাঁদের পালটা অভিযোগ, বিবিসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্থ সংস্থা।
কী বলছে বিজেপি?
বিরোধীদের কটাক্ষকে তোয়াক্কা না করে বিবিসিকেই দুষল পদ্মশিবির। বিবিসিকে 'ভ্রষ্ট বকওয়াস কর্পোরেশন' বলে কটাক্ষ করল মোদী, শাহ-এর দল। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসকেও তোপ দাগতে ছাড়ল না গেরুয়া দল। বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন,'ভারতে যে সমস্ত সংস্থা বা সংগঠন কাজ করছে তাঁদের ভারতের আইনশৃঙ্খলা মানতেই হবে। বিবিসি যদি সেই মতো কাজ করে তবে ভয় কীসের? বিবিসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্থ সংস্থা। ওদের কার্যপ্রণালীর সঙ্গে কংগ্রেসের মিল রয়েছে।'
অন্যদিকে তদন্তে সবরকমের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে বিবিসি। এই মর্মে বিবিসির পক্ষ থেকে একটি টুইটও করা হয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছে সংস্থা। উল্লেখ্য, বিবিসির অফিসে আয়কর হানাকে কেন্দ্র করে মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের। তিনি বলেছেন,' এই ঘটনা প্রমাণ করে বিনাশকালে মোদী সরকারের বুদ্ধিনাশ হয়েছে।' আদানি ইস্যু টেনে তিনি আরও বলেন, আমরা চেয়েছিলাম জেপিসি। কিন্তু কেন্দ্রের নজর দেখছি শুধু বিবিসির দিকে।'
তথ্যচিত্র নিয়ে বিতর্কের মাঝেই এবার রাজধানী ও বানিজ্যনগরীতে বিবিসির অফিসে হানা দিল আয়কর দফতরের প্রতিনিধি দল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্রকে কেন্দ্র করে আগেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল জাতীয় রাজনীতিতে। বিবিসির তথ্যচিত্রকে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হয়। এমনকী ভারতে বিবিসিকে নিষিদ্ধকরণের আবেদনও করা হয় শীর্ষ আদালতের কাছে। যদিও সেই আবেদন খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহেই মঙ্গলবার বিবিসির অফিসে আয়কর অভিযান ঘিরে নতুন করে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার বিবিসির দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে হানা দেয় ইনকাম ট্যাক্সের প্রতিনিধি দল। ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতিতে। সম্প্রতি ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভূমিকা নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন' ঘিরে সংবাদ শিরোনামে কেন্দ্র-বিবিসি সংঘাত। এই বিতর্কের মাঝেই বিবিসির দুই বড় শহরের অফিসে ইনকাম ট্যাক্সের প্রতিনিধি দলের অভিযান এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যদিও আয়কর দফতর এটিকে 'রেড' বলতে নারাজ। তাঁদের মতে এই অভিযান একটি সাধারণ সার্ভে মাত্র। ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুইয়া মৈত্র। এই প্রসঙ্গে টুইটও করেছেন তিনি। পাশাপাশি তথ্যচিত্র নিয়ে মুখ খুলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।
আরও পড়ুন -
তথ্যচিত্র বিতর্কের মাঝেই বিবিসির অফিসে আয়কর হানা, নতুন করে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে