পদ্ম শিবিরের ২টি শীর্ষ কমিটিতে নাম নেই বাংলার কোনও প্রতিনিধির। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এতজন বিজেপি সাংসদ থাকা সত্ত্বেও দলের নির্ণায়ক কমিটিগুলিতে বাংলার কোনও প্রতিনিধির স্থান না পাওয়াটা বঞ্চনার সামিল বলেই ধারণা করছে রাজনৈতিক মহল।
বর্তমানে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির লক্ষ্য ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে দলের সংসদীয় বোর্ডে কার্যত আমূল পরিবর্তন নিয়ে এল বিজেপি। সরিয়ে ফেলা হল অধিকাংশ পুরনো ও পরীক্ষিত মুখ। আনা হল একাধিক সফল এবং নতুন মুখ। এর পেছনে কোন হিসেবনিকেশ কাজ করছে, তা নিয়ে এখন ধন্ধে সমস্ত বিরোধী দল।
গেরুয়া শিবিরের এই নয়া সংসদীয় বোর্ডে জায়গা পেলেন না উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রীতি ভেঙে সংসদীয় বোর্ড থেকে ছেঁটে ফেলা হল দলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্ষীয়ান নেতা নীতীন গড়কড়িকে। এর পাশাপাশি বাদ পড়লেন মধ্যপ্রদেশের চারবারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানও।
বিজেপির এই সংসদীয় বোর্ড থেকে নীতীন গড়কড়ির নাম বাতিল হওয়াটা খুবই চমকপ্রদ। সংঘ ঘনিষ্ঠ এই নেতা বর্তমানে মোদীর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বরিষ্ঠ সদস্যদের মধ্যে একজন। এক সময়ে দলের সভাপতিও ছিলেন তিনি। সাধারণত বিজেপির সভাপতিরা যতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে থাকেন, ততদিন তাঁদের দলের সংসদীয় বোর্ডে রাখা হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাদ পড়লেন গড়কড়ি।
বিজেপির সংসদীয় বোর্ডে পুনরায় স্থান পেয়েছেন রাজনাথ সিং। সদ্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়ানো বিএস ইয়েদুরাপ্পাও আছেন এই বোর্ডে। তা ছাড়াও উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে অন্যতম সর্বানন্দ সোনওয়াল, বিএল সন্তোষ। প্রত্যাশা অনুযায়ী এই কমিটিতে রয়েছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংসদীয় বোর্ডের পাশাপাশি ১৫ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিটিও গড়েছে বিজেপি। সংসদীয় বোর্ডের সদস্যদের সাথে সাথে এই কমিটিতে আছেন ভুপেন্দ্র যাদব, বিএল সন্তোষ, ওম মাথুর। এই নির্বাচন কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন সদ্য মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়া দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। অবাক হওয়ার ঘটনা এটাই যে, ২টি কমিটির কোনওটিতেই নাম নেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। উত্তরপ্রদেশে বিরাট সাফল্যের পরেও যোগী কেন এই কমিটিগুলিতে জায়গা পেলেন না, তা খুবই আশ্চর্যের বিষয়।
বিজেপির সংসদীয় বোর্ডে একেবারে নতুন মুখ হিসেবে স্থান পেলেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা, সুধা যাদব, একবাল সিং লালপুরা, সর্বানন্দ সোনওয়াল, কে লক্ষ্মণ। উল্লেখ্য, গেরুয়া শিবিরের মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ২টি কমিটির একটিতেও কোনও মুসলিম মুখ নেই। এর আগে দলের নির্বাচন কমিটিতে ছিলেন শাহনওয়াজ হুসেন। বিহারের রাজনীতির পট পরিবর্তন হওয়ার পর তিনিও বাদ পড়েছেন। শুধু তা-ই নয়, পদ্ম শিবিরের ২টি শীর্ষ কমিটিতে নাম নেই বাংলার কোনও প্রতিনিধিরও। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এতজন বিজেপি সাংসদ থাকা সত্ত্বেও দলের নির্ণায়ক কমিটিগুলিতে বাংলার কোনও প্রতিনিধির স্থান না পাওয়াটা বঞ্চনার সামিল বলেই ধারণা করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন-
বিহারে ৩১ জন বিধায়ক আজ মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন যাদের মধ্যে আরজেডি থেকে ১৬ জন মন্ত্রী এবং জেডিইউ থেকে ১১ জন
যার ঘরই নেই, সে কোথায় পতাকা লাগাবে: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন বিমান বসুর
ঐক্যের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করার জন্য ধর্ম বর্ণ জাতের প্রশ্ন নিয়ে আসা হয়: স্বাধীনতা দিবসে সরব বিমান বসু