জঙ্গিদের মেয়েদের সুস্থভাবে বড় করছেন অধিক কদম, সন্ত্রাসবহুল কাশ্মীরে এক দুর্দান্ত চ্যালেঞ্জ!

Published : Aug 21, 2023, 07:05 AM ISTUpdated : Aug 21, 2023, 08:20 AM IST
Borderless world foundation

সংক্ষিপ্ত

ছেলেদের দায়িত্ব তবু কেউ নিতে চায়, কিন্তু, মেয়েদের বড় করা কঠিন। সেই কঠিন দায়িত্বকেই জীবনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন অধিক।

২০০৬ সালে, উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারায় অবস্থিত অনাথ আশ্রম “বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন”-এ ছোট ছোট মেয়েদের থাকার জায়গায় ঢুকে পড়েছিল একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী এবং তার দুই সহযোগী। তাদের দেখেই সেখানকার কর্মচারীরা ভয়ে কাঁপতে শুরু করেন, কারণ তাঁরা অনুপ্রবেশকারীদের নেতাকে চিনতে পেরেছিলেন। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে, ওই অনুপ্রবেশকারী আশ্রমের সুযোগ-সুবিধাগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করার পরেই সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। 

প্রায় দশ মাস পরেই “বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন” বুঝতে পারে তাদের কাছে ওই জঙ্গিদের আসার উদ্দেশ্য। একজন মহিলা এই আশ্রমের ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করে নিজের মেয়ে রাবিয়াকে (কাল্পনিক নাম) প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর জন্য অনুরোধ জানান। এই মহিলা হলেন সেই জঙ্গির স্ত্রী, যে জঙ্গি আশ্রমের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। মহিলা বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের কর্মীদের বলেছিলেন যে, তাঁর স্বামী তাঁকে বলেছিলেন যে, তাঁকে কখনও হত্যা করা হলে মেয়ের জন্য তাঁকে অবশ্যই বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং মেয়েকে তাঁদের তত্ত্বাবধানে দিতে হবে। আজ রাবিয়ার বয়স ১১ বছর এবং বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনে পড়াশোনা করে সে ভীষণ আনন্দিত।

জম্মু ও কাশ্মীরের সংঘাতে অনাথ মেয়েদের জন্য কুপওয়ারা হোমটি ছিল চারটির মধ্যে প্রথম, যেটি স্থাপন করেছিলেন অধিক কদম, মহারাষ্ট্রের এক কৃষকের ছেলে, যার কাশ্মীরের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে তিনি সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদে অনাথ মেয়েদের কথা তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল। 

এই আশ্রমের শাজিয়া খানের বাবাও সন্ত্রাসী ছিলেন। তিনি ২০০৭ সালে কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে একটি এনকাউন্টারে নিহত হন। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার একটি গ্রামে বসবাসকারী শাজিয়ার মা তাঁর একমাত্র সন্তানকে লালন-পালন করতে খুবই কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন। অধিক কদম ছোট্ট শাজিয়াকে নিজের কুপওয়ারার আশ্রমে এনে রেখেছিলেন। বর্ডারলেস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের অধীনে, আজ ১৯ বছর বয়সী শাজিয়া মহারাষ্ট্রে হোমিওপ্যাথি অধ্যয়ন করছেন। শাজিয়া এবং রাবিয়ার মতো শিশুদের জন্য একটি সুখী বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন অধিক কদম। 

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল এনজিও অনুসারে, কাশ্মীর এবং জম্মুতে প্রায় ২ লক্ষ ১৫ হাজার জন অনাথ শিশু রয়েছে এবং তাদের বেশিরভাগই এই অঞ্চলের সংঘাতে নিজেদের বাবা অথবা মা-কে হারিয়েছে। অধিক কদমের মতে, “পুরুষশাসিত সমাজে মেয়েদের ভালোভাবে বেড়ে ওঠা কঠিন। কিছু সংগঠন কাশ্মীরে শিশুদের জন্য কাজ করছে, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে কেউ মেয়েদের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নয়।' গত ১৫ বছরে, সন্ত্রাসীরা অধিককে ১৯ বার অপহরণ করেছে। কিন্তু তাঁর কাজ সম্পর্কে জানার পর সমস্ত জঙ্গিই অধিককে নিরাপদে ছেড়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন- 
পাকিস্তানে একের পর এক গির্জায় আগুন! খ্রিষ্টানদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার তীব্র নিন্দা করল আরব
Weather News: সপ্তাহের শুরু থেকেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস, ধীরে ধীরে নামতে পারে তাপমাত্রা
Deepika Padukone: আঙুল তুলে চিত্রগ্রাহককে ধমক! প্রচণ্ড রেগে গেলেন দীপিকা পাড়ুুকোন
নিমেষে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট! আয়কর সম্বন্ধীয় মেসেজ পেলেই ভুল করবেন না

PREV
click me!

Recommended Stories

এই শীতে কাবাব-তন্দুরে বড় নিষেধাজ্ঞা, খোলা জায়গায় পোড়ালেই গুণতে হবে ৫০০০ টাকা জরিমানা
'আপনার টাকা আপনার অধিকার' কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, জানুন কী এই কর্মসূচি