এত কাছে তবু কত দূরে- এই হল বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পার বর্তমান মনের অবস্থা। আস্থা ভোটে কুমারস্বামী সরকারের পতনের পরে এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল যে মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর শপথ গ্রহণ কেবল মাত্র কিছু সময়ের অপেক্ষা। তাল কাটল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে। হাইকমান্ড থেকে জানানো হয় এত তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। দিল্লি থেকে একজন পর্যবেক্ষককে কর্ণাটকে পাঠানো হবে। আগামী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন থেকে শুরু করে সরকার তৈরি, পুরটাই তাঁর তত্তাবধানে হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। এতেই ফাঁপরে পড়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। এমনিতেই তাঁর ভাবমূর্তি যে খুব পরিচ্ছন্ন তা তাঁর অতি বড় সমর্থকও দাবি করেন না, বিশেষ করে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাছাড়া রাজ্য বিজেপির সভাপতি হলেও দলের ভেতরেই তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।
এছাড়াও সামগ্রিক পরিস্থিতি যে ইয়েদুরাপ্পার জন্য খুব সুখকর তাও বলা যায়না। বিধানসভার স্পিকার এখনও পদত্যাগী বিধায়কদের নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে এসে উপস্থিত হননি। তার ফলে বিধানসভায় বিজেপি এই মুহূর্তে বৃহত্তম দল হলেও, সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে কয়েক কদম দূরে রয়েছে তারা। স্পিকার যদি বিদ্রোহী বিধায়কদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন, তাহলে যতদিন না শূন্য আসন গুলিতে আবার নির্বাচন হচ্ছে ততদিন সংখ্যালঘু সরকার চালাতে হবে বিজেপিকে, যা এই পরিস্থিতিতে রীতিমত চ্যালেঞ্জের কাজ। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কর্ণাটক বিধানসভায় বিজেপির পক্ষে ১০৫ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। অপর দিকে ৩ জন নির্দল বিধায়কের মধ্যে ২ জনই বিজেপি কে সমর্থন করার অঙ্গীকার করেছেন, যার ফলে বিজেপি সঙ্গে ১০৭ জনের সমর্থন রয়েছে। অপর দিকে একজন নির্দল বিধায়ক এবং আরও দুইজন বিদ্রোহী বিধায়ককে ধরে জোটের আসনসংখ্যা ১০৩। এবার স্পিকার যদি বাকি পদত্যাগী বিধায়কদের ইস্তফা পত্র গ্রহণ করে নেন, তখন বিধানসভার ম্যাজিক ফিগার নেমে আসবে ১০৬ এ। এরকম অবস্থায় বিজেপি কে যে কোনও মূল্যে দুই নির্দল বিধায়ককে তাদের দিকে ধরে রাখতেই হবে।
এরকম পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ। বুধবার আরএসএস দফতরে সাংবাদিক দের মুখোমুখি হয়ে স্বয়ং ইয়েদুরাপ্পা দাবি করেন তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া কোনও সিদ্ধান্তই নেবেন না। এবং কেন্দ্রীয় পার্টির তরফ থেকে কোনও নির্দেশ এখনও না আসায় এই মুহূর্তে তাঁরা রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি নিয়ে দরবার করবেন না।
ইতিমধ্যে বিজেপি সূত্রে খবর মুম্বইএর ডেরায় থাকা বিদ্রোহী বিধায়কেরা অশান্ত হয়ে পড়েছেন রাজ্যে ফেরার জন্য। তাঁদেরকে শান্ত করার জন্য বর্ষীয়ান দুই নেতা সি এন অশ্বথনারায়াণ এবং আর অশোক পাড়ি জমিয়েছেন বাণিজ্যনগরীর অভিমুখে।