১৯৬৫ সালের ১ ডিসেম্বর বাহিনী প্রতিষ্ঠার ছয় বছরের মধ্যেই বিএসএফ 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ'-এর মতো বিশাল দায়িত্ব পায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে বিএসএফ।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স 'বিএসএফ' শুক্রবার তাদের ৫৯তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করছে। এই বাহিনী অনেক ফ্রন্টে তার সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছে। ১৯৬৫ সালের ১ ডিসেম্বর বাহিনী প্রতিষ্ঠার মাত্র ছয় বছরের মধ্যে বিএসএফ 'বাংলাদেশের মুক্তির জন্য যুদ্ধের' বিশাল দায়িত্ব পায়। বিএসএফ ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই যুদ্ধে জড়িত ছিল। বিএসএফের ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার আইজি গোলক মজুমদারকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে 'ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ' পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালে, বিএসএফের ১০৩তম ব্যাটালিয়ন, যা কোচবিহারে ছিল, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দখল থেকে ১৮০০ বর্গমাইল এলাকা দখল করেছিল।
পাকিস্তানি সেনাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়
সঞ্জীব কৃষ্ণ সুদ, ADG BSF (অব.) তার 'BSF, The Eyes and Years of India' বইতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় 'বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের' সাহসিকতার বিষয়ে অনেক তথ্য তুলে ধরেছেন। সুদ লিখেছেন, ১৯৬৫ সালের ১ ডিসেম্বর বাহিনী প্রতিষ্ঠার ছয় বছরের মধ্যেই বিএসএফ 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ'-এর মতো বিশাল দায়িত্ব পায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে বিএসএফ।
'ব্ল্যাক শার্ট' কমান্ডোদের ভূমিকা
বিএসএফ বিশেষ কমান্ডোদের 'ব্ল্যাক শার্ট' প্রস্তুত করেছিল। এরা সেই একই কমান্ডো ছিল যারা পাকিস্তানি সেনাদের ওপর অ্যামবুশ করেছিল। পাকিস্তানের অধিকাংশ অবস্থান ধ্বংস করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে সীমান্ত ছাড়া বাকি সব বিওপির নিরাপত্তার দায়িত্ব পায় বিএসএফ। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বিএসএফ সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ২৩টি ইউনিটের নিয়ন্ত্রণ সেনাবাহিনীর হাতে ছিল। ৭১তম ব্যাটালিয়ন, যার ১০টি 'পোস্ট গ্রুপ আর্টিলারি' ছিল, সহকারী কমান্ড্যান্ট এলএস নেগির নেতৃত্বে ছিলেন।
১৮০০ বর্গমাইল এলাকা পাকিস্তানের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়
প্রাক্তন এডিজি এসকে সুদ তার বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে লিখেছেন, ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে কোচবিহারে থাকা বিএসএফের ১০৩তম ব্যাটালিয়ন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দখল থেকে ১৮০০ বর্গমাইল এলাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ৭১তম ব্যাটালিয়ন মহানন্দা নদীর পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর ব্যাপক হামলা চালায়। এই যুদ্ধে বিএসএফ কনস্টেবল পদম বাহাদুর লামা শহিদ হন। আহত হন আরও দুই সেনা। এই ব্যাটালিয়নটি বাংলাদেশের রাজশাহীতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই সেখানকার লোকেরা 'লং লিভ ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ' স্লোগান দেয়। ৭৭তম ব্যাটালিয়নের ওপর বোমা ফেলে পাকিস্তান। বিএসএফ জবাব দিতে শুরু করলে পাকিস্তান পতাকা বৈঠকে রাজি হয়। ২২ এপ্রিল ১৯৭১, উভয় পক্ষই গুলি বন্ধ করতে সম্মত হয়।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।