করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। অনলাইনে ক্লাস চললেও, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী পড়ুয়ারা সেই সুযোগ নিতে পারছে না অনেক ক্ষেত্রেই। ফলে একটা অলিখিত বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। সেই কারণে আগামী বছর পরীক্ষায় বসার সময়ে কারও যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তারজন্য নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ এডুকেশন (সিবিএসই)।
সিবিএসই বোর্ড মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠক্রম ৩০ শতাংশ হ্রাস করার প্রস্তাব রাখে। ট্যুইটে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ১,৫০০ এর বেশি পরামর্শ গ্রহণ করার পর সিলেবাসে কাটছাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী ট্যুইটে লেখেন , “শিক্ষা অর্জনের গুরুত্ব বিবেচনা করে মূল বিষয়গুলিকে ধরে রেখে সিলেবাস ৩০ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গোটা বিশ্বে বিরাজমান ভয়ানক অসাধারণ পরিস্থিতি দেখে সিবিএসইর পাঠ্যক্রমকে সংশোধন এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোর্সের বোঝা হ্রাস করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে”।
করোনা সংক্রমণ দুনিয়ার সবকিছুই ওলটপালট করে দিয়েছে। গত মার্চ মার্স থেকে এদেশে করোনার কারণে লকডাউন চলছে। ফলে তখন থেকেই বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পঠনপাঠনও কার্যত বন্ধ পড়ুয়াদের। অনলাইন ক্লাস চালু হলেও তাতে স্কুলের মতো সিলেবাস ধরে ধরে প্রত্যেক পড়ুয়াকে আলাদা করে দেখভাল করা যায় না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরাও। অনলাইন ক্লাস কার্যত বাড়িতে পড়াশোনার মতো বলেও অনেকের মত। কবে আবার স্কুল খুলবে এবং ক্লাস চালু হবে, সে বিষয়ে কোনও দিশা নেই। সেই কারণেই সিবিএসই-র সিলেবাস কমানোর দাবি উঠছিল নানা মহল থেকে।
এই পরিস্থিতিতে তাই শেষ পর্যন্ত সিলেবাস কমানোর পথেই হাঁটল কেন্দ্র। তবে এই সিদ্ধান্তের আগে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-সহ নানা অংশ থেকে মতামত নেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল।
এদিকে, সিবিএসই-র তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দেশে করোনা সংক্রমণের ফলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তাতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস কম করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে অংশ কম করা হয়েছে তা স্কুলের ইন্টারন্যাল অ্য়াসেসমেন্ট ও বোর্ডের পরীক্ষায় থাকবে না।
গত ৬ জুন সিবিএসই-র সিলেবাস ৩০ শতাংশ কম করার দাবি তুলেছিলেন দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। তাঁর যুক্তি ছিল, করোনা সংক্রমণের ফলে পড়ুয়াদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতিপূরণ করা অসম্ভব। তাই ,সিলেবাসের অন্তত ৩০ শতাংশ কম করা হোক। সেই পথেই এবার হাঁটল কেন্দ্রীয় বোর্ড।