ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে চাঁদের রাতের সময়টুকু ঘুম পাড়িয়ে রাখতে বা স্লিপমোডে পাঠাতে চাইছে।
চাঁদের মাটিতেই ঘুমিয়ে পড়বে ইসরোর পাঠান রোভার প্রজ্ঞান ও ল্যান্ডার বিক্রম। ইতিমধ্যেই দুটিকে ঘুম পাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার সূর্য পথে পাড়ি দিয়েছেন আদিত্য এল১। তারপরই চন্দ্রযান ৩ নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন ইসরোর প্রধান সোমনাথ। তিনি বলেছেন এখনও পর্যন্ত প্রজ্ঞান আর বিক্রম কাজ করছেন। কিন্তু খুব দ্রুত তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, ইসরোর বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই যন্ত্রপাতি নিয়ে এই কাজ শুরু করে দিয়েছে।
কিন্তু কেন চাঁদের মাটিতে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে চন্দ্রযান ৩কে- এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ইরসোর সূত্রের খবর, চাঁদে এক দিন সমান পৃথিবীকে ১৪ দিন। তেমনই চাঁদের এক রাতের অর্থ পৃথীর ১৪ রাতের সময়। শুরু হয়ে যাচ্ছে চন্দ্র রাত্রি। এই সময় চাঁদে সূর্যের দেখা মেলে না। ইরসোর তৈরি ল্যান্ডার ও রোভার দুটিও সৌরশক্তি চালিত। তাই সূর্য না ওঠায় দুটি শক্তি সময় করতে পারবে না। আর সেই কারণে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে চাঁদের রাতের সময়টুকু ঘুম পাড়িয়ে রাখতে বা স্লিপমোডে পাঠাতে চাইছে। দুটির শক্তি সঞ্চয় করাই মূল উদ্দেশ্য। চন্দ্র রাত্রের সময় সূর্য না ওঠার কারণে চাঁদের তাপমাত্রা নেমে যায় হিমাঙ্কের ২৯০ ডিগ্রি ফয়ারেনাইট নিচে। প্রবল ঠান্ডায় যান্ত্রিক ত্রুটি এড়াতে এই বিশেষ ঘুমের ব্যবস্থা করতে তৎপর ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
রোভার প্রজ্ঞান চাঁদের মাটিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই সেটি ল্যান্ডার বিক্রমকে ছেড়ে প্রায় ১০০ মিটার দূরে চলে গেছে। তবে এবার রোভারের দাপাদাপি শেষ। ইসরো জানিয়েছে আগামী দুই থেকে এক দিনের মধ্যে প্রজ্ঞান আর বিক্রমকে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে তারা চাঁদের রাত দেখতে না পারে। বা সহ্য করতে না হয়।
মাত্র ১০ দিন আগেই ইরসোর চন্দ্রযান ৩ চাঁদের মাটিতে সফল অবতরণ করেছে। রোভারটি চাঁদে জলের বরফের উপস্থিতি-সহ একাধিক তথ্য সরবরাহ করবে বলও আশা বিজ্ঞানীদের। ইসরো জানিয়েছে মিশন শেষ হওয়ার পরেই ল্যান্ডার আর রোভার চাঁদের মাটিতেই থেকে যাবে। সেখান থেকে ডেটা সংগ্রহ করবে। কারণ দুটি পৃথিবীকে ফিরিয়ে আনার জন্য ডিজাইন করা হয়নি। রোভার আর ল্যান্ডার দুটি তথ্যের একটি বড় উৎস হবে।
দিন কয়েক আগেই চাঁদের মাটির তাপমাত্রা পরিমাণ করেছিল চন্দ্রযান ৩। তারপরই রোভার প্রজ্ঞান জানিয়ে দিল চাঁদের মাটিতে রয়েছে অক্সিজেন আর সালফার। হাইড্রোজেন রয়েছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চাঁদের মাটির তাপমাত্রা নিয়ে ইসরো বলেছিল মাটির গভীরতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। ইসরো সূত্রের খবর, সৌর চালিত প্রজ্ঞান রোভার ও বিক্রম ল্যান্ডারের পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই মিশনটি আরও সাত দিন বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে।