হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের উদ্ধৃতি দিয়ে সিজেআই বলেছেন সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার প্রস্তাব বিবেচনার পরে সেই প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠায়। তারপরে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিচারক নিয়োগ করার জন্য কলেজিয়াম প্রক্রিয়া সবচেয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার এমনই মত। এদিন প্রধান বিচারপতি জানান, ভারতের বিচারপতিরাই বিচারক নিয়োগ করেন, এমন ধারণা ভুল। এটি অত্যন্ত দীর্ঘমেয়াদী ও পরামর্শভিত্তিক প্রক্রিয়া, যেখানে একাধিক স্টেকহোল্ডার জড়িত থাকেন।
এদিন তিনি বলেন বিচারক নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলি মানুষের বিশ্বাস এবং আস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন যে তিনি মনে করেন যে নির্বাচন প্রক্রিয়া এখনকার চেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক হতে পারে না। কলেজিয়াম প্রক্রিয়াই সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি। সিজেআই বলেন বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সাংবিধানিক পদ্ধতিই গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কলেজিয়ামের মত মৌলিক কাঠামো অনুসরণ করা উচিত।
২০১৫ সালের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্ট এনজেএসি আইনকে অসাংবিধানিক বলে বাতিল করেছিল যা উচ্চতর বিচার বিভাগে বিচারক নিয়োগে অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিত। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশন (NJAC) আইন, ২০১৪ সেই সময়ে এনডিএ সরকার দুই দশকেরও বেশি পুরনো কলেজিয়াম সিস্টেমকে বদলে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের উদ্ধৃতি দিয়ে সিজেআই বলেছেন সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার প্রস্তাব বিবেচনার পরে সেই প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠায়। তারপরে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সিজেআই বলেন “আদালতই মৌলিক অধিকার এবং আইনের শাসনকে বজায় রাখে। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করলেই জনগণ তার ওপর আস্থা রাখবে। বিচার বিভাগীয় নিয়োগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগুলি মানুষের বিশ্বাস এবং আস্থা বজায় রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়।"
নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিশদভাবে, রমনা বলেছিলেন যে পরামর্শদাতা বিচারক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সেই রাজ্যের বাসিন্দা বা আগে সেই হাইকোর্টে কাজ করেছেন। বিভিন্ন উত্স থেকে মতামত গ্রহণ করার পরেই, কলেজিয়াম তার মতামত গঠন করে। বেশিরভাগ সময়, এটি একটি সর্বসম্মত মত নিয়ে তৈরি হয়।
এন ভি রামানা বলেন “আমি মনে করি না একটি নির্বাচন প্রক্রিয়া এর চেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক হতে পারে। এখানে, আমি এই বিষয়টির উপর জোর দিতে চাই যে সরকারই শেষ পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি, আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানের নামে বিচারক নিয়োগ করে।"
তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছি, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা টিকিয়ে রাখাই হল পথপ্রদর্শক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারক বিচারপতি স্টিফেন ব্রেয়ারের সাথে আলোচনার সময় এই বিষয়ে বক্তব্য রাখছিলেন বিচারপতি রমনা। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল নয়াদিল্লির সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস, ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি ল সেন্টার।