দিল্লি সরকারের তরফে যে পরিমাণ অক্সিজেন দাবি করা হয়েছিল তা রাজ্যের হাসপাতালগুলির শয্যা সংখ্যার নিরিখে চার গুণ বেশি। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত অডিট টিম এই রিপোর্ট দিয়েছে বলে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমনকী এর ফলে ১২টি রাজ্য যেখানে অক্সিজেনের প্রচুর দরকার সেখানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে ।
আরও পড়ুন- "পড়ুয়াদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে, স্কুল খুলতে পদক্ষেপ করুক সরকার", বললেন এইমস প্রধান
অডিট টিমের তরফে বলা হয়েছে, দিল্লিতে অক্সিজেনের সরবরাহ নিয়ে অনেক অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। অডিট কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেই সময় দিল্লিতে দৈনিক প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল, তবে দিল্লি সরকার চাহিদা বাড়িয়ে ১২০০ মেট্রিক টন করেছিল। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, দিল্লির অতিরিক্ত চাহিদার কারণে অন্য ১২টি রাজ্যে অক্সিজেনের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। রিপোর্টে এ কথা বলা হলেও সে সময় দিল্লি সরকার অবশ্য বলেছিল, স্বাভাবিক অবস্থায় দিল্লিতে দৈনিক প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। দ্বিতীয় তরঙ্গে তা বাড়তে বাড়তে ৭০০ মেট্রিক টন ছাড়ায়। তারা এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করে। শীর্ষ আদালত ওই পরিমান অক্সিজেন দিতে নির্দেশও দেয়। এক সময়ে তারা আরও বেশি, অর্থাৎ দৈনিক প্রায় ১২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন দাবি করে।
এমনকী, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড অক্সিজেন সেফটি অরগানাইজেশনের তরফে শীর্ষ আদালক নিযুক্ত ওই অডিট টিমকে জানানো হয়েছে, দিল্লিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। যা অন্য রাজ্যে লিকুইড মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহকে প্রভাবিত করতে পারে। অডিট টিমের রিপোর্ট অনুসারে, কয়েকটি হাসপাতাল ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে ২৯ এপ্রিল থেকে ১০ মে এর মধ্যে দিল্লিতে অক্সিজেনের বরাদ্দ বাড়াতে হয়েছিল। প্রথমে দিল্লি সরকার দেখিয়েছিল, তাদের মোট চাহিদা ১১৪০ মেট্রিক টন। ভুল সংশোধন করার পরে অক্সিজেনের চাহিদা ২০৯ মেট্রিক টনে নেমে আসে।
আরও পড়ুন- মৃত্যুর খবর নেই, স্পুটনিক ভি সবথেকে কার্যকরী ভ্যাকসিন: সমীক্ষা
চলতি বছরের মে মাসে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দাপটে নাজেহাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। সে সময় অক্সিজেনের জোগান দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছিল কেন্দ্রকে। আর ওই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে অক্সিজেনের ঘাটতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। একাধিকবার অক্সিজেনের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- নিঃশব্দ পরিষেবা - কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গেও লড়াইয়ের সামনের সারিতে নৌবাহিনী
এরপর অক্সিজেনের জোগান নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আইনি টানাপড়েন চলে দিল্লি সরকারের। মামলার শুনানি চলাকালীন দিল্লি সরকারের পক্ষেই রায় যায় আদালতের। ৫ মে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, "প্রতিদিন দিল্লিকে ৭০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে। আমাদের কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য করবেন না।" আর সেখানে বিশেষজ্ঞদের মত নিয়ে কেন্দ্রের তরফে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল দিল্লিতে ৪১৫ মেট্রিক টন অক্সিজেনের প্রয়োজন রয়েছে। সেই রিপোর্ট আদালতে পেশ করেছিলেন সলিসিটর জেনেরাল তুষার মেহতা। যদিও কেন্দ্রের যুক্তিকে গুরুত্ব দেয়নি আদালত।