জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রসংঘ নিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছে ভারত। বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং একে অপরকে সাহায্য করা রাষ্ট্রসংঘের লক্ষ্য
জি২০ শীর্ষ সম্মেলন রীতিমত সাফল্য অর্জন করেছে ভারত। গোটা বিশ্ব ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এশিয়ানেট নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জি২০ বৈঠকের মূল বিষয়গুলি তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন বর্তমানে দেশের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ পরিবর্তন এসেছে। আগে দেশে কূটনীতি শুধুমাত্র ঠান্ডাঘরে বসে থাকা কয়েক জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। বর্তমানে দেশের মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়েছে।
জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রসংঘ নিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছে ভারত। বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং একে অপরকে সাহায্য করা রাষ্ট্রসংঘের লক্ষ্য। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থা তাতে রীতিমত প্রাসঙ্গিকতা হারাতে চলেছে ভারত। প্রাসঙ্গিকতা হারানোর আগেই রাষ্ট্রসংঘের প্রয়োজনীয় সংস্কার জরুরি - তারই আহ্বান জি২০এর মঞ্চ থেকে জানিয়েছেন ভারত। জয়শঙ্কর বলেছেন, কিছু দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা মোদীর এই আহ্বানকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছেন।
বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আগামী দিনে দেশের বিদেশনীতিকে আরও শক্তিশালী করার একটি পদক্ষেপ হল জি২০। ইতিমধ্যেই ভারতের কূটনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেন দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও আরও জোরদার করা হয়েছে। বর্তমানে একটি নির্দিষ্ট ঘরে বসে দেশের কূটনীতি সীমাবদ্ধ হয়। এটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। আগামী দিনে তাদের আরও কাছে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করবে বিদেশমন্ত্রক।
জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তাঁরা ৬০ শহরে ২০০টিরও বেশি সভা সংগঠিত করেছেন। বিশ্ব সমস্যা থেকে শুরু করে সাধারণ সমস্যাগুলির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে আলোচনায়। ভারতের প্রতিটি অঞ্চল যে সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ - তা বিশ্বের কাছে এই জি২০র সাফল্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে গিয়ে সরকার ও পররাষ্ট্রনীতিতে জনগণের অংশগ্রহণে নতুন অধ্যায় রচনা করেছে সেখানকার মানুষ। জয়শঙ্কর বলেছিলেন যে বিদেশী দূতাবাসের দায়িত্বে একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে আমি এখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের এই স্তরের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ দেখিনি।
জি২০ সম্মেলন বিশ্বের কাছে প্রমাণ দিয়েছে ভারতের যোগ্যতা আর নেতৃত্ব। সাহস আর উদ্দীপনার কথাও তুলে ধরেছে। শুধুমাত্র গ্লোবাল ওয়ার্মিং সহ কয়েকটি সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। আমরা শিক্ষা, সম্পদের ব্যবহার, স্বাস্থ্য, উন্নয়নসহ অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি। তাপমাত্রা পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা। এই ক্ষেত্রে, আমরা এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থনীতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কিছু দেশে পুষ্টিকর খাবারের অভাব, শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি, অবনতিশীল স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ও ব্যবস্থা রয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে বিশ্বব্যাপী সমাধানের জন্য ভারতের G20 সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন যে ভারত সম্প্রতি বিদেশ নীতির বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশ এক বছর ধরে পররাষ্ট্রনীতিতে যেভাবে নিজেকে প্রয়োগ করেছে তা নজিরবিহীন।