ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আন্দামান ও নিকোবরেরই প্রাক্তন মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র নারায়ণ।বৃহস্পতিবার তিনি জামিনের আবেদন জানালে তা খারিজ করে দেয় আদালত।
আমাদের দেশের সংবিধান যে শ্রেষ্ঠ তা ফের প্রমান হলো বৃহস্পতিবার। সরকারি কর্মচারী হোক বা দিনমজুর, ধনী হোক বা সাধারণ মানুষ অন্যায় করলে যে আমাদের বিচারব্যবস্থাকে ফাঁকি দেবার কোনো জায়গা নেই। আইন মেনে শাস্তি যে সকলকেই পেতে হয় তা ফের প্রমান করলো সম্প্রতি আন্দামান নিকোবরের এই ঘটনা। এবার গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আন্দামান ও নিকোবরের প্রাক্তন মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র নারায়নের জামিন খারিজ করলো আদালত।
নারী স্বাধীনতা নিয়ে যারা গলা ফাটায় ,কোথাও তাদের সমস্ত চিৎকার মুহূর্তে ধুলোয় মিশে যায় যখন ফের কোনো নারীকে আবার ধর্ষিত হতে হয় সমাজে। নির্ভয়া থেকে হাথরাস , প্রতিবাদে আমরা শুধুই গলা ফাটিয়ে ন্যায়বিচারই চেয়েছি । সমাজ বদলাতে পারিনি। মোমবাতি মিছিলে যে আহামরি কোনো বিপ্লব হয় না, তা ফের প্রমান করলো পোর্ট ব্লেয়ারের এই ঘটনা। গণধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ঘটনার সাক্ষী হলো এবার 'সবুজ দ্বীপ' ..এবং ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আন্দামান ও নিকোবরেরই প্রাক্তন মুখ্যসচিব জিতেন্দ্র নারায়ণ। গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত জিতেন্দ্রকে কিছুদিন আগে পোর্ট ব্লেয়ার পুলিশ তলব করেছিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদ চলে প্রায় বেশ কয়েক ঘন্টা। তদন্ত চলাকালীন তার কথায় মেলে একাধিক অসঙ্গতি। অবশেষে জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের প্রমান পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে তৎক্ষণাৎ। বৃহস্পতিবার তিনি জামিনের আবেদন জানালে আদালত থেকে তা খারিজ করে দেওয়া হয়।
এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে নারায়ণকে অক্টোবরেই বরখাস্ত করা হয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে। মন্ত্রক তখন জানিয়েছিল যে পুলিশের থেকে তারা রিপোর্ট পেয়েছে যে নারায়ণ এবং তার সঙ্গে জড়িত আরও একাধিক সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মী একজন মহিলাকে যৌন নিপীড়ন করেছে। এবং নারায়ণ যখন মুখ্যসচিব ছিলেন তখনই তিনি তার সরকারি মর্যাদার অপব্যবহার করে এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন। ওই রিপোর্টে নারাইন কর্তৃক তার সরকারী পদের গুরুতর অসদাচরণ এবং অপব্যবহারের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে স্পষ্ট। আন্দামান ও নিকোবর পুলিশের একটি বিশেষ তদন্ত দল পৃথকভাবে মামলাটি তদন্ত করছিল এতদিন। অবশেষে প্রমান মিলতেই পুলিশ হেফাজতে পরে প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে।
নারায়ণকে বরখাস্ত করার সময়, মন্ত্রক থেকে যে অফিসিয়াল বিবৃতি জারি করা হয়, তাতে বলা হয় : "সরকার তাদের প্রতিনিধিদের পদমর্যাদা নির্বিশেষে শাস্তি দেয়। সরকারি প্রতিনিধিত্ব জাত করেন তাদের মর্যাদা এমনিতেও অনেক উচ্চ এমন ধারণা করে নেওয়া হয়। তারপরও যদি কেউ এই বিষয়টির অবমাননা করেন বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন তাহলে সরকারও তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয়। বিশেষ করে মহিলাদের মর্যাদার সাথে জড়িত ঘটনাগুলির বিষয়ে সরকার আরও তৎপর। কোনোরকম কোনো অন্যায় হলে তার শাস্তিও সুনিশ্চিত করে সরকার সংবিধান মেনে।'
যারা বলেন ধর্ষণের মূল কারণ হলো শিক্ষা।তারা ভুল বলেন। কারণ এখন শিক্ষিত সমাজেই বেশিরভাগ হচ্ছে ধর্ষণকাণ্ড। আর সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন যারা। আমাদের দেশে ধরেই নেওয়া হয় তাদের মর্যাদা সবথেকে উচ্চ। কিন্তু কোনো সরকারি প্রতিনিধির এমন ঘৃণ্য ঘটনায় জড়িয়ে পড়া কোথাও ধিক্কার জানান সকলেই। কিন্তু সংবিধানের আওতায় কোথাও সবাই সঠিক বিচার পায়। আমাদের আইন দেশের নেতা মন্ত্রী হোক বা সাধারণ কাউকেই যে ছেড়ে কথা বলে না এই ঘটনায় তার প্রমান। এবং সেই কারণেই আজও মানুষ ভরসা করে আমাদের সংবিধানের উপর ,আইনি ব্যবস্থার উপর।
আরও পড়ুন
জেএনএউ ক্যাম্পাসে ছাত্রদের সংঘর্ষ, বাইরে থেকে গুন্ডা ডেকে এনে চলল মারামারি
মদের খুচরো ব্যবসায় পা রাখতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, তিন জেলায় খোলা হবে 'সরকারি মদের দোকান'
ফের বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী, G-20 শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গন্তব্য ইন্দোনেশিয়া