বন্ধ হবে গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা, দেশের কোটি কোটি দরিদ্র নাগরিকদের বাঁচাতে বিকল্প ভাবনা কেন্দ্র সরকারের

ভারতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে গম ও আটার দাম নিয়ন্ত্রণ করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল ভারত সরকার।

Web Desk - ANB | Published : Dec 28, 2022 5:48 AM IST / Updated: Dec 28 2022, 11:25 AM IST

সম্প্রতি ভারতে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এর ফলে আর প্রত্যেক মাসে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি করে খাদ্যশস্য পাবেন না দেশের ৮০ কোটি নাগরিক। কিন্তু, খোলা বাজারে গম ও আটার দাম ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই আবহে নতুন বছর শুরুর আগেই সাধারণ মানুষের কথা ভেবে গম ও আটার দাম নিয়ন্ত্রণ করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল ভারত সরকার।

ইতিমধ্যেই দিল্লির বাজারে এক কুইন্টাল গমের দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে গেছে। রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতি কুইন্টাল গম বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার টাকায়। এর প্রভাব পড়ছে খুচরো বাজার এবং গৃহস্থের পকেটে। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে এবার কেন্দ্রের তরফে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে খোলা বাজারে গম বিক্রি করে শস্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা করছে মোদী সরকার।

আগামী ৩১ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা। করোনার সময় চালু হওয়া এই প্রকল্পের দ্বারা প্রায় ২ বছর ধরে উপকৃত হয়েছেন দেশের ৮০ কোটি মানুষ। বিনামূল্যের এই রেশন বন্ধ হলে বিপাকে পড়তে পারেন কোটি কোটি মানুষ। এর পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাজারে গমের দামও ঊর্ধ্বমুখী। আম জনতাকে স্বস্তি দিতে এফসিআই-এর মাধ্যমে বাজারে কম দামে গম বিক্রি করে আটার দাম নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।

বর্তমানে ভারত থেকে গম রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা রয়েছে। সাধারণ গম উৎপাদনকারী কৃষকরা এখন রফতানিকারকদের কাছেই গম বিক্রি করছেন ভালো দাম পাওয়ার আশায়। এতে দেশের বাজারে গমের চাহিদা মিটছে না। প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে ভারতীয় গমের দাম ও চাহিদা বেড়েছে। এই আবহে সরকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই রেকর্ড পরিমাণ শস্য দেশের বাইরে রফতানি করা হয়। যার জেরে দেশের বাজারে গমের দাম বৃদ্ধি পায়।

কেন্দ্র সরকার যেখানে ২০২১ সালে ৪৩.৩ মিলিয়ন টন গম কিনেছিল কৃষকদের থেকে, সেখানে ২০২২ সালে সরকার মাত্র ১৮.৭ মিলিয়ন টন গম কিনেছে। মূলত তাপপ্রবাহ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবছর গমের উৎপাদনও হয়েছে খুব কম। এরও প্রভাব পড়েছে খোলা বাজারে। গতবছর অক্টোবরের তুলনায় এবছর অক্টোবরে কেন্দ্রের ভাঁড়ারে গমের পরিমাণ প্রায় অর্ধেক। তবে শীতকালে গমের ভালো উৎপাদনের আশা করছে সরকার।

এফসিআই-কে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কুইন্টাল পিছু মাত্র ২,২৫০ টাকা দরে গম বিক্রি করতে। দেড় থেকে দুই মিলিয়ন টন গম এফসিআই-এর মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করতে পারে কেন্দ্র। জানুয়ারি থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে মোদী সরকার। উল্লেখ্য, গতবছর এই সময় খুচরো বাজারে যেখানে এক কিলো গমের দাম ছিল ২৮.৫৩ টাকা, সেখানে এবছর সেই দাম ৩২.২৫ টাকা। ২০২১-এ এই সময় এক কেজি আটার দাম ছিল ৩১.৭৪ টাকা, এবছর তা বেড়ে হয়েছে ৩৭.২৫ টাকা। এই আবহে গমের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে সরকার।


আরও পড়ুন-
করোনার পরবর্তী ঢেউ আসার আগেই দেওয়া হোক চতুর্থ ভ্যাকসিন, বুস্টার ডোজের ওপর জোর স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের
মধ্যরাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরাখণ্ড, একের পর এক ভূকম্পনের প্রভাবে আতঙ্কিত উত্তর ভারত
৫৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে এবছর উষ্ণতম ডিসেম্বর পেল বাংলা, আবার আসছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা

Share this article
click me!