সোমবারের সংঘর্ষের কারণে হরিয়ানার পরিবেশ এখনও থমথমে। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। এই ঘটনায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা চলছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।
হরিয়ানার গুরুগ্রাম ও নুহ-তে হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষের কারণে এখনও পর্যন্ত এক জন ইমাম-সহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৩০ জন, যার মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছে নুহের গোরক্ষনাথ মন্দিরে জনতার হামলা চালায়। মন্দিরের পুরোহিতের ওপরও হামলা চালান হয়। গতকালের এই ঘটনায় মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গোটা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
হরিয়ানর বর্তমান পরিস্থিতি দেখে নিন মাত্র ১০টি পয়েন্টেঃ
১. হরিয়ানায় হিন্দু -মুসলিম সংঘর্ষের কারণে এখনও পর্যন্ত এক জন ইমাম, দুই হোমগার্ড ও একজন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০। আহতের মধ্যে রয়েছে কয়েক জন পুলিশ কর্মীও।
২. সোমবার রাতে গুরুগ্রামের সেক্টর -৫৬ এ একটি নির্মাণাধীন মসজিদের বাইরে ইমাম-সহ দুই ব্যক্তির ওপর হামলা চালান হয়। তাতেই ইমামের মৃত্যু হয়। তাদের লক্ষ্য করে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। একজন ইমামের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গেছে।
৩. প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, নুহের গোরক্ষনাথ মন্দিরে উত্তেজিত জনতার হামলা চালায়। মন্দিরে পুরোহিতের ওপর হামলা চালিয়ে উত্তেজিত জনতা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। পুরোহিতের আঘাত গুরুতর। পাল্টা পুরোহিতের অনুগামীরা পাথর ছোঁড়ে বলেও অভিযোগ ওঠে।
৪. হরিয়ানার নুহতেই প্রথম দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা প্রথম ঘটে। তারপরই তার প্রভাব পড়তে শুরু করে গুরুগ্রামের নুহতে। সেখানেই হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকেই জানিয়েছেন, হামলার সময় মসজিদে প্রায় পাঁচ জন ছিল। অন্যদের সহযোগিতায় তারা পালিয়ে যেতে পারেন।
৫. সোমবার হরিয়ানার নুহতে একটি ধর্মীয় মিছিল চলাকালীন হিংসার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সংখ্যালঘু শ্রেণির মানুষ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলকে থামানোর চেষ্টা করে। তারপরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পাথর ছোঁড়ার মত ঘটনা ঘটে। গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
৬. নুহর হিংসার ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গুরুগ্রামের সোহনাতে রোডের কাছে। সেখানেই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেখানেই গাড়িতে আগুন লাগানোর মত ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে।
৭. হরিয়ানা প্রশাসন জানিয়েছে, নুর, সোহনা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে হিংসার ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে পরিস্থিতি এদিন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানিয়েছ স্থানীয় প্রশাসন। ১৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। প্রয়োজনে আরও পুলিশ বাহিনী বাড়ান হবে। জেলাগুলিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গুরুগ্রামে সোহনায় শান্তি কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
৮. হরিয়ানায় হিংসার ঘটনায় গুরুগ্রাম, ফরিদাবাদ,নুহর স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুরুগ্রাম ও নুহতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত নুহতে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে।
৯. ফরিদাবাদে স্কুল কলেজের পাশাপাশি কোচিং সেন্টারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের বাইরে মানুষকে বাড়ি থেকে না বার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। গুরুগ্রামেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
১০. হরিয়ানার শিবমন্দির থেকে আড়াই হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নুহতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য হিন্দু ও মুসলিম উভয় কমিটির সদস্যদের প্রশাসনিক বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।