‘সাইবার অপরাধের রাজধানী’ জামতাড়ায় এবার ‘পুলিস কি পাঠশালা’, পিছিয়ে পড়াদের হাত ধরলেন আইএএস আইপিএস-রা

আঞ্চলিক ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞান এবং সফটওয়্যারের প্রশিক্ষণ। 

Web Desk - ANB | / Updated: Dec 27 2022, 12:48 AM IST

দেশের সাইবার অপরাধের ঘাঁটির নাম এখন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে স্মার্ট সিটির মানুষের মুখে মুখেও বহুল প্রচলিত। আতঙ্কের নাম ‘জামতাড়া’। ঝাড়খণ্ডের এই জেলাতে সাইবার মাধ্যমকে ব্যবহার করে ভারতের এতও বিশাল সংখ্যার মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে, এর সমতুল্য দ্বিতীয় কোনও ‘অপরাধীপূর্ণ’ গ্রাম সারা পৃথিবীতে প্রায় বিরল। ভারতের ওয়েব সিরিজ জগতেও মানুষের দৃষ্টি খুলে দিয়েছে ‘জামতাড়া’ নামক সিনেমাটি। এখানকার অপরাধের প্রবণতা ঘোচাতে বছরের পর বছর ধরে বদ্ধপরিকর রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এবার এই গ্রামে শুরু হয়েছে ‘পুলিস কি পাঠশালা’।

প্রশাসনিক নজরদারিতে ধরা পড়েছে যে, এই জামতাড়া জেলায় যত অপরাধীর নাম পুলিশের খাতায় ওঠে, তাদের অধিকাংশেরই বয়স প্রাপ্তবয়স্কের নিচে। অর্থাৎ, স্কুল-পালানো বা পড়াশোনা থেকে দূরে থাকা তরুণ প্রজন্মই ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে কুখ্যাত অপরাধী হয়ে। তাই, এই অন্ধকারে থাকা প্রজন্মকেই ‘টার্গেট’ করে এবার আনা হচ্ছে প্রকৃত শিক্ষার আলোয়। জামতাড়ার ১১৮টি পঞ্চায়েতের গ্রন্থাগারে শুরু হয়েছে ‘পুলিস কি পাঠশালা’। এই কর্মশালাগুলিতে আঞ্চলিক ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রস্তুত করে তোলা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে বিজ্ঞান এবং সফটওয়্যারের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ। ছোটদের বোঝানো হচ্ছে যে, কেন সাইবার অপরাধ বর্জনীয়। আর গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছেন, জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

জামতাড়া জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার মজরুল হোদা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘‘বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল সাইবার অপরাধ বেশি এমন দু’টি ব্লকের ৩৫টি গ্রন্থাগারে। করমাতান্দ ও নারায়ণপুর ব্লকে যুবকদের সাইবার অপরাধের দিক বোঝানোর পাশাপাশি ব্লকের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও তাঁদের যুক্ত হচ্ছে। তাতে ভালো ফল পাচ্ছি।’’

একই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হতে নিয়মিত চলছে পড়াশোনা। সেই কাজে হাতেকলমে সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছেন জেলার আইপিএস, আইএএস আধিকারিকরা। মজরুল আরও জানিয়েছেন, গত এক বছর ধরে এই কাজ চলছে। কিন্তু গত কয়েক মাসে তা গতি পেয়েছে। এর ফলে জামতাড়ায় সাইবার অপরাধের প্রবণতাও খানিকটা হলেও কমানো গিয়েছে বলেও দাবি তাঁর। পুলিশের পাঠশালায় পড়ার পর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হয়েছেন অনেকে। তাতে এই কর্মসূচির নাম আরও জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

রাজধানী রাঁচী থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের জামতাড়াকে ভারতের ‘সাইবার অপরাধের রাজধানী’ বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্যোগে এই জামতাড়াই হয়ে উঠতে পারে ভারতের অন্যতম কৃতী ছাত্রদের খনি। গ্রেফতারির বদলে এবার উন্নয়নমূলক প্রয়াসে হাত লাগাল ‘পুলিস কি পাঠশালা’।

 

Share this article
click me!