১৮ জুন যখন নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল তখন থেকে কানাডিয়ান পুলিশ তদন্তে সামান্য অগ্রগতি করেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা, তাদের পরিচয়ও জানতে পারেনি পুলিশ।
খুব কমই দেখা যায় যে, কোনও দেশ অন্যান্য দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় কেন্দ্র হয়ে ওঠে। যদিও আশির দশকে পাঞ্জাবের যুবকদের প্রশিক্ষণ ও অনুপ্রাণিত করে পাঞ্জাবে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গড়ে তোলার ভূমিকা ছিল পাকিস্তানের। এবার সেই পথেই হাঁটতে চইছে কানাডা। কানাডাকে কে বা কারা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করতে চালিত করছে তা বোঝার জন্য গোটা বিশ্ব বসে আছে। খালিস্তান টাইগার ফোর্স কর্মী হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে কী কারণে জনসমক্ষে যেতে বাধ্য করেছিল তা নিয়ে কানাডার মধ্যেই একটি বড় বিতর্ক রয়েছে।
এমন কোনো প্রমাণ নেই যার সাহায্যে ট্রুডো নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিরুদ্ধে "বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ" প্রমাণ করতে পারে। নিজ্জার যে জাল নথিতে কানাডায় গিয়েছিলেন এবং পরে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য স্থানীয় একজনকে বিয়ে করেছিলেন, তা এখন সর্বজনবিদিত। ১৮ জুন যখন নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল তখন থেকে কানাডিয়ান পুলিশ তদন্তে সামান্য অগ্রগতি করেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা, তাদের পরিচয়ও জানতে পারেনি পুলিশ। তারপরেও ভারতের সঙ্গে কোনও এক অজানা কারণে নিজ্জারের হত্যাকারীদের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে কানাডা।
তবে সেখানকার মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেছে, যে এই অভিযোগের পিছনে ভিত্তি কী। যদিও ভারত মামলার তদন্তে কানাডাকে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়ে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে, বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নিয়ে আসার দায়িত্ব ট্রুডো সরকারের উপর থাকবে, অন্যথায়, কানাডা আন্তর্জাতিক ফোরামে ব্যাপক হারে পিছিয়ে পড়তে চলেছে।
তবে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে জাস্টিন ট্রুডোকে এখন বেশ পিচ্ছিল রাস্তায় হাঁটতে হবে। কারণ তাঁর সামনে এখন চ্যালেঞ্জ কানাডায় পাঞ্জাবের আরেক সন্ত্রাসী সুখা ডুনেকেকে আন্তঃ-গ্যাং দ্বন্দ্বে হত্যার অভিযোগ। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং যেভাবে এই হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব নিয়েছিল, ট্রুডোও কি এই হত্যার জন্য ভারতীয় সংস্থাকে দায়ী করবেন? নিজ্জারের ক্ষেত্রেও, এখানকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুরুদ্বারের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি বিরোধের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যদিও এটি প্রমাণিত হয়নি।