ভারতীয় রেল আইসিএফ কোচগুলিকে এলএইচবি কোচ দিয়ে প্রতিস্থাপন করছে। পুরানো প্রযুক্তির আইসিএফ কোচের পরিবর্তে উন্নত প্রযুক্তির এলএইচবি কোচ ব্যবহার করা হবে।
আপনি যদি নিয়মিত ট্রেনে ভ্রমণ করেন, তাহলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছাড়া বেশিরভাগ ট্রেনেই নীল এবং লাল রঙের কোচ দেখতে পাবেন। সাধারণ মানুষের কাছে এটি শুধুমাত্র রঙ হলেও, এর পেছনে রয়েছে কোচের বৈশিষ্ট্য। ট্রেনের প্রতিটি রঙেরই রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। নীল কোচগুলি পুরানো, আর লাল কোচগুলি উন্নত প্রযুক্তির। এবার ভারতীয় রেল নীল রঙের কোচ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নীল থেকে লাল রঙে বদলাবে ট্রেন।
বর্তমানে ভারতীয় রেলের দুই ধরনের কোচ চলছে - ইন্টিগ্রেল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) এবং লিঙ্ক হাফম্যান বুশ (এলএইচবি)। পুরানো প্রযুক্তির আইসিএফ কোচগুলি নীল রঙের। এলএইচবি কোচগুলি নতুন প্রযুক্তির এবং লাল রঙের। এবার ভারতীয় রেল পুরানো প্রযুক্তির আইসিএফ কোচগুলিকে পর্যায়ক্রমে নতুন প্রযুক্তির এলএইচবি কোচ দিয়ে প্রতিস্থাপন করার পরিকল্পনা করেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই নীল রঙের কোচগুলি উধাও হয়ে যাবে।
মার্চের শেষের মধ্যে ভারতীয় রেল প্রায় ২০০০ এলএইচবি কোচ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই কোচগুলি স্লিপার এবং জেনারেল শ্রেণীর হবে। এই কোচগুলি পর্যায়ক্রমে ট্রেনে সংযুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল। কমপক্ষে ১৩০০ কোচ সংযুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা ডিসেম্বর ২০২৩ ধার্য করা হয়েছে। বাকি ৭০০ এলএইচবি কোচ আইসিএফ কোচের সাথে সংযুক্ত করার জন্য মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই নীল রঙের কোচের সংখ্যা কমে আসছে।
বর্তমানে ৭৪০টি ট্রেন আইসিএফ কোচ নিয়ে চলছে। ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষের মধ্যে এই সমস্ত কোচ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ভারতীয় রেল।
নীল রঙের আইসিএফ কোচ কেমন?
নীল রঙের আইসিএফ কোচ নির্মাণ ১৯৫২ সালে চেন্নাইতে শুরু হয়েছিল। এই কোচগুলি স্টিলের তৈরি হলেও ওজন বেশি। এতে এয়ার ব্রেক ব্যবহার করা হয়, যার রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল। এই কোচের ধারণক্ষমতা কম। স্লিপারে ৭২ এবং থার্ড এসিতে ৬৪ টি আসন রয়েছে। এই কোচগুলি এলএইচবি কোচের থেকে ১.৭ মিটার ছোট। দুর্ঘটনার সময় আইসিএফ কোচগুলি একে অপরের উপরে উঠে যায়। প্রতি ১৮ মাস অন্তর আইসিএফ কোচের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করতে হয়।
লাল রঙের এলএইচবি কোচ কেমন?
২০০০ সাল থেকে জার্মান প্রযুক্তির এলএইচবি কোচ নির্মাণ শুরু হয় পাঞ্জাবে। স্টেইনলেস স্টিল ব্যবহারের ফলে কোচগুলি হালকা এবং ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়। ঘন্টায় ২০০ কিমি বেগে চলতে সক্ষম, স্লিপারে ৮০, থার্ড এসিতে ৭২ টি আসন রয়েছে। আইসিএফের থেকে ১.৭ মিটার লম্বা এবং দুর্ঘটনার সময় একে অপরের উপরে উঠে যায় না। প্রতি ২৪ মাস অন্তর এলএইচবি কোচের পরীক্ষা করতে হয়।