ভারতকে টার্গেট করছে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠী। গোয়েন্দারা এই বিষয়ে আগেই কেন্দ্রকে সতর্ক করেছিল। এবার খোদ রাজধানী দিল্লির বুক থেকে গ্রেফতার করা হল এক আইএস জঙ্গিকে। সেই সঙ্গে বড়সড় নাশকতার ছক ভেস্তে দিল দিল্লি পুলিশ।
জানা যাচ্ছে ধৌলা কুঁয়া এলাকায় সেনাবাহিনীর স্কুলের সামনে থেকে ওই সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগে পুলিশের সঙ্গে ওই জঙ্গির গুলির লড়াইও হয়। ৫ রাউন্ড গুলি চালানোর খবরও পাওয়া গিয়েছে। ধৃত জঙ্গির নাম আবু ইউসুফ। তার কাছ খেরে উদ্ধার হয়েছে একটি প্রেশার কুকার। যার মধ্যে ১৫ কেজি আইইডি রাখা ছিল। উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্রও।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাত সোয়া ১১টা নাগাদ অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। জাতীয় রাজধানীর রিং রোডের কাছে করলবাগ ও ধৌলা কুঁয়ার মধ্যে এনকাউন্টার হয়। সেনাবাহিনীর স্কুলের সামনে পাঁচ রাউন্ড গুলি চলে। আইএস জঙ্গি তিন রাউন্ড গুলি চালায়। তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। সন্দেহভাজন জঙ্গির থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, ওই জঙ্গির নিশানায় ছিলেন প্রভাবশালী ব্যক্তি। লোন উল্ফ কায়দায় হামলার ছক দাবি পুলিশের। ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)-এর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইইডি নিষ্ক্রিয় করেন। জানা গিয়েছে আবু আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। গ্রেফতার হওয়া জঙ্গির কাছ থেকে গাজিয়াবাদের নম্বর প্লেট দেওয়া একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
ধৃত জঙ্গিকে লোধি কলোনিতে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোন নেতার ওপর হামলা পরিকল্পনা ছিল তাও জানার চেষ্টা চলছে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের ডিসিপি প্রমোদ সিং খুশওয়া জানান, 'দিল্লির ধৌলা কুঁয়া এলাকা থেকে আইসিসের একজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আমাদের স্পেশাল সেল। তার কাছ থেকে দুটি ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পাওয়া গিয়েছে।' পুলিশ সূত্রে খবর, সন্দেহভাজন ব্যক্তি দিল্লির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছিল। একার হাতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর পরিকল্পনা সে করছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
স্বাধীনতা দিবসের আগে দেশে জঙ্গি হামলার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল আইএস জঙ্গিদের কথা। গোয়েন্দারা পাকিস্তান থেকে তিন জঙ্গির ভারতে ঢুকে পড়ার তথ্য জানিয়েছিল। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে সতর্ক করা হয়েছিল যে, কোনও ভিআইপি-কে নিশানা ও বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটানোই এই জঙ্গিদের লক্ষ্য।
এদিকে দিন কয়েক আগেই আইসিসের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে এক চিকিত্সককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেঙ্গালুরুর এমএস রামাইয়া মেডিক্যাল কলেজে অপথামোলোজিস্ট হিসেবে কাজ করতেন রহমান নামে ২৮ বছরের ওই ব্যক্তি। গত মার্চ মাসে দিল্লি থেকে আইসিসের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই বেঙ্গালুরুর এই চিকিফসকের হদিশ পান তদন্তকারী আধিকারিকরা।