ইসরোর এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত বাংলার মহাকাশ বিজ্ঞানী সৌম্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সারা দেশের মানুষের মতো এই বাঙালি বিজ্ঞানীর পরিবারের লোকজনও অভিযানের দিকে নজর রেখেছিলেন।
সারা দেশের মানুষের প্রার্থনা সফল। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীদের গত কয়েক মাসের পরিশ্রম, দায়বদ্ধতা, দক্ষতা, গবেষণা বুধবার সন্ধেবেলা চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করল। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করল ল্যান্ডার বিক্রম। এরপর বেরিয়ে এল রোভার প্রজ্ঞান। শুরু হল চাঁদের মাটিতে গবেষণার কাজ। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যে রহস্য হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর মানুষের অগোচরে ছিল, তা এবার জানা যাবে। ফলে ইসরোর এই সাফল্য শুধু ভারতের নয়, সারা বিশ্বের মানুষের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চন্দ্রযানের গবেষণায় যে তথ্য উঠে আসবে, তা সারা বিশ্বের কাজে লাগবে।
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে এখন দক্ষিণ আফ্রিকায় আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকেই তিনি চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের দিকে চোখ রেখেছিলেন। ল্যান্ডার বিক্রম সফলভাবে চাঁদের মাটিতে পা রাখায় সারা দেশের মানুষের মতোই গর্বিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি ইসরোর বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি সারা দেশের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ইসরোর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'এক্স'-এ লিখেছেন, 'চন্দ্রযান-৩-কে কুর্ণিশ। এর বিস্ময়কর সাফল্যকে কুর্ণিশ। ইসরোকে কুর্ণিশ। চাঁদে সফলভাবে মহাকাশযান পাঠানোর অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের চমকপ্রদ কৃতিত্বকে কুর্ণিশ। আমাদের বিজ্ঞানীরা দেশের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নতির প্রমাণ দিয়েছেন। ভারত এখন মহাকাশের সুপার লিগে। এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে আন্তরিক অভিনন্দন। আসুন, আমরা সবাই এই রাজকীয় মুহূর্ত উদযাপন করি এবং জ্ঞান ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারতের আরও উন্নতি কামনা করি। ভারতকে কুর্ণিশ, জয় হিন্দ।'
ইসরোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সফল সফট ল্যান্ডিংয়ের পর চন্দ্রযান-৩ বার্তা পাঠিয়েছে, ভারত, আমি নিজের গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছি। আপনারাও গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছেন। চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করেছে। ভারতের সবাইকে অভিনন্দন।’
ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, বুধবার সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করে ল্যান্ডার বিক্রম। এর আগে কোনও দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এই সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ইসরোর বিজ্ঞানীরা এই অভিযানের সাফল্যের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তবে যতক্ষণ না সফলভাবে অবতরণ হচ্ছে ততক্ষণ স্নায়বিক উত্তেজনাও ছিল। অবতরণের ক্ষেত্রে শেষ ১৫ মিনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ল্যান্ডার বিক্রম লেজার রশ্মির সাহায্যে অবতরণের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে নেয়। সফট ল্যান্ডিং হতেই উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। একইসঙ্গে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ।
আরও পড়ুন-
Chandrayaan-3: চন্দ্রযানের চাঁদে অবতরণের জন্য ২৩ অগাস্ট দিনটিকেই কেন বেছে নেওয়া হল? যুক্তি দিল ইসরো
চাঁদ থেকে এসেছে নতুন ছবি! ছবি পাঠাল বিক্রম ল্যান্ডার, টুইট করে বিশ্বকে দেখাল ইসরো