বিরোধীরা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। এর জন্য নোটিস পেশ করা হয়েছে। যদিও বিরোধীদের পক্ষে ধনখড়কে তাঁর পদ থেকে সরানো সহজ নয়। এর জন্য সংবিধানে কঠোর পদ্ধতির বিধান রয়েছে। আসুন জেনে নিই, এনডিএ-র কি বিরোধীদের এই পদক্ষেপ মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত সাংসদ আছে? রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে পদচ্যুত করার কথা বলা সহজ, কিন্তু তা করা কঠিন। এর জন্য রাজ্যসভার পাশাপাশি লোকসভাতেও ভোটদান করতে হয়। এমন অবস্থায় সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপর নির্ভর করে।
ধনখড়কে সরানোর নোটিসে ৭০ জন রাজ্যসভা সাংসদ স্বাক্ষর করেছেন
কংগ্রেসের নেতৃত্বে ধনখড়কে সরানোর জন্য নোটিস পেশ করা হয়েছে। এর সমর্থনে ৭০ জন বিরোধী রাজ্যসভা সাংসদ স্বাক্ষর করেছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে টিএমসি, সিপিআই, সিপিআই-এম, জেএমএম, আপ এবং ডিএমকের সমর্থন রয়েছে।
সংবিধানে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে সরানোর কী বিধান রয়েছে?
উপরাষ্ট্রপতিকে সরানোর পদ্ধতি রাষ্ট্রপতির মহাভিযোগ (ধারা ৬১) থেকে আলাদা। এতে ভারতীয় সংবিধানের ধারা ৬৭ (বি), ৯২ এবং ১০০ অনুযায়ী বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হয়। চেয়ারম্যানকে সরানোর প্রস্তাব রাজ্যসভায় পেশ করতে হবে। এটি পেশ করার আগে কমপক্ষে ১৪ দিনের নোটিশ দিতে হবে। প্রস্তাব পাস হওয়ার জন্য রাজ্যসভার মোট সদস্য সংখ্যার পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার (মোট ভোটের অর্ধেকের বেশি) সমর্থন প্রয়োজন। শুধুমাত্র উপস্থিত এবং ভোটদানকারী সাংসদদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়।
যদি প্রস্তাব রাজ্যসভা থেকে পাস হয় তবে তা লোকসভায় আনা হয়। লোকসভায় উপস্থিত এবং ভোটদানকারী সদস্যদের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রস্তাব পাস করাতে হয়। এটি সম্ভব হওয়ার জন্য বিরোধীদের রাজ্যসভা এবং লোকসভা উভয় ক্ষেত্রেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা প্রয়োজন। যদি রাজ্যসভা এবং লোকসভা উভয় ক্ষেত্রেই অনাস্থা প্রস্তাব পাস হয় তবে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে তাঁর পদ ছেড়ে দিতে হয়।
রাজ্যসভা এবং লোকসভায় ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধীদের কী সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে?
কেন্দ্রীয় সংসদীয় কার্যমন্ত্রী কিরেন রিজিজু মঙ্গলবার বলেছেন যে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। পরিসংখ্যানও এটি নিশ্চিত করে। ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী বিজেপি এবং তার সহযোগী দলগুলির প্রায় ১২৫ আসন রয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধীরা প্রায় ১১২ জন সাংসদের সমর্থন পেতে পারে। এমন অবস্থায় বিরোধীদের পক্ষে রাজ্যসভা থেকে জগদীপ ধনখড়কে সরানোর প্রস্তাব পাস করানো অত্যন্ত কঠিন।