ইয়াহিয়ান এমনিতেই শ্রীকৃষ্ণের মতো সাজতে পছন্দ করে। ছেলের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই তার মায়ের এমন সিদ্ধান্ত। এমনকি আবহাওয়ার কথা মাথায় না রেখে তার মা রুবিয়া তার সাথে সাথে হেঁটেছে গোটা শোভাযাত্রা জুড়ে।
হাঁটতে পারে না সে। চলা ফেরায় সমস্যা হয়। তার জন্য দরকার একটা হুইল চেয়ারের। ছোট্ট মহম্মদ ইয়াহিয়ানের সামনে প্রতিকূলতার পাহাড় থাকলেও তার মনের অদম্য ইচ্ছে দিয়ে সে জয় করল গোটা দেশের হৃদয়। বুধবার কেরালায় শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী বা জন্মাষ্টমী উদযাপনের অংশ হিসাবে, শোভা যাত্রার জন্য বেশ কয়েকটি ছোট শিশুকে ছোট কৃষ্ণ এবং গোপিকার মতো সুন্দর সাজানো হয়েছিল। বালাগোকুলাম জেলা ইউনিট দ্বারা আয়োজিত শোভা যাত্রায় অংশগ্রহণকারী শত শত শিশুর মধ্যে একজন ছিল এক মুসলিম শিশু, মহম্মদ ইয়াহিয়ান, আট বছরের ইয়াহিয়ান ভগবান কৃষ্ণের শিশুরূপ বাল গোপালের পোশাক পরেছিলেন। এই শোভাযাত্রায় তার অংশগ্রহণ ছিল সবার চেয়ে আলাদা।
ইয়াহিয়ান হুইলচেয়ারে বসেই কথা বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে। সে জানায়, যে তার মা তাকে এই ভাবে সাজিয়ে দিতে পছন্দ করেন। তাই তার মায়ের সাহায্য নিয়েই এই শোভাযাত্রায় এসেছে সে। ইয়াহিয়ান এমনিতেই শ্রীকৃষ্ণের মতো সাজতে পছন্দ করে। ছেলের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই তার মায়ের এমন সিদ্ধান্ত। এমনকি আবহাওয়ার কথা মাথায় না রেখে তার মা রুবিয়া তার সাথে সাথে হেঁটেছে গোটা শোভাযাত্রা জুড়ে। হলুদ রেশম, সোনার মুকুট এবং ময়ূরের পালক পরে ইয়াহিয়ান শোভা যাত্রায় এসেছিল। ছোট্ট কৃষ্ণের মতই দেখাচ্ছিল তাকে।
"যদিও প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে, আমি কিছু মনে করিনি কারণ আমি নিজের জন্য কৃষ্ণের মতো পোশাক পরতে চেয়েছিলাম," ইয়াহিয়ান রাস্তার দুপাশে জড়ো হওয়া দর্শকদের দিকে হাত নেড়ে মিডিয়াকে বলেন, "আমার মা আমাকে এভাবে সাজিয়েছেন।" শারীরিক অক্ষমতার কারণে চলাফেরা করার জন্য ইয়াহিয়ানের একটি হুইলচেয়ার প্রয়োজন। সেই হুইলচেয়ারে বসেই আজ কেরলের রাস্তায় দেখা গেল ছোট্ট কৃষ্ণকে।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, ইয়াহিয়ানের মা রুবিয়া জানিয়েছেন, যে তিনি কেবল তার ছেলেকে শ্রীকৃষ্ণের সাজে সাজিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পূরণ করতে সহায়তা করছেন। কোনওভাবেই মিডিয়ার নজরে পড়ার জন্য বা প্রচার পাওয়ার জন্য এটা তারা করেননি বলেই জানান রুবিয়া। ছোট্ট ইয়াহিয়ানের খুশির জন্য এটি করেছেন তারা। তারা এই প্রথম জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন বলেও জানান রুবিয়া।
এছাড়াও, ইয়াহিয়ান বলেছিলেন যে তিনি যখন বড় হবেন, তখন তিনি একজন বিজ্ঞানী হিসাবে কাজ করতে চান। তার পেশীর জন্যও চিকিৎসা চলছে এবং শিশুটি দ্রুত হাঁটতে পারবে বলে আশ্বস্ত করেছেন চিকিৎসকরা। ইয়াহিয়ান বিলাথিকুলম বিইএম উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র।